তিন বছর আগের স্মৃতি ফিরে এল। নিয়ন্ত্রণরেখায় দু’দেশের গুলিযুদ্ধে নিহত ভারতীয় জওয়ানের মাথা কাটা দেহ উদ্ধার হল। এই ঘটনার বদলা চেয়ে সরব হয়েছেন ভারতীয় সেনা এবং ওই জওয়ানের পরিবারের সদস্যেরা। মাথা কাটার ঘটনায় পাক সেনার মদতে পুষ্ট জঙ্গিদের দিকেই আঙুল উঠেছে। ক্ষুব্ধ সেনার তরফে বলা হয়েছে, যথাসময়ে এই ঘটনার উপযুক্ত প্রতিশোধ নেওয়া হবে।
নিহত মনজিৎ সিংহ ১৭ শিখ লাইট ইনফ্র্যান্টি বাহিনীর জওয়ান। সেনা জানায়, শুক্রবার কাশ্মীরের কুপওয়ারা জেলার মাচিল সেক্টরে নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে জঙ্গিরা ভারতে ঢোকার চেষ্টা করলে বাধা দেন জওয়ানেরা। গুলিযুদ্ধে এক জঙ্গি ছাড়াও মারা যান মনজিৎ। জঙ্গিদের নিরাপদে ফেরানোর জন্য পাক সেনা ‘কভার ফায়ার’ শুরু করে। জঙ্গিরা পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ফিরে যাওয়ার সময় মনজিতের মাথা কেটে দেয়।
প্রাথমিক ভাবে সেনার সন্দেহ, এর পিছনে রয়েছে পাকিস্তানের বর্ডার অ্যাকশন টিম (বিএটি)। কয়েক জন জঙ্গি নিয়ে ছোট দল তৈরি করে তাদের পিছন থেকে মদত দেয় পাক সেনা। যে দলগুলির কাজই হল সীমান্তে একটা অশান্তির পরিবেশ তৈরি করা। ২০১৩ সালে এই বিএটি-র সদস্যরাই কাশ্মীরের মেন্ধর সেক্টরে ল্যান্সনায়েক হেমরাজের মাথা কেটে নিয়ে যায়। সেই ঘটনায় দু’দেশের মধ্যে প্রচণ্ড উত্তেজনা তৈরি হয়। বদলা নিয়েছিল ভারতীয় সেনা। এ বারও পরিস্থিতি একই রকম। ক্রমেই তীব্র হচ্ছে বদলা নেওয়ার দাবি। মনজিতের ভাই সন্দীপ বলেছেন, অন্তত ১০ পাক সেনাকে মেরে বদলা নিক ভারত। আর স্ত্রী প্রেরণার কথায়, ‘‘এই জঘন্য কাজের জন্য পাকিস্তানকে উচিত শিক্ষা দিক ভারত।’’ সূত্রের খবর, পাক সেনা-জঙ্গিদের বর্বরোচিত আচরণ নিয়ে পাক হাইকমিশনার আব্দুল বাসিতের কাছে অভিযোগ জানাবে দিল্লি। বিষয়টি আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে ধরা হবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জীতেন্দ্র সিংহ।
ঠিক এক মাস আগে নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালিয়েছিল ভারত। তার পর থেকেই দু’দেশের সীমান্তে উত্তেজনা বেড়েই চলেছে। শুক্রবার দিনভর দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি চলে। বিএসএফ দাবি করেছে, তাদের গুলিতে ১৫ পাক সেনার মৃত্যু হয়েছে। যদিও সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে পাক সেনা।
আগামী মাসেই অবসর নেওয়ার কথা পাক সেনাপ্রধান রাহিল শরিফের। সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের পর থেকেই তাঁর উপর চাপ বাড়়ছিল প্রত্যাঘাতের। তাই সেনা সূত্রে মনে করা হচ্ছে, এই নৃশংস ঘটনার পিছনে শরিফের উস্কানি থাকতে পারে।