National News

আমেরিকায় কাজ হারিয়ে ফেরা ব্যাঙ্ক কর্মীর স্ত্রী আত্মঘাতী হায়দরাবাদে

মাসখানেক আগেও আমেরিকায় সাজানো গোছানো সংসার ছিল রেশমি শর্মার। গত আট বছর ধরে ব্যাঙ্ক অব আমেরিকার কর্মী ছিলেন স্বামী সঞ্জয়। স্কুলপড়ুয়া দুই ছেলেকে নিয়ে বেশ ভালই কাটছিল। কিন্তু, হঠাৎই ছন্দপতন!

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৭ ১৪:৫০
Share:

প্রতীকী ছবি।

মাসখানেক আগেও আমেরিকায় সাজানো গোছানো সংসার ছিল রেশমি শর্মার। গত আট বছর ধরে ব্যাঙ্ক অব আমেরিকার কর্মী ছিলেন স্বামী সঞ্জয়। স্কুলপড়ুয়া দুই ছেলেকে নিয়ে বেশ ভালই কাটছিল। কিন্তু, হঠাৎই ছন্দপতন! কারণ, নতুন ভিসা আইনে আমেরিকায় থাকার সময়সীমা আর বাড়ানো যায়নি। ফলে সব ছেড়েছুড়ে বাধ্য হয়েই তাঁদের দেশে ফিরে আসতে হয়। শর্মা দম্পতি এসে হায়দরাবাদের অলকাপুর কলোনিতে বাস করতে শুরু করেন। গত বৃহস্পতিবার পুপ্পালাগুড়ার অলকাপুর এলাকায় তাঁদের বাড়ি থেকে রেশমির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরিবারের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানাচ্ছে, দেশে ফিরে পর থেকেই হতাশায় ভুগছিলেন রেশমি। সে কারণেই রেশমি কি আত্মহত্যা করেছেন? সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ, পরিবার।

Advertisement

রেশমির পরিবার সূত্রে খবর, ঘটনার দিন সঞ্জয় দুই ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে ল্যাপটপ সারাই করাতে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। বাড়িতে ফিরে এসে রেশমির ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান তিনি। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশে এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে।

আরও পড়ুন

Advertisement

ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার প্রশ্নে ভারতকে ছোবল রাষ্ট্রপুঞ্জের

পরিবার ও পুলিশ সূত্রে খবর, আমেরিকায় নয়া এইচ-১বি ভিসা আইনের ফলে সঞ্জয়ের ও দেশে থাকা আর সম্ভব হয়নি। ভারত-সহ বিভিন্ন দেশ থেকে সস্তায় কর্মী নিয়োগের প্রবণতা কমিয়ে, মার্কিন নাগরিকদের আরও বেশি বেশি কাজের সুযোগ দিতে ভিসা আইনে নানান বদল এনেছে ট্রাম্প প্রশাসন।

আমেরিকায় গিয়ে কাজ করতে হলে সঙ্গে এইচ-১বি ভিসা থাকতে হবে। তবে কেবলমাত্র অস্থায়ী কর্মীদেরই এই ভিসা দেওয়া হয়। কাজ মেলার পর মার্কিন অভিবাসন দফতরে এই ভিসার জন্য আবেদন করতে হয়। এই ভিসা আইনে সংস্কারের পর এইচ-১বি ভিসাধারীদের বেতন প্রায় দ্বিগুণ বাড়লেও তা ভারতীয় কর্মীদের একাংশের কাছে সুখবর নয়। কারণ, মার্কিন নিয়োগকর্তারা এত দিন ভারত-সহ অন্যান্য দেশ থেকে সস্তায় কর্মী নিয়োগ করত। কিন্তু, নতুন ভিসা আইনে কর্মীদের বেতন বাড়ার ফলে বিদেশি কর্মীদের জন্য ওই অতিরিক্ত ব্যয়ভার বহন করতে রাজি নয় মার্কিন সংস্থাগুলি। ফলে বিপাকে পড়েছেন আমেরিকায় কর্মরত অধিকাংশ ভারতীয় কর্মী।

কাজ হারিয়ে খুব কম দামে সেখানকার ঘরবাড়ি বিক্রি করে দেশে ফিরে আসেন সঞ্জয়। স্ত্রী এবং দুই ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে। কিছু দিনের মধ্যেই স্ত্রী রেশমির আত্মহত্যার ঘটনা ঘটল। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পিছনে আমেরিকা ছাড়তে বাধ্য হওয়ার হতাশাই কাজ করেছে কি না, না কি অন্য কিছু তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই অস্বাভাবিক মৃত্যুর অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ। ৩৯ বছরের রেশমি আদতে উত্তরপ্রদেশের মেয়ে। আমেরিকা থেকে এমন ভাবে ফিরে আসার হতাশা তো ছিলই। হতাশা নাকি আরও বেড়েছিল দিল্লিতে, বা নিদেনপক্ষে উত্তর ভারতের, কোথাও নতুন সংসার পাততে না পেরে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন