দূরপাল্লার ট্রেনের গতি বাড়াতে চাইছে রেল। কিন্তু বাধা মান্ধাতার আমলের সিগন্যালিং সিস্টেম। শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেটে তাই সিগন্যালিং ব্যবস্থার খোলনলচে বদলে ফেলতে বড় মাপের অর্থ বরাদ্দ আশা করছে রেল মন্ত্রক।
বুলেট ট্রেন এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে। দেশের আমজনতাকে গতির স্বপ্ন দেখানো নরেন্দ্র মোদী সরকার আপাতত চাইছেন চালু ট্র্যাকের গতি বাড়াতে। ইতিমধ্যেই চেন্নাইয়ের ইন্টিগ্র্যাল কোচ ফ্যাক্টরি দেশীয় প্রযুক্তিতে ট্রেন সেট বানিয়ে ফেলেছে। যেগুলি প্রতি ঘণ্টায় ১৬০ থেকে ১৮০ কিলোমিটার গতিতে ছুটতে সক্ষম। আগামী দিনে শতাব্দী এক্সপ্রেসের জায়গা নিতে চলছে ওই ট্রেন। কিন্তু সমস্যা হল ওই গতিতে ছুটতে গেলে যে আধুনিক সিগন্যালিং ব্যবস্থা প্রয়োজন, তা এ দেশে চালু নেই। সেই কারণে বর্তমানে রাজধানীর ইঞ্জিন ১৩০ কিলোমিটার গতিতে ছুটতে সক্ষম হলেও কোনও ভাবেই ১০০ কিলোমিটারের বেশি গতি তুলতে পারে না। এই ছবিটিই এ বার পাল্টাতে চাইছে মন্ত্রক।
রেলের একটি সূত্র অনুযায়ী, এই মুহূর্তে গোটা দেশের সিগন্যালিং সিস্টেম আধুনিক করতে প্রয়োজন ৭০-৭৫ হাজার কোটি টাকা। মন্ত্রক চাইছে চলতি বাজেটে ওই খাতে অন্তত দশ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ করা হোক। সে ক্ষেত্রে গোটা দেশে যে পাঁচটি হাইস্পিড করিডর রয়েছে, সেগুলির অন্তত সিগন্যালিং সিস্টেমের খোলনলচে পাল্টে ফেলা সম্ভব হবে। তাতে অন্তত ক্ষমতার থেকে গড়ে ১৫০ শতাংশ বেশিতে চলা লাইনগুলিতে ট্রেনের স্পিড বাড়বে। নতুন ট্রেন চালানোর সুযোগ বাড়বে। রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের কথায়, ‘‘চলতি মাসেই সিগন্যালিং ব্যবস্থা পাল্টানো নিয়ে রেলকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। ঠিক হয়েছে আগামী কয়েক বছরে গোটা দেশের সিগন্যালিং ব্যবস্থা পাল্টে ফেলা হবে।’’
আধুনিক অটোমেটেড ওই সিগন্যালিং ব্যবস্থা বসানোর প্রশ্নে ইতিমধ্যেই অ্যালস্টম, সিমেন্স, বমবারডিয়ারের মতো সংস্থার সঙ্গে প্রাথমিক কথা হয়েছে রেলের। মন্ত্রক জানিয়েছে, এই খাতে অর্থ বরাদ্দ হলেই আধুনিক সিগন্যাল বসাতে আন্তর্জাতিক দরপত্র ডাকা হবে।
গতি বাড়াতে পুরনো লাইন পাল্টানোর কাজেও হাতে দিয়েছে রেল। দেশের ৬৪ হাজার কিলোমিটার রেলপথের মধ্যে গড়ে ২৫০০ কিলোমিটার লাইন ফি বছর পাল্টানো হয়। চলতি বছরে ওই লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ৩৫০০ কিলোমিটার করেছে রেল। সেই কারণে আগে যেখানে প্রতি মাসে ২৩৩ কিলোমিটার লাইন পাল্টানো হতো, সেই লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ৩৯৯ কিলোমিটার করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।