গুচ্ছখানেক নতুন ট্রেনের ঘোষণা না-করে তিনি যে রেলের পরিষেবা উন্নয়নে জোর দিতে চান, বাজেটেই তা স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু। এ বার সেই ঘোষিত পথে হেঁটেই যাত্রীদের জোড়া সুবিধা দেওয়ার কথা জানাল রেল। প্রথমত ওয়েটিং লিস্টে নাম আটকে থাকা যাত্রীদের নির্দিষ্ট দিনেই গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার বন্দোবস্ত করতে বিমান সংস্থার সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধছে আইআরসিটিসি। আর তৎকাল টিকিটের জন্য ওয়েবসাইটে উপচে পড়া ভিড় ঠেকাতে তা কাটার নিয়মে কিছুটা বদল আনছে রেল।
হয়তো নির্দিষ্ট দিনে গন্তব্যে পৌঁছতেই হবে। অথচ কিছুতেই কনফার্ম হল না হাতে থাকা রেলের টিকিট। আটকে রইল ওয়েটিং লিস্টেই। এই পরিস্থিতিতে যাত্রীদের সুরাহা দিতে আইআরসিটিসি-র সঙ্গী হল গো-এয়ার (এই একই বিষয়ে কথা চলছে স্পাইসজেটের সঙ্গে)। যাত্রী এই সুবিধা নিতে রাজি কি না, অবশ্যই তা জিজ্ঞাসা করবে রেল। বিমানে চড়তে বাড়তি ভাড়াও গুনতে হবে ওই পরিষেবা নিতে রাজি যাত্রীদের। কিন্তু সুবিধা হল, তা হবে সাধারণ বিমান ভাড়ার তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ কম। অন্তত রেল সূত্রে তেমনই দাবি।
অনেকেই বলছেন, এই ব্যবস্থা চালু হলে, লাভ রেল-বিমান দু’পক্ষেরই। যাঁদের নির্দিষ্ট দিনে কোথাও পৌঁছনো খুবই দরকার, কিছুটা বাড়তি টাকার বিনিময়ে অনেক তাড়াতাড়ি সেখানে পৌঁছে যেতে পারবেন তাঁরা। তেমনই আবার ওই সব যাত্রীদের নিয়ে উড়ানের শূন্য আসন ভরে ফেলতে পারবে বিমান পরিবহণ সংস্থাও। উল্লেখ্য, সমীক্ষা অনুযায়ী, প্রায় প্রতি রুটেই ফি দিন গড়ে প্রতি উড়ানে খালি থাকে ২০-২৫টি আসন। ফলে কিছুটা কম ভাড়াতেও সেখানে যাত্রী পেলে আখেরে লাভ বিমান সংস্থারই।
ঠিক হয়েছে, কোনও রুটে ওয়েটিং লিস্টে থাকা যাত্রীদের সে দিন বা বড়জোর পরের দিন বিমানে আসনের ব্যবস্থা করে দেবে আইআরসিটিসি। তবে তার জন্য অন্তত তিন দিন আগে ট্রেনের টিকিট কাটা থাকতে হবে আইআরসিটিসির মাধ্যমে।
প্রাথমিক ঘোষণার পরেও অবশ্য অনেক প্রশ্ন এখনও ঘোরাফেরা করছে এই পরিকল্পনা ঘিরে। যেমন গো-এয়ার জানিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে কোনও রুটে রোজ ১০০টি টিকিট বিক্রি করবে তারা। কিন্তু প্রশ্ন হল, ট্রেনে যদি ওয়েটিং লিস্টে থাকা তার বেশি যাত্রী বিমানে যেতে রাজি থাকেন, তা হলে?
একই ভাবে, নেটে তৎকাল টিকিট কাটতে গিয়ে হয়রানি ঠেকাতে ওই পরিষেবাতেও পরিবর্তন আনছে রেল। আগামী ১ জুলাই থেকে সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত শুধু বাতানুকূল শ্রেণির টিকিটই কাটা যাবে। আর পরের এক ঘন্টায় মিলবে শুধুমাত্র স্লিপার শ্রেণির টিকিট। একসঙ্গে সবাই টিকিট কাটতে গেলে যে সমস্যার মুখে পড়তে হত, তার সুরাহা করতেই এই সিদ্ধান্ত। এ ছাড়া, এতদিন তৎকাল পরিষেবায় কাটা টিকিট শেষ পর্যন্ত ওয়েটিং লিস্টে থেকে গেলেও টিকিটের দাম ফেরত পাওয়া যেত না। কিন্তু আগামী দিনে ওই ক্ষেত্রে টিকিটের সর্বাধিক অর্ধেক দাম ফেরত পাবেন যাত্রীরা। বিভিন্ন ব্যস্ত রুটে গরমের বা পুজোর ছুটিতে টিকিটের চাহিদা বেশি থাকলে, চালানো হবে তৎকাল স্পেশাল ট্রেনও।