coronavirus

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ বুঝতে এবং সামলাতে কী করবেন, জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা

চলতি বছরের গোড়ায় ভারত সরকার ভেবে নিয়েছিল, তারা করোনা যুদ্ধ জিতে গিয়েছে। তাই লকডাউন শিথিল করা হয়। শুরু হয় বিদেশে বিপুল পরিমাণে টিকা পাঠানো।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২১ ০৮:৫৫
Share:

আগের বছরের থেকে এ বছর করোনার সংক্রমণের ধরন আলাদা।

ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ভয়াবহ রূপ নেওয়ার জন্য সরকারি উদাসীনতাকেই সবচেয়ে বেশি দায়ী করছেন বিদেশের চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। এক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমনই দাবি করা হয়েছে। একই সঙ্গে ভারতে করোনার বাড়বাড়ন্ত আটকাতে সাধারণ মানুষের জন্য বেশ কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।

Advertisement

হালে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বহু চিকিৎসক এবং সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, ভারতে হঠাৎ করোনার এই ভয়াবহতার কারণ কী? বেশির ভাগই বলেছেন, নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলির প্রচারে জমায়েত থেকে শুরু করে কুম্ভ মেলা— সব ক’টি কারণই রয়েছে এর পিছনে। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, চলতি বছরের গোড়ায় ভারত সরকার ভেবে নিয়েছিল, তারা করোনা যুদ্ধ জিতে গিয়েছে। তাই লকডাউন শিথিল করা হয়। শুরু হয় বিদেশে বিপুল পরিমাণে টিকা পাঠানো। আর এই তাড়াহুড়োই বিপদ ডেকে এনেছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

বর্তমান পরিস্থিতিতে কী করা উচিত? সাধারণ মানুষের কাছে চিকিৎসকেরা আর্জি জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার। বাইরে সব সময় মাস্ক পরার। দ্বিতীয় তরঙ্গ আটকাতে নতুন কিছু স্বাস্থ্যবিধির পরামর্শও দেওয়া হয়েছে সাধারণ মানুষের জন্য। যেমন বলা হয়েছে, দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমিত হলে অনেক সময়ই করোনা পরীক্ষায় তা ধরা পড়ছে না। অথচ উপসর্গ থাকছে। এ সব ক্ষেত্রে সিটি স্ক্যান করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও বলা হয়েছে, এ বার ১৮ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে থাকা মানুষ আগের বারের চেয়ে বেশি মাত্রায় আক্রান্ত হচ্ছেন।

Advertisement

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

নিজে করা সম্ভব এমন কয়েকটি নতুন পরীক্ষার কথাও বলা হয়েছে এখানে। আক্রান্ত হওয়ার পর অনেকেই বুঝতে পারেন না তাঁদের সংক্রমণ কতটা গুরুতর। তাঁদের ক্ষেত্রে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ‘৬ মিনিট হাঁটা’ পরীক্ষার। করোনা সংক্রমিত হলে শরীর কতটা খারাপ, তা বোঝার সবচেয়ে সহজ রাস্তা এটি। এতে বলা হয়েছে, উপসর্গ যে দিন দেখা দিয়েছে, তার ৩ থেকে ৬ দিন পর্যন্ত রোজ টানা ৬ মিনিট করে হাঁটুন। হাঁটা শেষ করেই অক্সিমিটারে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা পরীক্ষা করুন। ৬ মিনিট হাঁটার ফলে অক্সিজেনের মাত্রা কি আগের চেয়ে ৫ শতাংশ বা তার বেশি হ্রাস পাচ্ছে? এর অর্থ নিউমোনিয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ সব ক্ষেত্রে অবিলম্বে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে চিকিৎসক পুষ্পিতা মণ্ডল বলেন, ‘‘এ বার কোভিডের উপসর্গ বদলে গিয়েছে। অনেকেরই জ্বর হচ্ছে না। সবচেয়ে ভযের কথা, এ বার কোভিড থাকা সত্ত্বেও প্রথম ১-২ বারের পরীক্ষায় তা ধরা পড়ছে না। অনেক সময় পরীক্ষার আগে কুলকুচি করে মুখ ধুলে ফল ঠিকঠাক আসে না।’’ তাঁর মতে, উপসর্গ দেখে সন্দেহ হলে একের বেশি বার পরীক্ষা করানো উচিত।

দ্বিতীয় তরঙ্গ ভারতে ভয়ঙ্কর চেহারা নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বহু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞই। আপাতত অস্ত্র একটাই— মাস্ক। আর সুযোগ এসে গেলেই টিকা। এ ভাবেই সাধারণ মানুষকে সাবধান হতে বলছেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন