প্রেমিকের হয়ে ক্ষমা চাইলেন চানু

চানুর অনশন ভাঙার পর থেকে নাম শোনা যাচ্ছিল না ডেসমন্ড কুটিনহোর। বিয়ের চিন্তা সরিয়ে ভোটযুদ্ধের জন্য তৈরি হচ্ছিলেন শর্মিলা। কিন্তু তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগে ফের আসরে ডেসমন্ড।

Advertisement

রাজীবাক্ষ রক্ষিত

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:১৮
Share:

চানুর অনশন ভাঙার পর থেকে নাম শোনা যাচ্ছিল না ডেসমন্ড কুটিনহোর। বিয়ের চিন্তা সরিয়ে ভোটযুদ্ধের জন্য তৈরি হচ্ছিলেন শর্মিলা। কিন্তু তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগে ফের আসরে ডেসমন্ড। শর্মিলার ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে শুরু হল তাঁর ‘অনলাইন’ তরজা। বিপাকে পড়ে প্রেমিকের হয়ে জনতা ও সমর্থকদের কাছে ক্ষমা চাইলেন শর্মিলা। তবে চানু জানালেন, ভোটের পর বিয়ে করতে পারেন ডেসমন্ডকেই।

Advertisement

অনশন ভাঙার দিন শর্মিলা ঘোষণা করেছিলেন, ভোটে জিতে মুখ্যমন্ত্রী হতে চান। তারপর গড়বেন দুর্নীতিমুক্ত সমাজ, আফস্পামুক্ত মণিপুর। কিন্তু মাত্র চারটি আসনে প্রার্থী দিতে পেরেছে তাঁর দল পিআরজেএ। তবু মুখ্যমন্ত্রী ওক্রাম ইবোবির বিরুদ্ধে চানুর লড়াই নিয়ে রাজ্যে জল্পনা ছড়িয়েছে।

ডেসমন্ডকে বরাবর গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এজেন্ট বলে মনে করেছে চানুর পরিবার ও দল। চানুর সঙ্গে দেখা করতে ইম্ফলে এসে মার খেয়েছেন ডেসমন্ড। চানু বরাবরই প্রেমিকের পাশে ছিলেন। অনশন ভাঙার পর জানিয়েছিলেন, মণিপুরবাসী তাঁর সঙ্গ না দিলে তিনি ডেসমন্ডকে বিয়ে করে প্রবাসে চলে যাবেন। গত বছর অগস্টের পর থেকে ডেসমন্ড উধাও ছিলেন। শর্মিলা ঘনিষ্ঠরা জানান, ডিসেম্বর থেকে শর্মিলার সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ান ডেসমন্ড। শর্মিলা যখন পুরোদমে রাজনৈতিক দল তৈরি করে প্রচার শুরু করেছেন, ঠিক তখন তাঁর দলের কর্মী ও নেতাদের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে সোশ্যাল সাইটে তির্যক মন্তব্য করেন ডেসমন্ড। দাবি করেন, শর্তসাপেক্ষে শর্মিলার পরিবারের সঙ্গে তাঁর ভুল বোঝাবুঝি কাটিয়ে দিতে তৈরি চানুর ঘনিষ্ঠরা। তাঁদের শর্ত, ডেসমন্ড মণিপুর বা যে কোনও জায়গায় শর্মিলাকে নিয়ে সুখে সংসার করতে পারেন। কিন্তু রাজনীতি থেকে সরে থাকতে হবে শর্মিলাকে। চানু-ঘনিষ্ঠ মানবাধিকার কর্মী বাবলু লৈতোম্বাম, ইরেন্দ্র লেইচোমবাম, সঞ্জু থংজাম, টোনি খাংগেমবাম, ইয়ামবেম লাবাদের সম্পর্কেও নেতিবাচক মন্তব্য করতে থাকেন ডেসমন্ড।

Advertisement

গত কাল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পরই চানুকে অনুগামীদের রোষের মুখে পড়তে হয়। গত রাতে চানু বলেন, ‘‘না বুঝে ডেসমণ্ড সকলকে আঘাত করেছেন। আমি তাঁর হয়ে ক্ষমা চাইছি। ডেসমন্ডের তিন বার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। বয়স হয়েছে। ওঁকে আর আক্রমণ করবেন না।’’ ডেসমন্ড ফেসবুকে লেখেন— ‘‘আমাকে নিয়ে অপপ্রচার চালিয়ে শর্মিলাকে ভোটে লড়তে না দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে। তাঁর লড়াই যাতে থেমে না যায়, সে জন্য সকলের কাছে ক্ষমা চাইছি। আশা করি এ বার আপনারা ওঁকে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে লড়তে দেবেন।’’

শর্মিলার পরিবারের এক সদস্য বলেন, ‘‘দিনরাত পরিশ্রম, ভোট প্রচারে সাইকেলে বহু কিলোমিটার পাড়ি দেওয়া মেয়েটা মনে মনে একেবারে ভেঙে গিয়েছে। এক দিকে প্রেমিক, অন্য দিকে মণিপুরের জনতা, রাজনীতি, ভোটের লড়াইয়ে সে ভাবে সাড়া না মেলা শর্মিলাকে অস্থির করে তুলেছে। তার পরও মাথা ঠাণ্ডা রেখে কাজ করছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন