পাশাপাশি: রেজিস্ট্রি বিয়ের আবেদন দাখিলের পরে শর্মিলা চানু এবং ডেসমন্ড কুটিনহো। —নিজস্ব চিত্র।
রেজিস্ট্রি বিয়ের জন্য আবেদন করলেন মণিপুরের ভুলে যাওয়া ‘লৌহমানবী’। দক্ষিণ ভারতের কোদাইকানালে।
সেনাবাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন (সংক্ষেপে আফস্পা) প্রত্যাহারের দাবিতে অনশনে ছিলেন তিনি। তা ভাঙার পর কার্যত আত্মীয়-বন্ধুহীন হয়ে পড়েন ইরম শর্মিলা চানু। পাশে শুধু থাকেন হবু স্বামী, ব্রিটিশ নাগরিক ডেসমন্ড কুটিনহো। ‘স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্ট’-এ রেজিস্ট্রি বিয়ের জন্য বুধবার ফর্ম দাখিল করলেন তাঁরা দু’জন।
ঠিক এক বছর আগে ইম্ফলের হাসপাতালে অনশন করছিলেন শর্মিলাদেবী। তাঁর প্রতি পদক্ষেপ ছিল সংবাদ শিরোনামে। অনশন ভাঙার সিদ্ধান্তে মণিপুরে মুহূর্তে ব্রাত্য হন তিনি। প্রবল সমালোচনার মুখে কোণঠাসা হয়ে পড়েন। বিধানসভা ভোটে লড়লেও, লজ্জাজনক হার হয় তাঁর। তার পর থেকেই ‘লৌহমানবী’কে ভুলে ছিল মণিপুর। শর্মিলাদেবীও চলে যান সবার চোখের আড়ালে। তাঁর কথায়, ‘‘নিজের রাজ্যে মানুষের ব্যবহার আহত করেছে। অনশন প্রত্যাহারের পর মানুষের বিদ্বেষ দেখে মনে হয়েছে, আমার মানবিক সত্তা কেউ দেখতে চাননি।’’
শর্মিলাদেবীর পরিবার, অনুগামীরা ডেসমণ্ডকে সহ্য করতে পারেন না। ছুটি কাটাতে তা-ই দক্ষিণ ভারতে যান শর্মিলা। পরে সেখানেই পাকাপাকি ভাবে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। কোদাইকনালের পেথুপারাইতে ঘরভাড়া নিয়েছেন তাঁরা। সেখানে খুলেছেন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। আবেদন করেছেন আধার কার্ডের জন্যও।
দাদা সিংহজিৎ জানান, বোনের বিয়েতে তাঁদের কোনও আপত্তি নেই। তিনি প্রাপ্তবয়স্ক। জীবন নিয়ে সিদ্ধান্ত তাঁর একার। এ নিয়ে পরিবারের সঙ্গে তাঁর কোনও কথা হয়নি। শর্মিলাদেবী বলেন, ‘‘এ বার জীবনের নতুন পথে এগোতে চান।’’