শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেটে নজর কি রেল-সুরক্ষায়

এই বাজেটে রেল মন্ত্রকের পাখির চোখ হল সুরক্ষা। একের পর এক দুর্ঘটনার কারণে রেলের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে।

Advertisement

অনমিত্র সেনগুপ্ত

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:৫১
Share:

রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল।

লোকসভা নির্বাচনের আগে মোদী সরকারের এটিই শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট। সরকারের শেষ বাজেটে অর্থ মন্ত্রক দরাজহস্ত হবে এই আশায় বুক বাঁধছে রেল মন্ত্রক।

Advertisement

সূত্রের খবর, রেল মন্ত্রক যে খসড়া বাজেট অর্থ মন্ত্রকে পাঠিয়েছে তার আয়তন প্রায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি। যার অন্তত অর্ধেক অর্থাৎ ৬০ থেকে ৬৫ হাজার কোটি টাকা কেন্দ্রীয় সহায়তা হিসেবে রেলকে দেওয়ার বিষয়ে দরবার করেছে পীযূষ গয়ালের মন্ত্রক। যা পাওয়া গেলে সেটি হবে রেলের ইতিহাসে সর্ব্বোচ্চ কেন্দ্রীয় সাহায্য। রেল মন্ত্রক জানিয়েছে, চলতি বছরে রেলে সরকারি বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয়ে ইতিবাচক বার্তা দিয়েছে অর্থ মন্ত্রকও।

এই বাজেটে রেল মন্ত্রকের পাখির চোখ হল সুরক্ষা। একের পর এক দুর্ঘটনার কারণে রেলের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। পুরনো কামরা ও লাইন, মান্ধাতার আমলের সিগন্যালিং ব্যবস্থার কারণে ওই দুর্ঘটনাগুলি ঘটছে বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। সেই কারণে স্রেফ সুরক্ষা খাতেই অন্তত ২০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অর্থ মন্ত্রক। সেই টাকা টিকিটে সেসের মাধ্যমে তোলা হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রীর উপরেই ছেড়ে দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। কারণ একে তো এই বছরে পাঁচ-ছ’টি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। তার পর বছর গড়ালেই লোকসভার লড়াই। ফলে অল্প হলেও সেস বসানোর ঝুঁকি সরকার নেয় কিনা সেটাই দেখার।

Advertisement

রেল মন্ত্রকও স্বীকার করে নিচ্ছে, বছরের পর বছর অবহেলার কারণে সুরক্ষা খাতে এখন দ্রুত বিনিয়োগ প্রয়োজন। খোদ রেলমন্ত্রী গয়ালের কথায়, ‘‘আমাদের প্রধান লক্ষ্যই হল যাত্রী নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা। তার জন্য প্রয়োজনে ধীর গতিতে ট্রেন চালাতে হলেও চালাব।’’ কিন্তু কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক থেকে এই কাজের জন্য বাড়তি অর্থসাহায্য না পেলে সুরক্ষায় জোর দেওয়া যে অসম্ভব তা স্বীকার করে নিয়েছে রেল মন্ত্রক।

মন্ত্রকের একটি সূত্র বলছে, যদি এ বারের বাজেটে সত্যিই ২০ হাজার কোটি টাকা সুরক্ষা খাতে বরাদ্দ হয়, তা হলে সেই টাকার একটি বড় অংশ খরচ করা হবে নতুন ও মজবুত লাইন পাততে। আপাতত বুলেট ট্রেনের স্বপ্নকে দূরে সরিয়ে রেখে বর্তমান দূরপাল্লার লাইনে ১৬০ থেকে ২০০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন ছোটাতে চায় রেল। গাড়ি সেই গতিতে ছোটাতে গেলে লাইনের খোলনলচে বদল করতে হবে।

প্রাথমিক ভাবে তাই ঠিক হয়েছে, দেশে যে পাঁচটি ‘সেমি-হাইস্পিড করিডর’ রয়েছে সেগুলির পরিকাঠামোগত উন্নয়নের কাজ হবে সকলের আগে। লাইন শুধু নয়, বদলে ফেলা হবে সিগন্যালিং ব্যবস্থাও।

আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে চাকরির বিষয়টি বিরোধীদের প্রচারের বড় হাতিয়ার হতে চলেছে। তাই ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের আওতায় ভোটমুখী রাজ্য মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান ও ছত্তীসগঢ়ে রেলের কামরা ও যন্ত্রাংশের কারখানা তৈরির ঘোষণা হতে পারে। সরকারের লক্ষ্যই হবে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের আওতায় কী ভাবে রোজগার তৈরি হতে চলেছে, সেই চিত্র তুলে ধরা। রেলের নিরাপত্তা সংক্রান্ত দেড় লক্ষ পদ শূন্য রয়েছে। সেগুলি পূরণের আশ্বাস দিয়ে কর্মসংস্থানের প্রশ্নে ইতিবাচক বার্তা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে মোদী-জেটলির।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন