N. Biren Singh

বীরেনের আত্মীয় কি মাদক-মাফিয়া, প্রশ্ন

মণিপুরে মাদকের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মৌচাকে ঢিল মারা প্রাক্তন এএসপি টি বৃন্দা থৌবাল থেকে এক মাদক মাফিয়া তথা স্বশাসিত পরিষদের সদস্য ঝৌকে বমাল গ্রেফতার করেছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি ও শিলচর শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০২৩ ০৮:০৭
Share:

মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ। —ফাইল চিত্র।

যে কথা নিয়ে কানাঘুষো চলছিল অনেক দিন ধরে, সেই বিতর্কিত প্রসঙ্গই এ বার বিবৃতি দিয়ে সামনে নিয়ে এল মণিপুরে জনজাতিদের যৌথ মঞ্চ আইটিএলএফ। প্রশ্ন তুলল মুখ্যমন্ত্রীর আত্মীয়ের ‘ড্রাগ লর্ড’ হওয়া নিয়ে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর আত্মীয়ের বিরুদ্ধেও মাদক মাফিয়া হওয়ার অভিযোগ আনল তারা।

Advertisement

৪৪ দিন ধরে সংঘর্ষ, ১২০ জনের মৃত্যু, ২০০ গ্রাম পোড়ার পরেও অগ্নিগর্ভ মণিপুর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নীরবতা ও রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি না করা নিয়ে সমালোচনা করে আইটিএলএফ সরকারের উদ্দেশ্যে ১৮ দফা প্রশ্ন ছুড়ল। প্রথমেই তারা সরাসরি জানতে চায়, মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের আত্মীয় যে ইম্ফলের মাদক সম্রাট, তা সত্যি কি না? এ ছাড়া প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর এক আত্মীয়ও মাদক মাফিয়া বলে তারা অভিযোগ তুলেছে।

মণিপুরে মাদকের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মৌচাকে ঢিল মারা প্রাক্তন এএসপি টি বৃন্দা থৌবাল থেকে এক মাদক মাফিয়া তথা স্বশাসিত পরিষদের সদস্য ঝৌকে বমাল গ্রেফতার করেছিলেন। আদালতে বৃন্দা জানান, মুখ্যমন্ত্রী বীরেন তখন বারবার ঝৌকে ছাড়ার জন্য, তার বিরুদ্ধে চার্জশিট তৈরি না করার জন্য চাপ দিয়েছিলেন। এমনকি মাদক বিরোধী লড়াইয়ে সাফল্যের জন্য নিজে বৃন্দাকে পদক পরানো বীরেন পরে তাঁকে নিজের চেম্বারে তলব করে ওই মামলায় অনড় মনোভাব নেওয়া ও ঝৌকে না ছাড়ার জন্য বকাবকি করেন। পরে বিভিন্ন ভাবে বৃন্দাকে চাপে ফেলা হয়, গ্রেফতারও করা হয়। বিরক্ত বৃন্দা মাদকের বিরুদ্ধে লড়াইতে মুখ্যমন্ত্রীর অসহযোগিতার দিকে আঙুল তুলে পুলিশের চাকরিই ছেড়ে দেন।

Advertisement

আইটিএলএফ আজ দাবি করে, বৃন্দার জমা দেওয়া রিপোর্টে মাদক চক্রে জড়িত সব রাজনৈতিক নেতা ও মাদক মাফিয়ার নাম প্রকাশ করা হোক। তাদের আরও দাবি, থৌবাল জেলায় মুখ্যমন্ত্রীর নাকের ডগায় ব্রাউন সুগার ও হেরোইন তৈরির কারখানা চলছে। আইটিএলএফের প্রশ্ন, সংঘর্ষের দায়ের হওয়া ৩০০০ এফআইআরের একটিও সশস্ত্র মেইতেই দল আরাম্বাই টেংগলের বিরুদ্ধে নেই কেন? কেন তাদের নেতার রাইফেল হাতে ছবি ও মেইতেই লিপুনের নেতা প্রমোত সিংহের মণিপুর থেকে সব কুকিদের মুছে দেওয়ার ডাক দেওয়ার পরেও তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করছে না?

মণিপুরে প্রচুর থানা ও রিজ়ার্ভ ব্যাটেলিয়নের অস্ত্রাগার লুট হয়েছে। জনজাতি মঞ্চ জানতে যায় কী ভাবে একটিও গুলি না চালিয়ে এতগুলি পুলিশ অস্ত্রাগার লুট হতে পারে? ওই সব থানার ওসির কেন সাজা হয়নি? কেন আগে থেকে সেনা মোয়াতেন থাকলেও মুখ্যমন্ত্রী সেনাকে পদক্ষেপ করার অনুমতি দেননি?

মণিপুরে কুকি জঙ্গিদের সাহায্য নিয়ে ভোটে জেতার অভিযোগে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মার পদত্যাগ ও গ্রেফতারি দাবি করেছে কংগ্রেস। সেই পথে হেঁটেই অসমের ডিজিপি জি পি সিংহের হাতে স্মারকপত্র তুলে দিয়ে অসম প্রদেশ কংগ্রেস দাবি করল সংবিধান-বিরোধী কাজ ও রাজনৈতিক স্বার্থে জঙ্গিদের সঙ্গে হাত মেলানোর অভিযোগে হিমন্তের বিরুদ্ধে এফআইআর করে আইনগত ব্যবস্থা নিক পুলিশ।

অন্য দিকে, মণিপুর ও মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী আজ সাম্প্রতিক ঘটনাবলি নিয়ে ফোনে কথা বলেন৷ এন বীরেন সিংহই জোরামথাঙ্গাকে ফোন করেন৷ মিজোরামে বসবাসকারী মেইতেইদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার অনুরোধ জানান৷ জোরাম বলেন, ‘‘আমি তাঁকে আশ্বস্ত করেছি, এ নিয়ে মোটেও ভাবতে হবে না৷ আমরা আগে থেকেই সে ব্যাপারে সতর্ক রয়েছি৷’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন