জিএসএলভি-এমকে২ রকেটে করে মহাকাশে পাঠানো হবে নিসারকে। ছবি: পিটিআই।
কিছু দিন আগেই আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে ফিরেছেন ভারতীয় নভশ্চর শুভাংশু শুক্ল। অভিযানের উদ্যোক্তা নাসা হলেও লখনউয়ের ছেলের মহাকাশ ছুঁয়ে ফেরার গল্পের রেশ এখনও কাটেনি। তার সপ্তাহ তিনেকের মাথায় মহাকাশে পাঠানো হচ্ছে কৃত্রিম উপগ্রহ ‘নিসার’। তবে এ বার ভারত ও আমেরিকার যৌথ উদ্যোগে।
বুধবার বিকেল ৫টা নাগাদ অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশকেন্দ্র থেকে উৎক্ষেপণ করা হবে ভারত ও আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থার যৌথ উদ্যোগে তৈরি এই কৃত্রিম উপগ্রহ। উপগ্রহটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘নাসা-ইসরো সিনথেটিক অ্যাপারচার রেডার’ (নিসার)। জিএসএলভি-এমকে২ রকেটের মাধ্যমে মহাকাশে ছুড়ে দেওয়া হবে এই উপগ্রহকে। প্রায় ২,৮০০ কেজি ওজনের এই উপগ্রহকে ৭৪৭ কিলোমিটার উচ্চতায় পৃথিবীর কক্ষপথে স্থাপন করা হবে। সেখান থেকেই পৃথিবীর ছবি তুলে পাঠাবে নিসার।
কী কী কাজ করবে ‘নিসার’?
‘নিসার’ই বিশ্বের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ যা দ্বৈত ফ্রিকোয়েন্সির রেডার (এল-ব্যান্ড এবং এস-ব্যান্ড) ব্যবহার করে পৃথিবীর পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্র, বায়ুমণ্ডল, বনজঙ্গল, হিমবাহ, ভূকম্পন এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ পর্যবেক্ষণ করবে। ভূপৃষ্ঠে কয়েক মিলিমিটারের পরিবর্তনও ধরা পড়বে এই কৃত্রিম উপগ্রহে। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, বছরের যে কোনও মরসুমে, শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা কিংবা দিন-রাত নির্বিশেষে মহাকাশ থেকে পৃথিবীর উচ্চমানের ছবি তুলতে পারবে এই কৃত্রিম উপগ্রহ। আর সে কারণেই বিশ্বের জলবায়ুর পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ, কৃষি এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় ‘নিসার’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
আর এ সব কারণেই মহাকাশ গবেষণায় ‘নিসার’-এর ভূমিকাকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা। শুধু তা-ই নয়, ভারত এবং আমেরিকার পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রেও এটি অন্যতম একটি ধাপ বলে মনে করা হচ্ছে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ বলেন, ‘‘এটিই ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) এবং নাসা-র তরফে পৃথিবীকে পর্যবেক্ষণের প্রথম যৌথ উদ্যোগ। তাই এই অভিযানকে ভারতের আন্তর্জাতিক স্তরে বৈজ্ঞানিক কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসাবে দেখা হচ্ছে।’’ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আরও বলেন, এই অভিযান কেবল একটি কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণই নয়, বরং বিজ্ঞান এবং বিশ্বকল্যাণের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ দু’টি দেশ যৌথ ভাবে কী কী করে দেখাতে পারে তার প্রতীক।