নাগরিকপঞ্জিতে নাম আছে কিনা, উদ্বেগ। ছবি: পিটিআই
নাম আঙুরি পোদ্দার। বয়স ৬৫ পার হয়েছে। অর্ধ শতাব্দী আগে বিয়ে হয়ে আলিপুরদুয়ারের সলসলাবাড়ি থেকে কোকরাঝাড় জেলার গোঁসাইগাঁওয়ে। নাগরিকপঞ্জি নিয়ে যখন অসম প্রশাসনে তৎপরতা চলছে, তখন আলিপুরদুয়ার জেলাশাসকের দফতরে আবেদন জানান আঙুরিদেবী। এক মাস কুড়ি দিন পরেও জবাব আসেনি, দাবি তাঁর ছেলে পরিতোষের। ফলে নাগরিক পঞ্জিতে ওঠেইনি আঙুরির নাম।
শুধু পরিতোষবাবুর মায়েরই নয়, এই সমস্যা অসমের গৌরীপুরের চন্দনা পাল, কোকরাঝাড়ের বিশাখা দত্তদেরও। এ দিন তাঁদের দেখা গেল আলিপুরদুয়ারের প্রশাসনিক ভবন ডুয়ার্সকন্যায় ভিড় করতে। তাঁদের অভিযোগ, আবেদন করার পরে মাস পার হয়ে গেলেও প্রয়োজনীয় নথি মিলছে না। অসম থেকে বারবার আলিপুরদুয়ারে আসতে হচ্ছে। বঙ্গাইগাঁওয়ে বিয়ে হয়েছে শামুকতলার লিপি দাসের। তিনিও আলিপুরদুয়ার জেলাশাসকের অফিসে নথি চেয়ে আবেদন করেছেন। এবং এক মাস পেরিয়ে গেলেও নথি পাননি। বঙ্গাইগাঁও থেকে এই কাজের জন্য তিন বার আলিপুরদুয়ারে আসতে হয়েছে তাঁকে।
পরিতোষবাবু বলেন, ‘‘২৭ অগস্ট পর্যন্ত অসমের নাগরিকপঞ্জিতে নাম তোলার আবেদন করা যাবে। কিন্তু জেলাশাসকের অফিস থেকে সেই নথি না-পেলে আবেদন করব কী ভাবে?’’ ক্ষোভ বিশাখা দত্তের গলায়ও। বলেন, ‘‘আমরা তো ভারতের নাগরিক। ৪০ বছর ধরে অসমে বিভিন্ন
নির্বাচনে ভোট দিয়েছি। এর পর আবার নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে হচ্ছে। আবার তার জন্য সব কাজ ফেলে ছুটোছুটি করতে হচ্ছে দুই রাজ্যে!’’
আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক নিখিল নির্মল জানিয়েছেন, ‘‘এনআরসি-র জন্য আলাদা হেল্প ডেস্ক খোলা হয়েছে। প্রচুর আবেদন পত্র জমা পড়ছে। নথি খুঁজতে হচ্ছে। তাই দেরি হচ্ছে। তবে এক-দেড় মাস সময় লাগার কথা নয়। তবুও অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।’’