Operation Sindoor

অপারেশন সিঁদুর: ভারতের প্রত্যাঘাতে নিহত জইশ প্রধান মাসুদ আজ়হারের বোন-সহ পরিবারের ১০ জন!

অনেকের মনেই প্রশ্ন, কেন বহওয়ালপুর শহরকেই বেছে নিয়েছিল ভারতীয় বাহিনী? বহওয়ালপুর শহরেই সন্ত্রাসবাদী সংগঠন জইশের শক্ত ঘাঁটি বলে দাবি করা হয়।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০২৫ ১৬:২১
Share:

জইশ-ই-মহম্মদ (জেইএম)-এর প্রধান মৌলানা মাসুদ আজ়হার। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র আকাশ থেকে আছড়ে পড়ে পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের বেশ কয়েকটি জঙ্গিঘাঁটিতে। মুহূর্তে গুঁড়িয়ে যায় সেই সব জঙ্গিঘাঁটি! ভারত এই অভিযানের নাম দিয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’, যার অন্যতম নিশানা ছিল বহওয়ালপুর শহর। পাকিস্তানও এই হামলার কথা স্বীকার করেছে! সেই হামলাতেই প্রাণ হারালেন জইশ-ই-মহম্মদ (জেইএম)-এর প্রধান জইশের প্রতিষ্ঠাতা মৌলানা মাসুদ আজ়হারের পরিবারের ১০ জন। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, নিহতদের মধ্যে রয়েছেন মাসুদের বোন এবং ভগিনীপতিও!

Advertisement

অনেকের মনেই প্রশ্ন, কেন বহওয়ালপুর শহরকেই বেছে নিয়েছিল ভারতীয় বাহিনী? বহওয়ালপুর শহরেই সন্ত্রাসবাদী সংগঠন জইশের শক্ত ঘাঁটি বলে দাবি করা হয়। জইশের সদর দফতর রয়েছে ‘জামিয়া মসজিদ শুভান আল্লাহ্‌’ ক্যাম্পাসে। সেই ক্যাম্পাসেই জঙ্গিদের প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়। এমনকি, সেই ক্যাম্পাসেই থাকতেন আজ়হার!

মঙ্গলবার রাত ১টা থেকে দেড়টার মধ্যে একসঙ্গে ২১টি জঙ্গিঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়। সেই হামলা নিয়ে আ‌জ়হার বিবৃতি দিয়ে জানান, ভারতীয় হামলায় তাঁর পরিবারের ১০ সদস্য নিহত হয়েছেন। তিনি এ-ও জানান, তাঁর কোনও আফসোস বা অনুশোচনা নেই। তবে বিভিন্ন পাকিস্তানি গণমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, ১০ জন নয়, ওই ঘাঁটিতে থাকা আজ়হার-ঘনিষ্ঠ ১৪ জনের মৃত্যু হয়।

Advertisement

অনেকের মনেই প্রশ্ন, এই হামলায় কি আজ়হারও নিহত? বহু দিন ধরেই ভারতের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকায় রয়েছেন তিনি। এমনকি, রাষ্ট্রপুঞ্জও আজ়হারকে ‘জঙ্গি’ বলে দাগিয়ে দেয়। তিনিই জইশের প্রতিষ্ঠাতা। ২০০২ সালে সরকারি ভাবে জইশ-ই-মহম্মদকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ, তা কেবল খাতায়কলমে। পাকিস্তানের এই ক্যাম্পাসে বসে বিনা বাধায় কাজ করত জইশ জঙ্গিরা। ভারতে বিভিন্ন জঙ্গি হামলার নেপথ্যেই ছিল জইশ। ২০০১ সালে দিল্লিতে সংসদে হামলা হোক বা ২০১৬ সালে পঠানকোটে বিমানঘাঁটি কিংবা ২০১৯ সালের পুলওয়ামায় হামলা— এমন নানা জঙ্গি হামলা চালিয়েছিল জইশ। ২০০১ সালের সংসদ হামলার পর থেকেই আজ়হার অন্তরালে চলে যান। তবে ২০২৪ সালের শেষের দিকে বহওয়ালপুরে আবার তাঁকে দেখা গিয়েছিল। ভারতীয় গোয়েন্দারা, তাঁর গতিবিধির উপর কড়া নজর রেখেছিলেন। সর্বশেষ খবর থেকে জানা যায়, বহওয়ালপুরের ওই ক্যাম্পাসে বসেই আবার নতুন করে জঙ্গি হামলার ছক কষছিলেন আজ়হার। মনে করা হচ্ছে সেই তথ্যের ভিত্তিতেই বহওয়ালপুরে জইশের ঘাঁটিতে হামলা চালায় ভারতীয় বিমানবাহিনী। এই হামলায় পরিবারের সদস্যেরা নিহত হলেও আজ়হার বেঁচে আছেন কি না, তা নিয়ে ধন্দ দেখা দিয়েছে। এই বিষয়ে কেউই নিশ্চিত কিছু জানাচ্ছেন না।

গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার ঘটনায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। তার পরেই পাকিস্তানকে দায়ী করে একাধিক পদক্ষেপ করেছিল ভারত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছিলেন, ভারত এই হামলার যোগ্য জবাব দেবে। তিনি সেনাবাহিনীকেও পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়ে দিয়েছিলেন। এর পর মধ্যরাতে পাকিস্তানে হামলা চালাল ভারত। পাকিস্তানও হামলার কথা স্বীকার করেছে। তবে তাদের দাবি, ভারতীয় বিমান হামলায় পাকিস্তানের সাধারণ নাগরিকেরা প্রাণ হারিয়েছেন। তবে ভারত প্রথম থেকেই দাবি করে আসছে, পাকিস্তানের জঙ্গিঘাঁটিগুলিকে নিশানা করা হয়েছিল। এ-ও জানানো হয়েছে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কোনও পরিকাঠামোয় আঘাত হানা হয়নি।

শুধু বহওয়ালপুর শহরের জইশ ঘাঁটিতেই নয়, পাক অধিকৃত কাশ্মীরের কোটলিতেও হামলা চালায় ভারতীয় বিমানবাহিনী। সেই হামলায় নিহত হন লশকর-এ-ত্যায়বার ধর্মীয় প্রচারক মহম্মদ ইকবালও। ভারত বার বার দাবি করেছে, কোনও সাধারণ নাগরিকের উপর হামলা করা হয়নি! তবে ভারতের হামলার পরেই পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ। তিনি জানিয়েছেন, ভারতের এই হামলার পর চুপ থাকবে না পাকিস্তান। যোগ্য জবাব দেওয়া হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement