জালিয়ানওয়ালা কাণ্ডে নিহতদের স্মৃতির উদ্দেশে তৈরি স্মারক। —ফাইল চিত্র।
তিন দিন আগে জালিয়ানওয়ালা বাগের হত্যাকাণ্ডকে ব্রিটিশ ভারতের ইতিহাসে এক ‘লজ্জাকর দাগ’ বলেছেন টেরেসা মে। তবে ওই ঘটনার জন্য ক্ষমা চাননি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। আজ ওই হত্যাকাণ্ডের স্থলে গিয়ে পুষ্পস্তবক দিয়ে এলেন ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত ডমিনিক অ্যাস্কউইথ। দর্শনার্থীর খাতায় লিখলেন, ‘‘১০০ বছর আগে আজকের দিনে জালিয়ানওয়ালা বাগে যা ঘটেছিল, তা ব্রিটিশ ভারতের ইতিহাসের এক লজ্জাকর কাজের প্রতিফলন। ওই ঘটনা ও তাতে যে দুর্দশা তৈরি হয়েছিল, তার জন্য আমরা গভীর দুঃখিত।’’ এরই সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সুসম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে ভারত ও ব্রিটেনের দায়বদ্ধতার কথাও উল্লেখ করেন ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত।
এ দিন জালিয়ানওয়ালা বাগে এসে শ্রদ্ধা জানান কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। তাঁর সঙ্গে ছিলেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহ, নভজ্যোৎ সিংহ সিধু ও কংগ্রেসের আরও কিছু নেতা। দর্শনার্থীর খাতায় রাহুল লেখেন, ‘‘কী মূল্যে স্বাধীনতা এসেছে, তা ভোলার নয়। এর জন্য সর্বস্ব দিয়েছেন যাঁরা, তাঁদের কুর্নিশ জানাই।’’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, ‘‘ভারত সকল শহিদকে স্মরণ করছে। তাঁদের বীরত্ব ও আত্মদান ভুলব না। জালিয়ানওয়ালা বাগের গণহত্যা ভারতের জন্য আরও কঠোর পরিশ্রমের অনুপ্রেরণা জোগায়।’’
অমৃতসরের পার্টিশন মিউজিয়ামের সহযোগিতায় এ দিনই লন্ডনে ১৯১৯-এর হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। একই দিনে সে দেশের সংবাদমাধ্যম তুলে ধরছে কলঙ্কের ওই ইতিহাসের অন্য মুখ। নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের সমাবেশে গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়ার জন্য ব্রিটিশ সেনা জেনারেল রেজিনাড ডায়ার পদ খুইয়েছিল ১৯২০-র জুলাইয়ে। তার জন্য ২৬ হাজার পাউন্ড অনুদান সংগ্রহ করে রক্ষণশীল ব্রিটিশ সংবাদপত্র ‘মর্নিং পোস্ট’। শুরুটা হয় এক প্রতিবেদনের সূত্রে, সেটির শিরোনাম ছিল, ‘দ্য ম্যান হু সেভড ইন্ডিয়া’। বক্তব্য ছিল, ভারতে যে সব ব্রিটিশ রয়েছে, তাদের অস্তিত্ব নির্ভর করছে ডায়ার যেমনটি করেছেন, তেমন পদক্ষেপের উপরে। ডায়ারের প্রতি অন্যায় করেছেন ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ। আজ অবশ্য ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ ‘গভীর দুঃখিত’ ডায়ারের ওই কুকীর্তির জন্য।