না আঁচালে বিশ্বাস নেই, বলছে ভূস্বর্গ

কেন্দ্রে ও রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পরে জঙ্গি সমস্যা নিয়ন্ত্রণে দমননীতির পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। তাই প্রধানমন্ত্রীর বার্তা সত্ত্বেও বিশেষ আশার আলো দেখছেন না কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নূর মহম্মদ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শ্রীনগর ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৭ ০৩:৪২
Share:

ফাইল চিত্র।

গালি বা গুলি নয়। কাশ্মীরিদের কাছে টেনে নিয়েই কাশ্মীর সমস্যা সমাধানের রাস্তা বাতলেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর মুখের কথায় এখনই ভুলতে রাজি নন উপত্যকার মানুষ। গত ৭০ বছরের অভিজ্ঞতা থেকে তারা বলছেন, মুখে বার্তা দেওয়া আর তা বাস্তবে প্রয়োগ করে দেখানোর মধ্যে আকাশপাতাল ফারাক রয়েছে। তাই না আঁচালে বিশ্বাস করার কোনও কারণ নেই।

Advertisement

গত এক বছর ধরে হিংসা দীর্ণ কাশ্মীরের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতা দিবসের মঞ্চ থেকে কী বার্তা দেন তা দেখার জন্য উদ্‌গ্রীব ছিল সব শিবির। নিজের বার্তায় মোদী বলেন, ‘‘গালি বা গুলি নয়, কাশ্মীরিদের কাছে টানলে তবেই কাশ্মীর সমস্যা মিটবে।’’ মোদীর মুখের কথায় অবশ্য ই দ্বিধা কাটিয়ে উঠতে পারছেন না কাশ্মীর সংক্রান্ত রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহিদ গুলাম মহম্মদ। তাঁর কথায়, ‘‘এর আগেও মনমোহন সিংহ কাশ্মীর সমস্যা সমাধানে পাঁচটি ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের সওয়াল করেছিলেন। কিন্তু বাস্তবে কিছুই হয়নি।’’

কেন্দ্রে ও রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পরে জঙ্গি সমস্যা নিয়ন্ত্রণে দমননীতির পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। তাই প্রধানমন্ত্রীর বার্তা সত্ত্বেও বিশেষ আশার আলো দেখছেন না কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নূর মহম্মদ। তাঁর মতে, ‘‘এই সব ভাল কথা বিশ্বকে বার্তা দেওয়ার জন্য। আসলে সরকার যে নীতি নিয়ে চলছে সেই পথেই হাঁটবে।’’ ইতিহাসবিদ খালিদ বশির আহমেদের কথায়, ‘‘গত ৭০ বছরে কাশ্মীরের মানুষের জন্য কোনও ইতিবাতক বার্তা দিতে ব্যর্থ।’’

Advertisement

আজ মোদীকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি কংগ্রেস নেতা তথা জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী গুলাম নবি আজাদ। তাঁর মতে, ‘‘সরকারই এত দিন দমননীতির কথা বলে এসেছে। যৌথ আক্রমণের নীতি ব্যর্থ হওয়ায় এখন কাছে টানার কথা বলা হচ্ছে।’’ আজাদের মতে, ‘‘যে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হতে পারে সেই আলোচনার রাস্তা বন্ধ রাখা হয়েছে।’’

তবে কোথাও একটা আশার দেখছেন কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহিত্যের ছাত্র মুজতবা। তিনি বলেন, ‘‘গত তিন দশকের রক্তপাতে উপত্যকায় হাজার মানুষ মারা গিয়েছেন। প্রত্যেক কাশ্মীরি এখন চান গত তিন দশকের বিবাদ শেষ হয়ে শান্তি ফিরুক উপত্যকায়।’’ এ দিনই কাশ্মীরে গিয়েছেন প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী ও প্রবীণ বিজেপি নেতা যশবন্ত সিন্হা। রাজনীতিকদের মতে, প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রীর মাধ্যমে ট্র্যাক-টু আলোচনা শুরুর চেষ্টা চালাতে পারে কেন্দ্রীয় সরকার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন