জাপানি এনসেফ্যালাইটিসে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে অসমে

অসমে জাপানি এনসেফ্যালাইটিসে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়লেও, প্রতিষেধকের অভাবে সমস্যা পড়েছেন সাধারণ মানুষ। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, অসম তথা উত্তর-পূর্বের ওষুধ সরবরাহকারীদের হাতে দু’মাস ধরে ওই ওষুধ না আসায় বিপত্তি বেড়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৬ ১০:১৪
Share:

অসমে জাপানি এনসেফ্যালাইটিসে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়লেও, প্রতিষেধকের অভাবে সমস্যা পড়েছেন সাধারণ মানুষ। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, অসম তথা উত্তর-পূর্বের ওষুধ সরবরাহকারীদের হাতে দু’মাস ধরে ওই ওষুধ না আসায় বিপত্তি বেড়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ফার্মাসিতে এনসেফ্যালাইটিস প্রতিষেধকের অভাব দেখা দেওয়ার আশঙ্কা ছড়িয়েছে।

Advertisement

অসম সরকারের স্বাস্থ্য দফতর, ‘ন্যাশনাল ভেক্টর বোর্ন ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রাম’-এর অধীনে রাজ্যের ১৪টি জেলায় প্রতিষেধক দেওয়ার কাজ চলছে। তবে নলবাড়ি, বাক্সা, মরিগাঁওয়ে এখনও প্রয়োজনীয় প্রতিষেধক এসে পৌঁছয়নি। স্বাস্থ্য দফতরের সংশ্লিষ্ট শাখার কর্তা বি সি ভাগবতী জানান, বরাক উপত্যকা, কার্বি আংলং এবং ডিমা হাসাও জেলা বাদে অন্যত্র শিশুদের প্রতিষেধক দেওয়ার কাজ হয়ে গিয়েছে।

সরকারি সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ওই রোগে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে একটি শিশু ও এক জন মহিলা নগাঁওয়ে, এক মহিলা-সহ দু’জন মরিগাঁও জেলায়, তিন জন নলবাড়িতে, ডিব্রুগড়ে ৬ জন ও শিবসাগরে একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। নগাঁওয়ে হাসপাতালে ভর্তি পাঁচ জন।

Advertisement

গত বছর রাজ্যে ৫৬৫ জন জাপানি এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত হন। ১৩২ জনের মৃত্যু হয়। বেশির ভাগ রোগীই ছিল উজানি অসমের। এ বছরও নগাঁও ও ডিব্রুগড়ে সংক্রমণ বেশি। পড়শি রাজ্য অরুণাচলপ্রদেশ ও মেঘালয় থেকেও ওই রোগের খবর আসছে। ভুটান সীমান্ত বরাবর বড়োভূমিতেও রোগের প্রকোপ বেশি। দ্রুত নামনি অসমেও তা ছড়াচ্ছে।

চিকিৎসকরা জানান, বর্ষায় জমা জলে জাপানি এনসেফ্যালাইটিসের জীবাণুবাহী মশার বংশবৃদ্ধি বেশি হয়। রোগ ছড়ায় তখনই। তাই, যে সময় সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে না তখনই প্রতিষেধক ব্যবহার করা উচিত। প্রতিষেধক শরীরে প্রবেশ করার পরে কিছু দিন লাগে তা কার্যকর হতে। তাই শীতকালে প্রতিষেধক দিয়ে দেওয়া উচিত। কিন্তু স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, প্রতিষেধকের অভাব ও মানুষের উদাসীনতার জেরে এ বছর শীতকালে তেমন ভাবে প্রতিষেধক দেওয়া হয়নি। তবে উজানি অসমের বিভিন্ন জেলায় মশা মারতে ‘ফগিং’ করা শুরু হয়েছে। সকলকে মশারি ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

যে হেতু এই রোগের কোনও চিকিৎসা নেই এবং সংক্রমণের ফলে মৃত্যু বা প্রতিবন্ধকতা হতে পারে, তাই প্রতিষেধকই জাপানিজ এনসেফ্যালাইটিসের বিরুদ্ধে লড়ার একমাত্র হাতিয়ার। ওষুধ সরবরাহকারী সংগঠনগুলির তরফে জানানো হয়, উত্তর-পূর্বে অসম ছাড়া অরুণাচলপ্রদেশের পাসিঘাট, মেঘালয়ের তুরার দিকে প্রতিষেধকের চাহিদা বেশি।

ওই প্রতিষেধক চিন থেকে আমদানি করে ভারত। কিন্তু চিন প্রতিষেধক কম পাঠাচ্ছে, নাকি উত্তর-পূর্বে প্রতিষেধক কম পাঠানো হচ্ছে— তা নিয়ে সরবরাহকারীরাও নিশ্চিত নন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন