দীপা জয়কুমার। ছবি: সংগৃহীত।
পিসির পথেই হাঁটা শুরু করলেন ভাইজি। তাঁর মতে, রাজনীতির ময়দানে পা দেওয়ার এটাই একেবারে উপযুক্ত সময়।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই তামিলনাড়ুর বিভিন্ন জায়গায় তাঁর নামে পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন চোখে পড়ছিল। একেবারে পিসির ভঙ্গিমায় দাঁড়িয়ে। কাঁধ ঘুরিয়ে সামনের দিকে টেনে রাখা শাড়ির আঁচলটাও একই কায়দায় ধরা। ডান হাতটা তুলে ধরার মধ্যেও কোথাও একটা পিসির অনুকরণ লুকিয়ে রয়েছে। আর তাতেই জল্পনা আরও বেড়ে গিয়েছিল কয়েক দিন ধরে। তবে কি তিনি রাজনীতিতেই আসছেন? মঙ্গলবার সমস্ত জল্পনার অবসান ঘটালেন তিনি। তামিলনাড়ুর সদ্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতার একমাত্র ভাইজি নিজের রাজনৈতিক উত্তরাধিকার দাবি করে জানিয়ে দিলেন, রাজনীতির রাস্তায় হাঁটা শুরু করলেন তিনি। এ দিন দীপা জয়কুমার বলেন, ‘‘আজ থেকে জীবনের নয়া এক সফর শুরু হল। রাজনৈতিক সেই সফর শুরু করার এটাই উপযুক্ত সময়।’’
আরও পড়ুন
জোটের ঘোষণা সম্ভবত কালই, প্রচারে অখিলেশ-রাহুল-ডিম্পল-প্রিয়ঙ্কা
তিনি কি এআইডিএমকে-তে যোগ দেবেন? নাকি নতুন কোনও দল গড়ছেন লন্ডনে পড়াশোনা করা বছর বিয়াল্লিশের দীপা?
স্মিত হেসে রাজনীতিতে আনকোরা দীপা বুঝিয়ে দিয়েছেন, মোক্ষম এই তিরটি তিনি সযত্নে গুছিয়ে রাখছেন অন্য দিন ছোড়ার জন্য। আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি জয়ললিতার জন্মদিন। সে দিন তিনি পরবর্তী পদক্ষেপের কথা জানিয়ে দেবেন। ঘটনাচক্রে যে দিন দীপা এই ঘোষণা করলেন, সে দিন এআইডিএমকে গোটা রাজ্য জুড়ে ঘটা করে এমজি রামচন্দ্রনের (এমজিআর) জন্মশতবর্ষ পালন করছে। রাজনীতিতে তো বটেই, জীবনের নানা ক্ষেত্রে যে এমজিআর ছিলেন জয়ললিতার মেন্টর। পাশাপাশি, তিনি ছিলেন এআইডিএমকে-র প্রতিষ্ঠাতাও।
হাসপাতালে দীর্ঘ দিন থাকার পর গত ৫ ডিসেম্বর মারা গিয়েছিলেন জয়ললিতা। তার পর রাজ্য রাজনীতিতে যথেষ্ট দাপটের সঙ্গে উঠে এসেছে জয়ললিতার দীর্ঘ দিনের ছায়াসঙ্গী শশীকলা নটরাজনের নাম। জয়ললিতা মারা যাওয়ার পরেই শশিকলার বিরুদ্ধে এক রাশ ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন দীপা। অভিযোগ করে তিনি বলেছিলেন, ‘‘পিসির শেষকৃত্যে শশিকলা আমাকে থাকতে দেননি। আমি রাজনীতিতে এলে আমার জনপ্রিয়তা বেড়ে যাবে, শশিকলা সব সময় এই ভয় পান। আমার পিছনে জনসমর্থন রয়েছে। শশিকলাকে ভোটে জিতে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করতে হবে।’’ দীপার এই কথার পরেই প্রশ্ন ওঠে, তবে কি রাজনীতিতে যোগ দিতে চলেছেন দীপা? সে প্রশ্নের উত্তর এ দিন মিলেছে। এডিএমকে-র অন্য নেতাদের সম্পর্কেও খুব একটা খুশি নন দীপা। তাঁর দাবি, ‘‘আমার সঙ্গে নেত্রীর খুবই ঘনিষ্ঠতা ছিল। কিন্তু এডিএমকে নেতারা আমাকে হাসপাতালে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে দেননি।’’ যদিও এডিএমকে নেতা সিআর সরস্বতী বলেছেন, ‘‘জয়ললিতা কখনও দীপার ঘনিষ্ঠ ছিলেন না। এমনকী দীপার বিয়েতেও জয়া যাননি।’’
আরও পড়ুন
সপ্তাহে ২৪, এটিএম থেকে মিলবে দিনে ১০ হাজার
শশীকলা বা অন্য কোনও নেতাকে তিনি যে পিসির জায়গায় দেখতে চান না, তা এ দিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন দীপা। তিনি বলেন, ‘‘জয়ললিতার জায়গায় আমি অন্য কোনও ব্যক্তিকে মেনে নিতে পারব না।’’ দলের ক্যাডার এবং তাঁর সমর্থকদের সঙ্গে আলোচনা করেই পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। যদিও এআইডিএমকে জানিয়ে দিয়েছে, দলে দীপার কোনও জায়গা নেই। এক নেতার কথায়, ‘‘দল আনুষ্ঠানিক ভাবে শশীকলাকে নেত্রী হিসাবে বেছে নিয়েছে। এবং প্রৃত দলীয় সমর্থকেরা চিন্নামার সঙ্গেই আছেন।’’