আরা আদালতে বিস্ফোরণ-কাণ্ডে গ্রেফতার জেডিইউ বিধায়ক

আদালতে বিস্ফোরণ এবং খুনের অভিযোগে শাসক দল জেডিইউ-র বিধায়ক নরেন্দ্র কুমার পাণ্ডে ওরফে সুনীলকে গ্রেফতার করল বিহার পুলিশ। রীতিমতো ফিল্মি কায়দায় গ্রেফতার করা হয়েছে সুনীলকে। আজ সকালে প্রথমে ফোন করে ভোজপুরের এসপি অফিসে ডাকেন নবীনচন্দ্র ঝা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পটনা শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৫ ০৩:০৩
Share:

আদালতে বিস্ফোরণ এবং খুনের অভিযোগে শাসক দল জেডিইউ-র বিধায়ক নরেন্দ্র কুমার পাণ্ডে ওরফে সুনীলকে গ্রেফতার করল বিহার পুলিশ। রীতিমতো ফিল্মি কায়দায় গ্রেফতার করা হয়েছে সুনীলকে। আজ সকালে প্রথমে ফোন করে ভোজপুরের এসপি অফিসে ডাকেন নবীনচন্দ্র ঝা। সেখানেই তাঁকে গ্রেফতার করে টাউন থানায় স্থানান্তরিত করা হয়। নেতার গ্রেফতারের খবর পেয়ে বিক্ষোভ দেখান সমর্থকেরা। পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কিও হয়। তবে তাতে খুব একটা লাভ হয়নি। আদালতে সুনীল পাণ্ডেকে তোলা হলে বিচারক ১১ দিন জেল হেফাজতে পাঠিয়েছেন। পুলিশ সুপার নবীনচন্দ্র ঝা বলেন, ‘‘বিভিন্ন থানায় সুনীলের বিরুদ্ধে হওয়া অভিযোগ একত্রিত করে তদন্ত হচ্ছে। চার্জশিট দেওয়ার সময়ে যাতে কোনও ফাঁক না থাকে তা দেখা হচ্ছে।’’

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৩ জানুয়ারি আরা জেলা আদালতে বিস্ফোরণ হয়। ঘটনায় এক পুলিশ কর্মী-সহ কয়েক জন মারা যান। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে বিস্ফোরণের পিছনে রয়েছে সচ্চিদানন্দ শর্মা ওরফে লম্বু। বিস্ফোরণের পরেই সে আদালত চত্ত্বর থেকে পালিয়ে যায়। সপ্তাহ খানেক আগে দিল্লি পুলিশ তাঁকে আইএসবিটি এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। বেশ কয়েকটি খুন, অপহরণ এবং বিস্ফোরণের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে লম্বুর বিরুদ্ধে। দিল্লি পুলিশ লম্বুকে বিহার পুলিশের হাতে তুলে দেয়। বিস্ফোরণের বিষয়ে জেরা করতেই পুলিশকে চাঞ্চল্যকর তথ্য দেয় লম্বু। সে জানায়, উত্তরপ্রদেশের মাফিয়া মুখতার আনসারিকে খুন করার জন্য তাঁকে সুপারি দিয়েছিলেন বিধায়ক সুনীল পাণ্ডে। সেই সুপারি পাওয়ার পরেই জেলে বসেই আইইডি বোমা তৈরি করে সে। আদালত চত্ত্বরে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি ছিল তাঁর। কিন্তু বিস্ফোরণ বড় মাপের হওয়ায় বেশ কয়েক জন মারা যায়। বিস্ফোরণে তাঁর বান্ধবীরও মৃত্যু হয়। লম্বুর বয়ান পাওয়ার পরে তদন্ত নামে পুলিশ। কয়েক দিন আগে রাজ্য পুলিশের এডিজি (হেড কোয়ার্টার) সুনীল কুমার জানিয়ে দেন, সুনীল পাণ্ডের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এরপর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছিলেন সুনীল। দিল্লিতে লম্বুর থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাও সুনীল পাণ্ডে করেছিলেন বলে দাবি পুলিশের।

তবে আদালতে তোলার আগে সাংবাদিকদের কাছে সুনীল পাণ্ডে বলেন, ‘‘রীতিমতো ষড়যন্ত্র করে আমাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর আগে নির্বাচনে আমার ভাইকে হারানো হয়েছে। অনন্ত সিংহকে গ্রেফতার করার পরই আমাকে ফাঁসানোর চক্রান্ত তৈরি হয়ে গিয়েছিল।’’ তবে কে বা কারা তাঁকে ফাঁসানোর ষড়যন্ত্র করছে তা তিনি বলেননি। তবে পুলিশের এই তৎপরতার পিছনেও রাজনীতি রয়েছে বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের। তাঁদের বক্তব্য, বেশ কয়েক মাস ধরেই রামবিলাস পাশোয়ানের দল লোকজনশক্তি পার্টির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন সুনীল। আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগেই তাঁর রামবিলাসের দলের মাধ্যমে এনডিএ-তে যোদ দেওয়ার কথা প্রায় পাকা হয়ে গিয়েছিল। আগে থেকে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি উল্টে মদত দিয়েছিল। কিন্তু জেডিইউ ছাড়ার সম্ভবনা প্রবল হতেই গ্রেফতার করা হল। এর আগে মোকামার বাহুবলি জেডিইউ বিধায়ক অনন্ত সিংহকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধেও একাধিক খুন, অপহরণ, বেআইনি অস্ত্র রাখার অভিযোগ রয়েছে।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন