‘যা আছে সব তো নিয়েছো। আমাকে মেরে ফেলো না প্লিজ! বাড়িতে বয়স্ক মা, বাবাকে আমি ছাড়া দেখার কেউ নেই। কেউ নেই। বিশ্বাস করো! আমাকে মেরো না।’ তিন ডাকাতের কাছে হাত জোড় করে কাঁদতে কাঁদতে মিনতি করেছিল মেয়েটা। কেউ শোনেনি। নৃশংসভাবে মেরে ফেলেছিল ২৮ বছরের কল সেন্টার এক্সিকিউটিভ জিগীষা ঘোষকে। ২০০৯ সালে দিল্লির সেই ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হল তিনজন। সেই তিন ঘাতকেরই একজন পুলিশের কাছে স্বীকার করেছিল মেরে ফেলার আগের মুহূর্তে জিগীষার সেই আর্তির কথা।
দক্ষিণ দিল্লির একটি অ্যাপার্টমেন্টে থাকতেন জিগীশা। দায়িত্বপূর্ণ পদে চাকরি করতেন নয়ডার এক কল সেন্টারে। রোজকার মতো সে দিনও মাঝরাতে অফিসের গাড়ি নামিয়ে দিয়ে গিয়েছিল অ্যাপার্টমেন্টের সামনেই। গেটে ঢোকার আগেই বন্দুক ঠেকিয়ে নিজেদের জিগীষাকে নিজেদের গাড়িতে তুলে নেয় তিন দুষ্কৃতী রবি কপূর, অমিত শুক্ল আর বলজিত্ সিংহ মালিক। এটিএম কার্ড কেড়ে নেওয়া হয়। বলিয়ে নেওয়া হয় এটিএম পিনকোডও। এর পর সেই গাড়িতেই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল দিল্লি শহরের বাইরে ফাঁকা জায়গায়। খুন করে সেখানেই ঝোপের মধ্যে ফেলে রেখে এসেছিল দেহ।
আরও পড়ুন: মদ খেয়ে নীতীশকে তুলোধনা, গ্রেফতার নীতীশের দলেরই নেতা
এটিএম কাউন্টারে জিগীষার কার্ড দিয়ে টাকা তোলার সময়, এবং শপিং কমপ্লেক্সে কেনাকাটা করার সময় সিসিটিভিতে ধরা ছিল তিনজনেরই ছবি। সেই সূত্রেই পুলিশ ধরে ফেলে অপরাধীদের। ওটাই এই দলটার প্রথম অপরাধ ছিল না। পুলিশ জানতে পারে জিগীষা হত্যার মাস ছয়েক আগে দিল্লির এক মহিলা টেলিভিশন নিউজ প্রডিউসারকে গুলি করেছিল এরাই। সেবারও উদ্দেশ্য ছিল ডাকাতি।
২০ অগস্ট দোষীদের শাস্তি ঘোষণা করবে আদালত। জিগীষার বৃদ্ধা মা সবিতা ঘোষের আর্জি, মেয়েকে আর ফিরে পাবো না। কিন্তু অমন করে যারা মেয়েটাকে মেরেছিল, তাদের যেন ফাঁসি হয়।