জ্যাকেট লাল, তাই হামলাকারী নাকি বামপন্থী!

সুমিতকুমার সিংহ নামে এক সাংবাদিক গত কাল প্রথমে টুইটারে ওই মারধরের ভিডিয়োটি শেয়ার করে দাবি করেন, বামপন্থী ছাত্ররাই প্রথমে এবিভিপি সদস্যদের মারধর করে গোলমাল বাধানোর চেষ্টা করেছিলেন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২০ ০২:৫৭
Share:

হামলার পরে সব লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়ে আছে। ফাইল চিত্র।

লাল জ্যাকেট পরা এক যুবক মারধর করছেন সবুজ জ্যাকেটকে। আশপাশের কয়েক জন লাল জ্যাকেটকে সরিয়ে দিতে চাইলেও সে সবে আমল না দিয়ে তিনি আবার চড়াও হচ্ছেন সবুজ জ্যাকেট পরা যুবকের উপরে। ঘটনাস্থল জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস। শীতকালীন সিমেস্টারের জন্য ভর্তি প্রক্রিয়া চলছিল তখন। হস্টেল ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে যে ভর্তি প্রক্রিয়া বয়কট করছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ। যে হেতু হামলাকারী সে দিন লাল রঙের পোশাক পরেছিলেন, তাই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার শুরু হয় বাম ছাত্র সংগঠনের সদস্যরাই আগে মারধর শুরু করেন এবিভিপি-র ছাত্রদের। যার পরে রবিবার জেএনইউয়ের হস্টেলে তাণ্ডব চালায় মুখোশধারী দুষ্কৃতীরা।

Advertisement

সুমিতকুমার সিংহ নামে এক সাংবাদিক গত কাল প্রথমে টুইটারে ওই মারধরের ভিডিয়োটি শেয়ার করে দাবি করেন, বামপন্থী ছাত্ররাই প্রথমে এবিভিপি সদস্যদের মারধর করে গোলমাল বাধানোর চেষ্টা করেছিলেন। যাতে ভর্তি প্রক্রিয়া ভেস্তে যায়। পরে ভিডিয়োটি শেয়ার করা হয় প্রসার ভারতীর টুইটার হ্যান্ডল থেকেও। তা ছড়িয়ে পরে সোশ্যাল মিডিয়ায়। বিজেপি সমর্থক এবং এবিভিপি-র সদস্যেরা দাবি করতে থাকেন, বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা প্রথমে মারধর করে গোলমাল বাধায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। হিমাচলপ্রদেশের বিজেপির আইটি সেলের প্রধান থেকে শুরু করে বিজেপির জাতীয় আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্যও সোশ্যাল মিডিয়ায় একই প্রচার শুরু করেন। ভিডিয়োটি রিটুইট করেন খোদ জেএনইউয়ের উপাচার্য মামিডালা জগদীশ কুমারও।

কিন্তু আজ একটি সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়, লাল জ্যাকেট পরা হামলাকারী বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের সদস্য নন। তাঁর নাম সর্বেন্দ্র। স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের (এসআইএস) তৃতীয় বর্ষের গবেষক সর্বেন্দ্র এবিভিপি-র সদস্য। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর পোস্টে দেখা গিয়েছে, এবিভিপির নানা কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন তিনি। সেই সব স্ক্রিনশট তুলে দিয়েছে ওই সংবাদমাধ্যম। একটি ছবিতে এসআইএসের নবনিযুক্ত ডিনের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে সর্বেন্দ্রকে। নতুন ডিনকে অভিনন্দন জানিয়ে পোস্টটি শেয়ার করেছিলেন সর্বেন্দ্র নিজেই। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যে তাঁর ভালই খাতির, তা-ও বুঝিয়ে দিয়েছে ওই সংবাদমাধ্যম।

Advertisement

এমনকি যে ছাত্রটি মার খেয়েছেন, সেই সবুজ জ্যাকেট পরা যুবকও এবিভিপি-র সদস্য নন। ছাত্র সংগঠন আইসা-র দাবি, প্রহৃত ছাত্রের নাম গৌরব পাণ্ডে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই সংগঠনের দাবি, ছাত্রটি আইসার সদস্য। তাঁর উপরেই সে দিন চড়াও হন সর্বেন্দ্র। গৌরব নিজেও জানিয়েছেন, সর্বেন্দ্রই তাঁকে মেরেছেন। এবং অভিযুক্ত ছাত্রটি এবিভিপির সক্রিয় কর্মী। এই খবর সামনে আসার পরেই সোশ্যাল মিডিয়ার সমস্ত অ্যাকাউন্ট মুছে দিয়েছেন সর্বেন্দ্র। উত্তর দেননি সাংবাদিকদের ফোন-এসএমএসের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন