ফাইল চিত্র।
ভোর পাঁচটা। হঠাৎই এক শিক্ষকের নেতৃত্বে প্রায় ২০-২৫ জন নিরাপত্তারক্ষী হানা দিয়েছিলেন জেএনইউ বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে। ঘটনায় ক্ষুব্ধ ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ, তাঁদের অসম্মান করতেই এই কাজ করিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
গত ৫ অক্টোবরের ওই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, এটা নিয়মমাফিক পরিদর্শন। জেএনইউএসইউ সাধারণ সম্পাদক শতরূপা চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘ভোর পাঁচটার সময় হানা দেয় নিরাপত্তারক্ষীরা। জেএনইউয়ের হস্টেল ক্যাম্পাস সব সময়ই নিজেদের সম্মান বজায় রেখে এসেছে। পারস্পরিক বিশ্বাস ও শ্রদ্ধার পরিবেশ রয়েছে এখানে। কিন্তু এ ভাবে হানা দিয়ে ঠিক তার উল্টোটাই প্রমাণ করা হল। রক্ষীরা দরজায় সামান্য আওয়াজ করে ঢোকার প্রয়োজনও বোধ করেনি।’’ তাঁর অভিযোগ, মেয়েরা অনেকেই ঘুমোচ্ছিলেন। না জানিয়ে তাঁদের ঘরে ঢুকে পড়া হয়। আলমারির দরজা কেন খুলে রাখা, তার জন্যেও জরিমানা করা হয়েছে।
উপাচার্য এম জগদীশ কুমার বা রেজিস্ট্রার প্রমোদ কুমার, কেউই এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। যাঁর নেতৃত্বে হানা দেওয়া হয়েছিল, সেই শিক্ষক বুদ্ধ সিংহ অবশ্য ঘটনার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন।
এক ছাত্রনেতা দুগ্গিরালা শ্রীকৃষ্ণের অভিযোগ, জেএনইউ সম্পর্কের মানুষের মনে বিতৃষ্ণা তৈরি করতেই এই কাজ করা হচ্ছে। তিনি মনে করান, গত বছর বলা হয়েছিল, জেএনইউ ক্যাম্পাসে প্রতি দিন ৩ হাজার ব্যবহৃত কন্ডোম পাওয়া যায়। শ্রীকৃষ্ণের কথায়, ‘‘ছাত্রীদের তো যৌনকর্মী বলেও আক্রমণ করেছিল আরএসএস-বিজেপি...।’’
এ বারও একটি সংবাদপত্র খবর করেছে, ‘‘ছেলেদের ঘরে মেয়েরা!’’ নিয়ম অনু, ছেলেদের ও মেয়েদের হস্টেল পৃথক। কেউ অন্য কোথাও রাত্রিবাস করতে পারবে না। রাত ১১টার মধ্যে নিজেদের হস্টেলে ফিরতে হবে। ছেলেরা মেয়েদের হস্টেলে ঢুকতে পারবে না। মেয়েদের জন্য নিয়ম অবশ্য একটু লঘু— ছেলেদের খাওয়ার ঘরে প্রবেশ নিষেধ তাঁদের। যে কোনও সময়ে রক্ষীরা ছাত্রছাত্রীদের পরিচয়পত্র খতিয়ে দেখতে পারেন। বহিরাগত কেউ হস্টেলে রয়েছেন কি না, সে দিকেও নজর রাখবেন তাঁরা। যদিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছাত্রছাত্রীদের দাবি— ‘‘যেখানে আরও বেশি করে হস্টেল তৈরির কাজ আটকে রয়েছে, সেখানে এই সব বিষয় নিয়ে হইচই করছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।’’ এই খবর কী ভাবে সংবাদমাধ্যমে গেল, কর্তৃপক্ষের কাছে সেই ব্যাখ্যাও চেয়েছেন পড়ুয়ারা।