পদ গ্রহণে নারাজ বিচারপতি সিক্রি, প্রশ্নের মুখে কেন্দ্র

সিবিআইয়ের প্রাক্তন অধিকর্তা অলোক বর্মাকে সরানোর বিষয়ে সরকারকে সমর্থন করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের দ্বিতীয় প্রবীণতম বিচারপতি এ কে সিক্রি। তার পরেই সামনে এল নরেন্দ্র মোদী সরকারের উদ্যোগে এক আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনালে তাঁর নিয়োগের বিষয়টি।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:৪৬
Share:

বিচারপতি এ কে সিক্রি

সিবিআইয়ের প্রাক্তন অধিকর্তা অলোক বর্মাকে সরানোর বিষয়ে সরকারকে সমর্থন করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের দ্বিতীয় প্রবীণতম বিচারপতি এ কে সিক্রি। তার পরেই সামনে এল নরেন্দ্র মোদী সরকারের উদ্যোগে এক আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনালে তাঁর নিয়োগের বিষয়টি। বিতর্কের জেরে সেই পদ গ্রহণে অস্বীকার করেছেন বিচারপতি। কিন্তু কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধীর অভিযোগ, এ থেকেই বোঝা যাচ্ছে একের পর এক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করছেন মোদী। কংগ্রেস নেতাদের মতে, সরকারের কাজকর্মের ফলে বিচার বিভাগের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

Advertisement

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিয়োগ কমিটির বৈঠকে সিবিআইয়ের অধিকর্তা পদ থেকে অলোক বর্মাকে সরানো নিয়ে সরকারের পক্ষে ভোট দেন বিচারপতি সিক্রি। ওই বৈঠকে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন তিনি। কিন্তু অলোক বর্মার ভূমিকা নিয়ে তদন্তে নজরদারির দায়িত্বে থাকা প্রাক্তন বিচারপতি এ কে পট্টনায়ক জানান, অলোকের বিষয়ে তাড়াহুড়ো করেছে সরকার। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনও প্রমাণ নেই। এ নিয়ে কংগ্রেস আসরে নামে। তাদের তরফে জানানো হয়, কমিটির বৈঠকে লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে অলোককে সরানোর বিরোধিতা করেছিলেন। বিজেপি পাল্টা প্রশ্ন তোলে, অলোকের বিরুদ্ধে প্রমাণ না থাকলে বিচারপতি সিক্রি তাঁকে সরানোর বিষয়ে সরকারকে সমর্থন করলেন কেন? ইন্দিরা জয়সিংহের মতো প্রবীণ আইনজীবীরা জানান, বিচারপতি সিক্রির শপথ নেওয়া উচিত যে তিনি ভবিষ্যতে কোনও সরকারি পদ গ্রহণ করবেন না।

এর মধ্যেই আজ প্রকাশ্যে আসে লন্ডনের ‘কমনওয়েলথ সেক্রেটারিয়েট আরবিট্রাল ট্রাইবুনাল’-এ বিচারপতি সিক্রির নিয়োগের বিষয়টি। ওই ট্রাইবুনালে কমনওয়েলথ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলি বিচার বিভাগের শীর্ষ পদে রয়েছেন বা ছিলেন এমন ‘নৈতিক উচ্চ চরিত্রসম্পন্ন’ ব্যক্তিদের নিয়োগ করে। আইন মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়, ডিসেম্বর মাসেই বিচারপতি সিক্রির সম্মতি নিয়ে তাঁকে ওই ট্রাইবুনালে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

Advertisement

আরও পড়ুন: পরিবেশ বাঁচাতে ভরসা পুরনো শাড়ি, বার্তা তিরুঅনন্তপুরমের জেলাশাসকের

এর পরেই ফের বিতর্ক শুরু হয়। বিচারপতি সিক্রি সংক্রান্ত এই খবরটি টুইট করে রাহুল গাঁধী লেখেন, ‘‘বিচারের মানদণ্ডে হস্তক্ষেপ করলে অরাজকতা শুরু হয়। রাফাল দুর্নীতি ঢাকা দিতে এই প্রধানমন্ত্রী যা খুশি তাই করতে পারেন। ধ্বংস করে দিতে পারেন সব কিছু। তিনি ভয় পাচ্ছেন। এই ভয়ই তাঁকে দুর্নীতিগ্রস্ত করে তুলছে। ধ্বংস করে দিচ্ছে সব প্রতিষ্ঠান।’’ অলোক বর্মা রাফাল দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত শুরু করতে চেয়েছিলেন বলেই তাঁকে দ্রুত সরানো হয়েছে বলে দাবি কংগ্রেসের। আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংহ টুইটারে লেখেন, ‘‘অলোক বর্মাকে নিয়ে নিয়োগ কমিটির সিদ্ধান্ত এখনই বাতিল করা উচিত। বিচারপতি সিক্রির উচিত ছিল কমিটির বৈঠকে যোগ দেওয়ার আগে এই নিয়োগের বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া। কমনওয়েলথ ট্রাইবুনালের ওই পদে উচ্চ নৈতিক চরিত্রের ব্যক্তির যোগ দেওয়ার কথা। এ ক্ষেত্রে সাংবিধানিক নৈতিকতা কোথায়?’’ সরকারি সূত্রে পাল্টা দাবি করা হয়, বিচারপতি সিক্রিই কর্নাটকে সরকার গঠন নিয়ে সঙ্কটের সময়ে কংগ্রেসের পক্ষে রায় দিয়েছিলেন।

বিতর্কের মধ্যেই বিচারপতি সিক্রি চিঠি লিখে কমনওয়েলথ ট্রাইবুনালের পদ গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement