ঝাড়খণ্ডে ন্যাশনাল গেমসের আয়োজনে আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগের তদন্তে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা দেশের অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সভাপতি সুরেশ কলমডীকে জেরা করল রাজ্য ভিজিল্যান্স দফতর।
ভিজিল্যান্সের তলব পেয়ে আজ দিল্লি থেকে রাঁচি আসেন কলমডী। দুপুর সওয়া বারোটা নাগাদ তিনি তদন্তকারী অফিসার আনন্দ যোসেফ টিগ্গার অফিসে পৌঁছন। ঘণ্টা দু’য়েক পরে ওই ঘর থেকে বের হন। অপেক্ষারত সাংবাদিকদের কলমডী শুধু বলেন, “আমি অভিযুক্ত নই। সাক্ষী হিসেবে এসেছি।” তাঁর বিরুদ্ধে নিজের পছন্দের সংস্থাকে খেলার সরঞ্জাম সরবরাহের বরাত দেওয়ার অভিযোগ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। ওই প্রশ্নে চটে যান কলমডী। দ্রুত নিজের গাড়িতে উঠে ভিজিল্যান্স দফতর থেকে চলে যান।
ভিজিল্যান্স কর্তারা জানিয়েছেন, আর্থিক কেলেঙ্কারির তদন্তে অনেককেই সাক্ষ্য দিতে ডাকা হয়। তাঁদের মধ্যেই কারও বক্তব্যে ফাঁক থাকলে, তাঁকে গ্রেফতারও করা হতে পারে। কলমডীর ক্ষেত্রেও সে সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দেওয়া হয়নি।
ভিজিল্যান্স সূত্রের খবর, কলমডীকে জেরা করতে বিশেষ প্রশ্ন-সূচি তৈরি করা হয়েছিল। তদন্তকারী এক অফিসার বলেন, “টাকা নয়ছয়ের বিষয়ে কিছু জানেন না বলেই দাবি করেছেন কলমডী। তাঁর কাছ থেকে কিছু তথ্য মিলেছে। সেগুলি যাচাই করে দেখা হবে। কয়েক জনের বিষয়ে তিনি নির্দিষ্ট কিছু কথাও জানিয়েছেন। পরে তাঁদের সবাইকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হতে পারে।”
২০১১ সালে ঝাড়খণ্ডে ‘ন্যাশনাল গেমস’ অনুষ্ঠিত হয়। তার প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল কংগ্রেসের সমর্থিত মধু কোড়ার সরকারের আমলে। তৎকালীন ক্রীড়ামন্ত্রী ছিলেন বর্তমানে তৃণমূলের প্রদেশ সভাপতি বন্ধু তিরকে। প্রতিযোগিতার জন্য প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি খেলার সরঞ্জাম কেনা হয়েছে বলে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়।
অভিযোগ উঠেছিল, প্রায় ৩৮ কোটি টাকা নয়ছয় করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে ২০১০ সালে এ নিয়ে ভিজিল্যান্স তদন্ত শুরু করে। গত মাসে ঝাড়খণ্ড অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সচিব এস এম হাসমি ও ক্রীড়া দফতরের প্রাক্তন প্রধান সচিব পি সি মিশ্রকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁদের জেরার সময় সুরেশ কলমডীর নাম সামনে আসে।
ভিজিল্যান্স সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত হাসমি ও মিশ্র তদন্তকারীদের জানিয়েছিলেন, কলমডীই তাঁর পছন্দের একটি সংস্থাকে খেলার সরঞ্জাম সরবরাহের বরাত দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন।