এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করেছিল কামালউদ্দিন। এত দিন কামাল যা বলত তাই ভয়ে-আতঙ্কে শিরধার্য করে নিতেন গ্রামের মানুষ। কেউ কেউ লুকিয়ে-চুরিয়ে পুলিশকে জানিয়েও ছিল। কিন্তু কোনও সুফল পাননি করিমগঞ্জের রামকৃষ্ণনগর থানার রংপুর এলাকার লোকজন। সোমবার রাতে যখন জনৈক রশিদ আহমদের বাড়িতে ডাকাতি করতে গিয়েছিল, সে সময় স্থানীয় জনতার হাতে ধরা পড়ে যায় সে। মুহূর্তে ভয় কেটে জন্ম নিয়েছিল ক্রোধ। স্রেফ পিটিয়ে মেরেই দিন কামালউদ্দিনকে।
দশ বছর আগে রংপুর গ্রামে সিমত ডাকাতকে যে ভাবে গণপ্রহারে হত্যা করা হয়েছিল, কার্যত তারই পুনরাবৃত্তি ঘটল কামালের ক্ষেত্রেও। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, সোমবার রাত একটা নাগাদ আব্দুর রহমানের দোকানে ডাকাতি করে ৬-৭ জনের একটি দল। সেখানে ডাকাতি শেষ করে দোকান মালিকের বাড়িতে প্রবেশ করে কামালের নেতৃত্বে আসা অন্যান্য ডাকাতরা। ডাকাতি করে যখন বাড়ি থেকে বেরোচ্ছিল সে সময় ‘ডাকাত পড়েছে’ বলে বাড়ির লোকজন চিত্কার শুরু করে। ডাকাত এসেছে শুনে গ্রামের লোক জড়ো হয়ে যায়। কামালকে ধরে ফেলে তারা। তবে অন্য ডাকাতরা পালিয়ে যায়। প্রহারের সঙ্গে সঙ্গে ডাকাতদের সঙ্গে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কামালকে আঘাত করা হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যু হয় তার। রাত তিনটে নাগাদ রামকৃষ্ণনগর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে।
স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, কামালের দাপটে সাধারণ লোক স্বস্তিতে থাকতে পারত না। জোর করে টাকা পয়সা ছিনিয়ে নেওয়া ছিল নিত্যদিনের কাজ। তার বিরুদ্ধে জাল নোট পাচার, অবৈধ অস্ত্র নির্মাণ ছাড়াও বিভিন্ন অসামাজিক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ সব কিছু জানলেও তেমন কোনও ব্যবস্থা কখনও নেয়নি। কিন্তু সোমবার রাতে জনগণের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায়। তবে কামালের স্ত্রীর বক্তব্য, আব্দুর রহমানের দোকানে কেনাকাটা করতে গিয়ে সেখানে বচসার সূত্রপাত হয়। এবং সেই বচসার জেরেই তার স্বামীকে খুন করা হয়েছে বলে তিনি পুলিশের কাছে পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।