বিরোধীদের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী সরকারের রাজনৈতিক সঙ্ঘাতের মধ্যেই কেন্দ্রের আধার আইনকে নিজেদের রাজ্যে অনুমোদন দিল কর্নাটকের কংগ্রেস শাসিত সরকার।
বিভিন্ন ধরনের প্রকল্পে সুবিধাভোগীদের কাছে সরকারি ভর্তুকি পৌঁছে দিতে আধার বিল সংসদে পাশ করিয়েছে মোদী সরকার। কিন্তু রাজ্যসভাকে পাশ কাটিয়ে অর্থবিল হিসেবে একে লোকসভায় নিয়ে আসার সিদ্ধান্তে প্রশ্ন তুলেছিল কংগ্রেস। অন্য বিরোধী দলগুলিও সেই প্রতিবাদে সামিল হয়। কিন্তু কেন্দ্রের সেই আধার বিলটির আদলেই রাজ্যের একটি বিলে এ বার ছাড়পত্র দিল কর্নাটক মন্ত্রিসভা। এর ফলে সে রাজ্যে সরকারি ভর্তুকি পেতে আধার বাধ্যতামূলক হচ্ছে। রাজ্যের আইনমন্ত্রী টি বি জয়চন্দ্র সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘কেন্দ্র ইতিমধ্যেই আধার আইন করেছে। আমরাও এই সংক্রান্ত বিল আনছি যাতে সরকারি প্রকল্পের সুবিধা সঠিক লোকের কাছে পৌঁছয়।’’ রাজ্যের আইনসভা বাজেট অধিবেশনে এই বিল পাশ করাবে।
কী কারণে মোদী সরকারের বিলে সুর মেলাল কংগ্রেস শাসিত একটি রাজ্য, তা নিয়ে কৌতূহল রয়েছে বিভিন্ন মহলে। তবে কংগ্রেসের এক নেতার ব্যাখ্যা, দল কখনওই সঠিক সুবিধাভোগীর কাছে ভর্তুকি পৌঁছে দেওয়ার জন্য আধার ব্যবহারে আপত্তি করেনি। বরং মোদীর অনেক আগেই আধার নিয়ে মনমোহন সিংহ সরকার অনেক পদক্ষেপ করেছে। তবে কংগ্রেসের আপত্তি, মোদী আধারের ক্ষেত্রকে অনেক বেশি বাড়িয়ে দিতে চাইছেন। যেখানে সরকার ভর্তুকি দেয় না— অর্থাৎ মোবাইল পরিষেবার মতো বিষয়গুলির সঙ্গে আধার জোড়া নিয়েও জোড়াজুড়ি করছেন তিনি। কংগ্রেস একে মেনে নিতে পারছে না। তবে কর্নাটকের ক্ষেত্রে ভর্তুকি পৌঁছে দিতেই আধারের প্রয়োজনীয়তার কথা ভাবা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টে আধার মামলা এখনও ঝুলে রয়েছে। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চের সামনে আধারের বৈধতা সংক্রান্ত মামলার চূড়ান্ত শুনানি শুরু হবে ১৭ জানুয়ারি। এর আগেই যদিও ব্যক্তি পরিসরের অধিকারকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে শীর্ষ আদালত। এখন আধারের সঙ্গে গোপনীয়তা ভঙ্গের আশঙ্কা জুড়ে যে আর্জিগুলি কোর্টের সামনে এসেছে, তা নিয়ে ফয়সালা শোনাবে আদালত। আধার নিয়ে মোদী সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের ভবিষ্যৎও এই মামলার সঙ্গেই জুড়ে রয়েছে। আর এর মধ্যেই এল কর্নাটকের এমন সিদ্ধান্ত।
তবে শুধু কর্নাটকই নয়, কেরলের সিপিএম নেতৃত্বাধীন বাম গণতান্ত্রিক জোট সরকারও রাজ্যে আধার নিয়ে পদক্ষেপ করতে পিছিয়ে আসছে না। কেরলের জেলগুলির বন্দিদের জন্য সম্প্রতি আধার বাধ্যতামূলক করেছে রাজ্য সরকার। রাজ্যের কারা দফতর এ নিয়ে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়েছে।