সিবিআই হানার দশ দিন পরে মুখ খুললেন পি চিদম্বরম। তদন্তের নিশানা তাঁর দিকে যেতে দেখে ছেলে কার্তি ও নিজেকে নির্দোষ দাবি করে সবিস্তার যুক্তি তুলে ধরলেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী। বিজেপি অবশ্য বলছে, ওই বিবৃতিতেই রয়েছে দোষ কবুলের সূত্র।
শিনা বরা হত্যাকাণ্ডে তদন্ত করতে গিয়ে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা জানতে পারে, প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগে ছাড়পত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি বেসরকারি মিডিয়া সংস্থাকে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক সুবিধা পাইয়ে দিয়েছিল। সেই সংস্থার সঙ্গে যোগ ছিল কার্তির। আর চিদম্বরম ছিলেন অর্থমন্ত্রী। আজ এক দীর্ঘ বিবৃতিতে চিদম্বরম বলেন, ‘‘যে এফআইআর করা হয়েছে তাতে স্পষ্ট, আমিই হলাম নিশানা। যদিও এফআইআরে আমার নাম নেই।’’
সিবিআই হানার পরেই লন্ডনে পাড়ি দিয়েছেন কার্তি। সেখান থেকেই আজ চিদম্বরমের বিবৃতি তিনি টুইটারে পোস্ট করেন। চিদম্বরম তাঁর বিবৃতিতে উল্লেখ করেছেন, বিদেশি লগ্নিতে অর্থমন্ত্রী ছাড়পত্র দেন সকলের শেষে। তার আগে বিদেশি বিনিয়োগ প্রসার বোর্ড (এফআইপিবি)-এ ছ’টি মন্ত্রকের সচিব তাতে অনুমোদন দেন। এর পরে মন্ত্রকের জুনিয়র অফিসার ও অতিরিক্ত সচিবের ধাপ পেরিয়ে ফাইল যায় অর্থমন্ত্রীর টেবিলে। ওই সময়ে এফআইপিবি-র নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন ডি সুব্বারাও, যিনি পরে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর হন। পরে ছিলেন অশোক চাওলা, যিনি পরে কম্পিটিশন কমিশনের চেয়ারম্যান হয়েছেন। চিদম্বরমের দাবি, যাঁরা তাঁর সঙ্গে কাজ করেছেন, তাঁরা জানেন কোনও প্রভাব তিনি খাটাতেন না। আর তাঁর ছেলে কার্তির পক্ষে সম্ভব নয়, এই ছ’জন সচিবের উপরে প্রভাব খাটানো। তা ছাড়া, কোনও সচিবের সঙ্গে দেখাও করেননি কার্তি। এরই পাশাপাশি ছেলেকে চিদম্বরমের পরামর্শ, তিনি যেন তদন্তকারীদের সঙ্গে সহযোগিতা করেন।
বিজেপি মনে করছে, চিদম্বরমের বিবৃতিতেই তাঁর দোষ কবুলের সূত্র আছে। দলের এক নেতা বলেন, ‘‘এক, চিদম্বরম দশ লক্ষ টাকা লেনদেনের কথা অস্বীকার করেননি। শুধু বলেছেন, তাতে কর দেওয়া হয়েছে। দুই, অভিযুক্ত সংস্থার সঙ্গে কোনও যোগ না থাকার কথা বললেও ‘ব্যবসায়িক বন্ধুত্বের’ কথা অস্বীকার করেননি। শুধুমাত্র কয়েক জন প্রাক্তন আমলার নাম ভাসিয়ে তিনি নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সত্য কোনও ভাবেই ধামাচাপা দেওয়া যাবে না।’’