কার্ফুতে থমথমে শ্রীনগরও। সোমবার। ছবি: এএফপি।
উপত্যকায় শান্তি ফেরাতে বিচ্ছিন্নতবাদীদের কাছেও আবেদন জানালেন জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি। যে তরুণরা রোজ পথে নেমে পাথর ছুড়ছে পুলিশের দিকে, তাঁদের অভিভাবকদের প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বান, সন্তানদের নিয়ন্ত্রণ করুন। কেন্দ্রীয় সরকার সব রকম ভাবে জম্মু-কাশ্মীরের পাশে রয়েছে বলে মেহবুবাকে আশ্বাস দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানিও পুলিশের উপর হামলা থেকে বিরত থাকতে বলেছেন উপত্যকার মানুষকে।
সেনা অভিযানে হিজবুল কম্যান্ডার বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর থেকে উত্তাল দক্ষিণ কাশ্মীর। উপত্যকার ১০টি জেলাতেই কার্ফু জারি রাখা হয়েছে এখনও। জম্মু-শ্রীনগর হাইওয়ে এখনও বন্ধ। বন্ধ রেল পরিষেবাও। উত্তেজনা এবং প্ররোচনা ছড়ানো রুখতে গোটা রাজ্যেই ইন্টারনেট পরিষেবা স্তব্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাতেও থামছে না হিংসা। বুরহান ওয়ানির বাড়ি যেখানে, দক্ষিণ কাশ্মীরের সেই ত্রাল এবং আশপাশের অঞ্চলে পরিস্থিতি সবচেয়ে উত্তপ্ত। রাস্তায় নেমে রোজ পুলিশ এবং নিরাপত্তা বাহিনীকে আক্রমণ করছে বুরহানের প্রতি সহানুভূতিশীলরা। সংঘর্ষে অন্তত ৯০ জন নিরাপত্তা কর্মী জখম হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে এক জনের। অন্য দিকে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে মৃত্যু হয়েছে ২২ জনের।
মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি রবিবার রাজ্য ক্যাবিনেটের জরুরি বৈঠক ডাকেন। বৈঠক শেষে রাজ্যের বিরোধী দল এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলির সহযোগিতা চান তিনি। মেহবুবা বলেন, ‘‘বিচ্ছিন্নতাবাদীদের প্রতি, যারা পাথর ছুড়ছে, তাদের মা-বাবাদের প্রতি আমাদের আবেদন, শান্তি ফেরাতে সাহায্য করুন।’’ মুখ্যমন্ত্রী সাধারণ নাগরিকদের মৃত্যুর নিন্দা করেছেন। তিনি বলেছেন, নিরাপত্তা বাহিনী কোথাও প্রয়োজনের অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করেছে কি না, তা তদন্ত করে দেখা হবে। কাশ্মীরি তরুণদের প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বান, ‘‘যারা অশান্তি ছড়াতে চায়, তাদের হাতের পুতুল হয়ে উঠবেন না।’’
আরও পড়ুন: পাক খোঁচায় বাড়ল চাপ, কাশ্মীরে হত ২৩
বিচ্ছিন্নতাবাদী হুরিয়ত কনফারেন্সের নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানিও উপত্যকায় শান্তি ফেরানোর আহ্বান জানিয়েছেন। উপত্যকাবাসীর প্রতি গিলানির আহ্বান, পুলিশকে আক্রমণ করবেন না। রাজ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
অশান্তির জেরে অমরনাথ যাত্রা আজও স্থগিত রয়েছে। জম্মুর বেস ক্যাম্প থেকে কাউকে কাশ্মীর উপত্যকার দিকে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। ফলে ইতিমধ্যেই ১৫ হাজার অমরনাথ যাত্রী আটকে পড়েছেন। বেস ক্যাম্পে আরও তীর্থযাত্রী রোজ পৌঁছচ্ছেন। ফলে ভিড় ক্রমশ বাড়ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত অমরনাথ গুহার উদ্দেশে যাত্রা শুরু হবে না বলে রাজ্য প্রশাসন সূত্রের খবর।