সুনসান রাস্তায় প্রহরা পুলিশের। শনিবার শ্রীনগরে। ছবি: রয়টার্স।
অচলাবস্থা চলছেই। ওঠেনি কার্ফু। বিচ্ছিন্ন টেলি যোগাযোগ। কাশ্মীরে এ বার আক্রান্ত সংবাদপত্রও। শুক্রবার মধ্যরাতে বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে একাধিক উর্দু ও ইংরেজি সংবাদপত্র বাজেয়াপ্ত করেছে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, শ্রীনগরের র্যানগ্রেথ ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেটে প্রথমে অভিযান চালায় বিশাল পুলিশ ও সেনাবাহিনী। সংবাদপত্র ছাপা বন্ধ করে দেয় তারা। তিন জন সংবাদপত্র কর্মীকে গ্রেফতারও করা হয়। ইন্টারনেটে এ কথা জানিয়েছে একটি সংবাদ সংস্থাও। তাদের দাবি, কাগজ ছাপা বন্ধ করে দেয় পুলিশ। আটক করে ‘গ্রেটার কাশ্মীর’ সংবাদপত্রের বেশ কিছু প্লেট ও ‘কাশ্মীর উজমা’ সংবাদপত্রের হাজার পঞ্চাশেক কপি।
ছাপাখানা ‘কে টি প্রেস’-এর মালিক রাজা মহিউদ্দিন জানান, তাঁর কারখানায় ‘কাশ্মীর রিডার’, ‘কাশ্মীর টাইমস’, ‘কাশ্মীর অবজার্ভার’, ‘দ্য কাশ্মীর মনিটর’ ইত্যাদি একাধিক সংবাদপত্র ছাপা হয়। তাঁর দাবি, ‘‘হঠাৎই চড়াও হয় পুলিশ, বন্ধ করে দেয় প্রেস। আমাদের তিন জন কর্মীকেও গ্রেফতার করে।’’‘রাইজিং কাশ্মীর’ সংবাদপত্রের তরফে এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ভোর চারটে নাগাদ লাল চক এলাকায় পৌঁছে গিয়েছিল তাঁদের কাগজের গাড়ি। বিক্রিও শুরু হচ্ছিল সবে। হঠাৎ পুলিশ এসে সব কপি উঠিয়ে নিয়ে চলে যায়।
চলতি মাসের ১৮ তারিখে সেনা অভিযানে হিজবুল নেতা বুরহান ওয়ানি নিহত হওয়ার পর থেকেই প্রতিবাদে বেসামাল উপত্যকা। জনতা-বাহিনী সংঘর্ষে হিংসার বলি এখনও পর্যন্ত ৪১। আজই কুপওয়ারা এলাকায় পুলিশ চৌকির উপর আক্রমণ করেন এক দল প্রতিবাদী। সেনার গুলিতে নিহত হয় এক জন। সেনা সূত্রের খবর, জম্মু ও কাশ্মীরের দশটি জেলায় এখনও জারি কার্ফু। আট দিন হয়ে গেল, কাটেনি অচলাবস্থা। কুপওয়ারা ছাড়াও আরও কিছু এলাকা থেকে বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষের খবর মিলেছে।
এই পরিস্থিতিতে জম্মু ও কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন পুঞ্চ এলাকায় সেনার সংঘর্ষে নিহত হয়েছে তিন জঙ্গিও। সেনা সূত্রের খবর, গোপন সূত্রে এক দল জঙ্গির অনুপ্রবেশের খবর পায় তারা। সেই মতো অভিযান চালানো হয় বৃহস্পতিবার থেকেই। তিন দিনের তল্লাশির পরে শনিবার সেনা-জঙ্গি মুখোমুখি সংঘর্ষ শুরু হয়। দীর্ঘক্ষণ গুলির লড়াই চলার পর নিহত হয় তিন জঙ্গি।