সংযম থাকুক বিরোধেও, চান ভাগবত

সম্প্রতি জম্মুতে সঙ্ঘের প্রচারকদের নিয়ে তিন দিনের বৈঠক হয় আরএসএসের। সঙ্ঘ সূত্রের মতে, সেখানে ভাগবত বলেছেন, সরকারের সঙ্গে মতভেদ থাকতে পারে। বিভিন্ন বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা যেতেই পারে। কিন্তু তা করতে হবে সংযমের সঙ্গে। কারণ, কেন্দ্রের সরকারও সঙ্ঘ পরিবারেরই অঙ্গ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৭ ০৫:২৬
Share:

বক্তা: জৈন সম্প্রদায়ের চতুর্মাসা অনুষ্ঠানে আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত। রবিবার রাজারহাটে। —নিজস্ব চিত্র।

তুলোধোনা নয়, বরং সংযমের সঙ্গেই নরেন্দ্র মোদী সরকারের সমালোচনা করার পরামর্শ দিলেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত।

Advertisement

সম্প্রতি জম্মুতে সঙ্ঘের প্রচারকদের নিয়ে তিন দিনের বৈঠক হয় আরএসএসের। সঙ্ঘ সূত্রের মতে, সেখানে ভাগবত বলেছেন, সরকারের সঙ্গে মতভেদ থাকতে পারে। বিভিন্ন বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা যেতেই পারে। কিন্তু তা করতে হবে সংযমের সঙ্গে। কারণ, কেন্দ্রের সরকারও সঙ্ঘ পরিবারেরই অঙ্গ।

সংযমের সঙ্গে সমালোচনা কী করে করা যায়, তার একটি দৃষ্টান্ত অবশ্য সম্প্রতি খোদ ভাগবতই দিয়েছেন দিল্লিতে মোদীকে নিয়ে একটি বই প্রকাশের অনুষ্ঠানে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহও। কিন্তু অমিত খোলাখুলি মোদীর তারিফ করেছিলেন, কিন্তু ভাগবতের প্রতি কথার ভিতরে ছিল সূক্ষ্ম ভাঁজ। তিনি বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রী না হয়েও দেশের জন্য কাজ করা যায়। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে পর্যন্ত আরএসএসে মোদী যে যাত্রা, তাতেই সব থেকে বড় প্রসিদ্ধি ঘটেছে। এখন মোদীর বাইরের চমকের পিছনেও আসল ব্যক্তিকে খোঁজা উচিত।

Advertisement

সম্প্রতি সঙ্ঘের বিভিন্ন সংগঠন মোদী সরকারের বিরুদ্ধে তেড়েফুঁড়ে নেমেছে। সে স্বদেশি জাগরণ মঞ্চই হোক বা ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘ। অমরনাথ যাত্রায় সন্ত্রাসবাদী হামলার পরে বিশ্ব হিন্দু পরিষদও সরকারের বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত হয়েছে। প্রবীণ তোগাড়িয়ার মতো মোদী-বিরোধী বলে পরিচিত নেতা তো প্রধানমন্ত্রীকে শুনিয়েছেন, দেশের ভিতরে হিন্দুদের নিরাপত্তাই যখন দিতে পারছে না সরকার, তখন বিদেশে গিয়ে বড় বড় কথা বলে লাভ নেই। এ ধরনের পরিস্থিতি খোদ মোদীকে বিড়ম্বনায় ফেলছে। এই পরিস্থিতিতে রাশ ধরতে চাইলেন ভাগবত।

আরও পড়ুন: দলিত বাড়ির মেঝেতে বসে অমিতের ভোজন

সঙ্ঘের অনেক শাখা সংগঠনের নেতারা অবশ্য মনে করেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশজুড়ে যে অসন্তোষ তৈরি হচ্ছে, তাতে মুখ বুজে থাকা অসম্ভব। কারণ, বাকি সংগঠনগুলি মোদী সরকারের বিরুদ্ধে জোরালো আন্দোলনে নেমেছে। ফলে সরকারের বিরুদ্ধে মুখ না খুললে সঙ্ঘের সংগঠনের বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট হবে। এমনটাই হয়েছিল মধ্যপ্রদেশে। আরএসএসের কৃষক সংগঠনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানের সঙ্গে সমঝোতা করে আন্দোলন প্রত্যাহার করা হয়েছে। তার পর কৃষকদের বাকি সংগঠনগুলি দেশজুড়ে আন্দোলন শুরু করে। এখন বিরোধী দলগুলিও চাষিদের সেই ক্ষোভকে সামনে রেখে নিজেদের সংগঠিত করছে।

আরএসএসের এক সূত্রের মতে, সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত মোদী সরকারের কাজকর্ম নিয়ে উদ্বেগ তুলে ধরতে আপত্তি করেননি। তবে বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনা করে ভারসাম্য বজায় রাখতে বলেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন