লাতুরে ওয়াগন পৌঁছতেই জলে ঝাঁপ কেজরীর

দু’জনের সম্পর্ক আদায়-কাঁচকলায়। তবু অপ্রত্যাশিত ভাবে আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে উঠলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। সৌজন্যে জল-রাজনীতি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৬ ০২:৩৭
Share:

দু’জনের সম্পর্ক আদায়-কাঁচকলায়। তবু অপ্রত্যাশিত ভাবে আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে উঠলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। সৌজন্যে জল-রাজনীতি।

Advertisement

মহারাষ্ট্রের লাতুর এলাকায় খরার মতো পরিস্থিতি। সেখানে জল পাঠানো জরুরি, নাকি আইপিএলের খেলার জন্য মাঠ তৈরিতে জল ঢালা বেশি দরকার— এ নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই বিজেপি শাসিত মহারাষ্ট্রের ওই এলাকায় রেলপথে পাঁচ লক্ষ লিটার পানীয় জল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্র। আজ সেই জলের ওয়াগন লাতুরে পৌঁছেছে। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন সেখানকার মানুষ। লাতুরের মেয়র শেখ আখতার কথায়, ‘‘জল এসে পৌঁছনোয় আনন্দের পরিবেশ তৈরি হয়েছে এখানে।’’ এরই মধ্যে কেজরীবাল আজ টুইটারে কেন্দ্রের পদক্ষেপকে স্বাগত জানান। কংগ্রেসের মতে, গোটাটাই জোলো রাজনীতি। সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি সমাধান না করে স্রেফ বাহবা
কুড়োতে বিজেপি জল নিয়ে রাজনীতি করছে। আর ফায়দা লুটতে প্রচারলোভী কেজরীবাল ঝাঁপ দিয়েছেন সেই ঘোলা জলেই।

কংগ্রেসের এমন কটাক্ষের কারণ, কেজরীবাল মোদী সরকারের এই পদক্ষেপের প্রশংসা করেই থেমে থাকেননি। বরং এক ধাপ এগিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন, কেন্দ্রের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দিল্লি সরকারও লাতুরে জল পাঠাতে তৈরি। টুইটারে কেজরীবালের প্রস্তাব, ‘‘দিল্লি সরকারও লাতুরের পাশে দাঁড়াতে প্রস্তুত। কেন্দ্র যদি পৌঁছে দিতে রাজি থাকে, তবে আগামী দু’মাস দিল্লি থেকে ১০ লক্ষ লিটার জল লাতুরে পাঠানো যেতে পারে।’’ কেজরীবালের প্রস্তাবটি দেখেই দিল্লির জলসম্পদ মন্ত্রী কপিল মিশ্র পাল্টা টুইট করেন, ‘‘দিল্লি জল বোর্ড প্রস্তুত স্যার। আমরা এখানে জল বাঁচিয়ে সেই জল লাতুরের ভাই-বোনেদের কাছে পাঠিয়ে দেব।’’

Advertisement

প্রধানমন্ত্রীকে একটি চিঠিও লিখেছেন কেজরীবাল। যার বক্তব্য, একুশ শতকের ভারতে কেউ জলের অভাবে মারা গেলে, তার চেয়ে লজ্জার আর কিছু নেই। কেন্দ্র
লাতুরের জন্য যা করেছে তা প্রশংসনীয়। দিল্লিতেও জলের
সমস্যা রয়েছে। কিন্তু লাতুরের যা পরিস্থিতি, তাতে সেখানকার মানুষদের সাহায্য করা আমাদের দায়িত্ব। আপনি যদি ঠিক মনে করেন, তা হলে অন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের কাছে আবেদন জানাতে পারেন। আমি মনে করি তাঁরাও এগিয়ে আসবেন।’’ কেজরীবালের ওই স্বঘোষিত উদ্যোগের বিরুদ্ধে সরব হতে দেরি করেননি বিজেপি। তাদের বক্তব্য, স্রেফ কেন্দ্রের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নিজেকে জাহির করতেই এ ভাবে তৎপর হয়েছেন কেজরীবাল।

আর কংগ্রেস বলছে, স্রেফ প্রচারে থাকতেই জোলো রাজনীতি করছেন আপ নেতা। তারা তুলছে দিল্লির নিজস্ব জলসঙ্কটের প্রসঙ্গ। দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতের বক্তব্য, ‘‘খাস দিল্লিতেই গরমকালে বহু মহল্লায় পানীয় জলের অভাবে ভুগতে হয়। দিল্লি সরকার আগে দিল্লিবাসীর কথাই ভাবুক। তার পর লাতুরের কথা ভাবা যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন