শিক্ষকের কটূক্তি, কেরল জুড়ে তরমুজ-প্রতিবাদ

কদর্যতার নতুন নজির গড়লেন কেরলের এক কলেজশিক্ষক। কোঝিকোড়ের ফারুক ট্রেনিং কলেজের টি জওহর মুনাব্বির নামে ওই শিক্ষকের একটি ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যেখানে জওহরকে বলতে শোনা যাচ্ছে, মেয়েরা নাকি বাজারের কাটা তরমুজের মতো নিজের ঊর্ধ্বাঙ্গ দেখিয়ে বেড়ান!

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

তিরুঅনন্তপুরম শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৮ ০৩:২৮
Share:

এ ভাবেই প্রতিবাদ সোশ্যাল মিডিয়ায়।

কদর্যতার নতুন নজির গড়লেন কেরলের এক কলেজশিক্ষক। কোঝিকোড়ের ফারুক ট্রেনিং কলেজের টি জওহর মুনাব্বির নামে ওই শিক্ষকের একটি ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যেখানে জওহরকে বলতে শোনা যাচ্ছে, মেয়েরা নাকি বাজারের কাটা তরমুজের মতো নিজের ঊর্ধ্বাঙ্গ দেখিয়ে বেড়ান!

Advertisement

বিষয়টি জানাজানি হওয়ামাত্র ক্ষোভে ফেটে পড়েছে কেরল। এসএফআইয়ের তরফে তরমুজ হাতে ফারুক কলেজের ভিতরেই মিছিল করেন একদল পড়ুয়া। সোশ্যাল মিডিয়াতেও কাটা তরমুজ হাতে নিয়ে ছবি পোস্ট করছেন মেয়েরা। কেউ কেউ আবার ঊর্ধ্বাঙ্গ অনাবৃত করেও ছবি পোস্ট করেছেন।

জওহর ওই ক্লিপিংয়ে বলেছেন, তাঁর কলেজের ৮০ শতাংশ পড়ুয়াই মেয়ে এবং বেশির ভাগই মুসলিম। তাঁর বক্তব্য, ‘‘মেয়েরা বোরখা তো পরে, কিন্তু এমন ভাবে পরে যাতে তাদের লেগিংস দেখা যায়। মুফতা (মাথার কাপড়) একেবারেই পরে না। কেবল একটি ওড়না ৩২ বার মুড়ে, ২৫ খানা পিন দিয়ে আটকে রাখে স্টাইলের জন্য।’’ এর পরেই আরও বিস্ফোরক হয়ে তিনি যোগ করেন, ‘‘যে ভাবে বাজারে তরমুজ কেটে রাখা হয় ফলটা কত তাজা বোঝানোর জন্য, সে ভাবে মেয়েরাও তাদের বক্ষস্থল দেখিয়ে পুরুষকে প্রলুব্ধ করতে চায়।’’

Advertisement

তবে কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, তিন মাস আগে ক্যাম্পাসের বাইরে ওই মন্তব্য করেছিলেন জওহর। তার দায় কলেজের নয়।

আরও পড়ুন: যৌন হেনস্থা মামলায় জেএনইউ অধ্যাপক গ্রেফতার, মুক্ত জামিনে

সম্প্রতি বারবারই মেয়েদের নিয়ে অসহিষ্ণুতার নজির মিলছে কেরলে। কখনও প্রিয়া প্রকাশ ভেরিয়ারের জনপ্রিয় গানের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে, কখনও পত্রিকার প্রচ্ছদে স্তন্যদায়িনীর ছবি ঘিরে বিতর্কের ঝড় উঠছে। কেন? মনোবিদ নীলাঞ্জনা সান্যালের মতে, সামাজিক ভাবে এক ধরনের মানুষের মাথায় গেঁথে গিয়েছে যে, মেয়ে মানেই শারীরিক সৌন্দর্য্য এবং তা প্রকাশ্যে দেখানোর নয়। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপিকা নন্দিতা ধবন এর পিছনে মেয়েদের পণ্যায়িত করার ট্র্যাডিশনকেই দুষেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আসলে নারীদের ক্ষমতায়ন দেখে কিছু পুরুষ ভয় পাচ্ছেন, নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।’’

মেয়েদের সম্পর্কে বদ্ধমূল ধারণাগুলো ভাঙার লক্ষ্যেই দুঃসাহসী হয়ে নগ্ন প্রতিবাদেও নেমেছেন মেয়েরা। তিরুঅনন্তপুরমের বাসিন্দা বছর পঁচিশের আরতি এসএ বললেন, ‘‘মেয়েদের স্তন নিয়ে মানুষের যে বাড়াবাড়ি, তা চরম হতাশার। এর প্রতিবাদে আমার স্বামী এবং আমি ফেসবুকে নগ্ন ছবি পোস্ট করার সিদ্ধান্ত নিই।’’ কোচির সমাজকর্মী দিয়া সানাও তাঁর বন্ধুর উন্মুক্ত স্তনের ছবি আপলোড করেছেন। তবে এই সব পোস্ট মুছে দিয়েছে ফেসবুক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন