জোর যার/২

নেতার বিরুদ্ধে প্রমাণ চান আদিবাসীরা

আন্দোলনের নেতার বিরুদ্ধে পুলিশের তোলা গণধর্ষণের যড়যন্ত্রের অভিযোগের প্রমাণ চাইছে আদিবাসী গ্রামসভা। আর পুলিশ গ্রামসভায় সেই প্রমাণ দিতে পারলেই তাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে পথল্লগড়ি আন্দোলনের নেতা জন জোহনাস কিডুকে।

Advertisement

দিবাকর রায়

খুঁটি শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৮ ০৩:৩২
Share:

প্রতীকী ছবি।

আন্দোলনের নেতার বিরুদ্ধে পুলিশের তোলা গণধর্ষণের যড়যন্ত্রের অভিযোগের প্রমাণ চাইছে আদিবাসী গ্রামসভা। আর পুলিশ গ্রামসভায় সেই প্রমাণ দিতে পারলেই তাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে পথল্লগড়ি আন্দোলনের নেতা জন জোহনাস কিডুকে। ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে আরকি থানার কোচাং গ্রামের আর সি মিশন স্কুলের প্রিন্সিপাল ফাদার আলফনসো আয়েন-সহ দু’জনকে। তবে জন কিডুর বিরুদ্ধে পুলিশ যথেষ্ট প্রমাণ দিতে পারেনি। এমনকী অভিযোগকারীরাও তাঁর নাম করেননি। তবে এডিজি (অপারেশন) আর কে মল্লিক প্রথম থেকে জন কিডুকেই গণধর্ষণের প্রধান ষড়যন্ত্রকারী বলে উল্লেখ করেছেন। আর তাতেই খেপেছে গ্রামসভা। যদিও এ নিয়ে মুখে কুলুপ পুলিশের।

Advertisement

অনেক চেষ্টার পরে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে আজ ফোনে কথা বলেন জন কিডু। বলেন, ‘‘ধর্ষণ বা হিংসাকে আমরা সমর্থন করি না। পুলিশের কাছে প্রমাণ নেই। আন্দোলনকে স্তব্ধ করতে ষড়যন্ত্র করছে।’’ গ্রামসভার সদস্যদের দাবি, কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তার খোঁজ করছেন তাঁরাও। খোঁজ পেলে গ্রামসভাই সাজা দেবে তাঁদের। আদিবাসীদের বিচারে ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। গ্রামসভায় অভিযোগ প্রমাণিত হলে সেই সাজাই দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। গ্রামসভার প্রতিনিধি মার্টিন মারাংয়ের কথা, ‘‘প্রশাসন আমাদের সঙ্গে কথা বলতে পারত। সাহায্য চাইতে পারত। কিন্তু তা করেনি।’’

আসলে কোনও অপরাধ হলে ঘটনাস্থলে গিয়ে তল্লাশি করা তদন্তের অন্যতম বিষয়। কোচাং গ্রামে গত ১৯ জুন পাঁচ আদিবাসী তরুণীর গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পরেও পুলিশ সেখানে যায়নি। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে ঘটনার ছ’দিন পরেও কোচাং গ্রামে পুলিশের কোনও দল পৌঁছাতে পারেনি। বহিরাগত কাউকেও গ্রামে যেতে দিতে রাজি নয় পুলিশ। জেলা পুলিশ কর্তারা সাফ জানিয়েছেন, নিরাপত্তার কারণেই গোটা এলাকায় নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।

Advertisement

ঝাড়খণ্ডের রাজধানী রাঁচী থেকে খুঁটি জেলা সদরের দূরত্ব প্রায় ৩৪ কিলোমিটার। জেলা সদর থেকে ঘটনাস্থল আরকি থানার কোচাং গ্রামের দূরত্ব প্রায় ৫০ কিলোমিটার। পশ্চিম সিংভূম জেলার লাগোয়া সারান্ডার জঙ্গলের ভিতরে থাকা ওই গ্রামে যেতে পুলিশ ভয় পাচ্ছে বলেই স্থানীয় বাসিন্দাদের ধারণা। তবে এ দিন গ্রামের আশেপাশে সিআরপিএফ বাহিনীর টহল বেড়েছে। ওই এলাকা পিএলএফআই জঙ্গি সংগঠন এবং পথল্লগড়ি আন্দোলনের গড় হওয়ায় বুঝেশুনে পদক্ষেপ নিচ্ছে পুলিশ।

এমন পরিস্থিতিতে গ্রামসভা-পথল্লগড়ি আন্দোলনের নেতা এবং পুলিশের মাঝে পড়ে গ্রামের মানুষদের হিমসিম অবস্থা। গ্রামসভা এবং পুলিশের ভয়ে মুখও খুলছেন না তাঁরা। রাজ্য পুলিশের ডিজি ডি কে পাণ্ডে থেকে শুরু করে এডিজি, আইজি, ডিআইজি সকলেই জেলা সদরে গেলেও কেউই গ্রামে যাননি। তবে পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে ডিজি জানিয়েছেন, কোচাং গ্রামে খুলতে হবে পুলিশ ফাঁড়ি। পুলিশ কর্তারা ডিজির প্রস্তাব নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু না বললেও আড়ালে জানিয়েছেন, এখন প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা ছাড়া কিছুই করার নেই। এ দিন অবশ্য বিরোধী দল জেএমএম এবং জেভিএম ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবি করেছে।

(চলবে)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন