রাজ্যে কিডনি চুরির গুজব ছড়ানো, পুলিশের কাছে আশ্রয় নেওয়ার পরেও মারধরের ঘটনায়, সিপিএম গত কাল বিকেলে ত্রিপুরার আইনমন্ত্রী রতনলাল নাথের ইস্তফার দাবি তুলেছিল। গুজব ছড়ানোর জন্য আঙুল তুলেছিল মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লবকুমার দেবের দিকে। এর জবাবে আজ সকালেই তড়িঘড়ি সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ আনলেন, ক্ষমতা খুইয়ে সিপিএমই রাজ্যে অশান্তি পাকাচ্ছে। একই অভিযোগ বিজেপির রাজ্য সম্পাদক প্রতিমা ভৌমিক এবং দলের কোর কমিটির সদস্য রতনলালের।
কংগ্রেসের দাবি, গুজবের ঘটনার তদন্ত করাতে হবে উচ্চ আদালতে কর্মরত বিচারপতিকে দিয়ে। কারণ, গুজব ছড়িয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যের আইনমন্ত্রী। এর তদন্ত পুলিশ করতে পারবে না।
বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের বৈঠকে যোগ দিতে যাওয়ার আগে এখানে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘রাজ্যে সাম্প্রতিক সব হত্যা ও নেশাদ্রব্য সংক্রান্ত মামলায় যত লোক ধরা পড়েছে, তারা সকলেই সিপিএমের সমর্থক।’’ তিনি কবুল করেন, সরকার বদলের পরে পিঠ বাঁচাতে সিপিএমের লোকজন আইপিএফটি এবং বিজেপিতেও ভিড়েছে। সিটু ছেড়ে অনেকে বিএমএস করছে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘বিধানসভায় বলছে সহযোগিতা করবে। অন্য দিকে ওরাই অস্থিরতা তৈরি করছে। বিরোধীরা এত সহজে আমাকে বোকা বানাতে পারবে না। আমি এই রাজ্যের সন্তান। সাড়ে তিন মাস সময় দিয়েছিলাম। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, কমিউনিস্ট বন্ধুদের চরিত্র পাল্টাবে না। সরকার এ বার কঠোর ব্যবস্থা নেবে।’’ মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, কিছু ক্ষেত্রে পুলিশও যুক্ত রয়েছে। এরা চাকরি পেয়েছে বাম জমানায়।
বিজেপি নেত্রী প্রতিমা ‘গুজবের কারিগর’ আখ্যা দেন সিপিএএমকে। তোলেন পশ্চিমবঙ্গে আনন্দমার্গীদের হত্যার প্রসঙ্গও। বিজেপির কোর কমিটির সদস্য, আইনমন্ত্রী রতনলাল জানান, অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করে এ পর্যন্ত ১৮ জন গ্রেফতার হয়েছে। তাদের ১৭ জনই সিপিএমের সমর্থক।
মোহনপুরে গত মঙ্গলবার একটি শিশু নিখোঁজ হয়েছিল। পরে তার দেহ উদ্ধার হয়। সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও মুখপাত্র গৌতম দাস গত কাল অভিযোগ করেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে কিডনি চক্রে গুজব ছড়ানো হয়েছে। কংগ্রেসেরও অভিযোগ, মন্ত্রীরা কেন না-জেনে মন্তব্য করছেন? প্রথম দিনই আইনমন্ত্রী কী ভাবে বলে দিলেন, আন্তর্জাতিক কিডনি পাচার চক্র জড়িত? মুখ্যমন্ত্রীও বলে দিলেন কেউ যাতে কিডনি পাচার করতে না পারে তার জন্যে বিএসএফকে সীমান্ত সিল করতে বলা হয়েছে!