প্রতীকী ছবি।
বাবা-মায়ের উপর রাগ করে চার ভাইবোনকে বিষ মেশানো খাবার খাইয়ে হত্যা করে আত্মঘাতী হলেন এক যুবক। মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে পঞ্জাবের কপূরথালার লক্ষ্মীনগর এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, আত্মঘাতী যুবকের নাম অভিমন্যু কুমার (২১)। তার চার ভাইবোন হল অনু কুমারী (১৭), অনসু কুমারী (১৫), অর্চনা (১০) এবং অনুরাগ (১২)।
প্রতি দিনের মতো দোকান বন্ধ করে বাড়িতে ফিরেছিলেন বছর একুশের অভিমন্যু। লক্ষ্মীনগরেই তাঁদের একটা সেলুন রয়েছে। বাবা রামকিশোরের সঙ্গেই ওই দোকান চালাতেন অভিমন্যু। বাবা-মা ও তিনি ছাড়াও বাড়িতে রয়েছে পাঁচ ভাইবোন। বড় সংসার। কিন্তু দোকান চালিয়ে ততটা আয় হয় না। ফলে সংসারে টানাটানি লেগেই থাকত। এ নিয়ে মাঝেমধ্যেই পরিবারে অশান্তি হত বলে প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন। এতগুলো ভাইবোন, তাদের খাওয়া, পড়াশোনা সব মিলিয়ে একটা বিশাল খরচ। অথচ সেই রোজগার না থাকায় ছেলেমেয়েদের ঠিকঠাক দেখাশোনাতেও খামতি থেকে যাচ্ছিল। পুলিশকে লেখা সুইসাইড নোটে সেই প্রসঙ্গই উঠে এসেছে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিমন্যুর পকেট থেকে উদ্ধার হওয়া সুইসাইড নোটে তাঁর বাবা-মায়ের প্রতি অসন্তোষের কথাই উল্লেখ করা ছিল।
আরও পড়ুন: শ্রীনগরে বিবস্ত্র করে, থেঁতলে খুন জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের শীর্ষ আধিকারিক
মঙ্গলবার এক ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে বিয়েবাড়িতে গিয়েছিলেন রামকিশোর। বাড়িতে চার ছেলেমেয়েকে নিয়ে ছিলেন রামকিশোরের স্ত্রী রীতা রানি। রাত তখন ১০টা। রীতা রানি জানান, অভিমন্যু দোকান থেকে ফিরে আসার সময় সঙ্গে একটা বার্গার নিয়ে এসেছিল। বার্গারের মধ্যে সে আগে থেকে কীটনাশক মিশিয়ে রেখেছিল বলে তার মায়ের বক্তব্য। সেটা চার ভাইবোনকে খেতে দেয় অভিমন্যু। নিজেও খায়। খাওয়ার কিছু ক্ষণ পরেই সকলে বমি করতে শুরু করে। বিষক্রিয়ার মাত্রা বেশি হওয়ায় বাড়িতেই মারা যায় রামকিশোরের তিন মেয়ে ও বড় ছেলে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই আর এক ছেলের মৃত্যু হয়। অভিমন্যু যে এ রকম একটা ফন্দি এঁটেছিল সেটা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি মা রীতা রানি। ঘটনার খবর পেয়েই বাড়িতে ফিরে আসেন রামকিশোর। বলেন, “ছেলে আর আমি দু’জনে মিলে দিনে ২৫০ টাকা রোজগার করতাম। আর্থিক অবস্থা ভাল ছিল না। কিন্তু কখনও ছেলেকে দেখে মনে হয়নি এমন একটা কাজ করবে সে।” পুলিশ জানিয়েছে, রাম কিশোরের বাড়ি থেকে কীটনাশকের বোতল পাওয়া গিয়েছে। ঘরের বাসনপত্র এবং খাবার পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।