প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসেই মন্ত্রীদের বুঝিয়ে দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী- কথা কম, কাজ বেশি।
সিংহভাগ মন্ত্রী তটস্থ থাকেন। পাছে কী বলতে কী বলে ফেলবেন! আবার ধমক খাবেন! মোদীর কথা মেনে চলার চেষ্টা করেন তাঁরা। কিন্তু কয়েক জন দিব্যি লাগামছাড়া। যা নিয়ে বেশ বিরক্ত বিজেপি নেতৃত্ব। এই ‘অবাধ্য’ মন্ত্রীদের নিয়েই ‘সেরা বলিয়ে’র বিচার করলেন মোদী মন্ত্রিসভারই সতীর্থরা।
শ্লেষের বিচার বটে, কিন্তু বিজেপি মন্ত্রীদের খোশগল্পে এই মূল্যায়নের তালিকায় সেরার শিরোপা পেলেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিজিজু। স্বর্ণপদক জুটেছে তাঁরই ভাগ্যে। দ্বিতীয় স্থানে রূপোর পদক রবিশঙ্কর প্রসাদের। আর তৃতীয় স্থানের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে ‘টাই’ দুই মন্ত্রীর। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নায়ডু আর প্রধানমন্ত্রী দফতরের প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ। বিজেপির মতে, প্রায় সব বিষয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে কিছু না কিছু বলা এই মন্ত্রীদের ‘স্বভাব’ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মন্ত্রী হওয়ার আগে দলের মুখপাত্র ছিলেন রবিশঙ্কর প্রসাদ। দলে একগুচ্ছ নতুন মুখপাত্র এখনও রয়েছেন। কিন্তু কোনও টাটকা রাজনৈতিক বিষয় হাতে পেলেই এখনও ঝাঁপিয়ে পড়তে দেখা যায় রবিশঙ্করকে। কিন্তু তাঁকেও এখন টেক্কা দিয়েছেন কিরেন রিজিজু। রামজস বিতর্কে জাতীয়তাবাদের ফায়দা তুলতে গিয়ে বিজেপিকেই যিনি অস্বস্তির মুখে ফেলে দিয়েছেন শহিদ-কন্যা গুরমেহরের মগজ ধোলাইয়ের কথা বলে। যেটি সামাল দিতেও এখন তাঁকে নিরন্তর ব্যাখ্যা দিতে হচ্ছে।
রিজিজু আজ জানান, গুরমেহরের তৈরি করা ভিডিওর একটি অংশ দেখেই তিনি টুইট করেছিলেন। পুরো ভিডিওটি তাঁর দেখার না কি সময়ও হয়নি। যা শুনে বিজেপির আর এক মন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘উত্তরপ্রদেশের ভোট যখন মধ্যগগনে, সেই সময় এমন স্পর্শকাতর বিষয়ে বলার সময় সতর্কতা অবলম্বন করাই উচিত।’’ বিজেপির আর এক নেতার রসিক মন্তব্য, ‘‘ইউপিএ আমলে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর পদে ছিলেন শ্রীপ্রকাশ জায়সবাল। সরকারে থেকেও তিনি কিচ্ছুটি জানতেন না, অথচ পৃথিবীর যাবতীয় বিষয়ে তিনি মতামত দিতেন। রিজিজুও কতকটা সেই পথে হাঁটছেন।’’
মাস খানেক আগে এই রিজিজুর বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। সেই সময় রেগেমেগে সংবাদমাধ্যমে রিজিজু বলেছিলেন, ‘‘যাঁরা এ সব অভিযোগ তুলছেন, অরুণাচলে গেলে তাঁদের জুতোপেটা করা হবে।’’ তখনই তাঁকে ডেকে সতর্ক করে বলা হয়েছিল সমঝে চলতে। তারপরেও শোধরালেন কোথায় মন্ত্রীমশাই?