স্বাগত: দিল্লিতে রাহুল গাঁধীর সঙ্গে কীর্তি আজ়াদ। পিটিআই
বিজেপিতে নরেন্দ্র মোদীর জমানা শুরু হওয়ার পর থেকেই বিদ্রোহী হয়েছিলেন কীর্তি আজাদ। আজ রাহুল গাঁধীর উপস্থিতিতে কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার পর কীর্তি বিজেপির ‘কীর্তি’ ফাঁস করলেন।
যে সব অভিযোগের নির্যাস হল, বিজেপিতে অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র শেষ। বিরুদ্ধ স্বর শোনার কেউ নেই। বিজেপির ভিতরে দুর্নীতি চোখের সামনে দেখেছেন। এমনকি সরকারি তথ্য হাতে নিয়ে অরুণ জেটলির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলার পর তাঁকেই সাসপেন্ড করা হয়েছে। রাফাল নিয়েও বিজেপি সাংসদদের মনে শঙ্কা রয়েছে, অনেকেই মনে করছেন, এতে দুর্নীতি রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ‘না খাব, না খেতে দেব’ স্লোগান একটি ‘জুমলা’। স্টার্ট আপ, স্মার্ট সিটি, সবার ব্যাঙ্কে ১৫ লক্ষ টাকা, বছরে ২ কোটি কর্মসংস্থান থেকে শুরু করে বিজেপি বিশ্বের সবচেয়ে বড় দল— গোটাটাই শুধু কথার কথা।
তিরাশির বিশ্বকাপ জয়ী ভারতীয় ক্রিকেট দলের সদস্য কীর্তি গত ২৬ বছর ধরে বিজেপির সঙ্গে। আজ কংগ্রেসে যোগ দিয়ে এআইসিসিতে সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি বলেন, ‘‘অটল-আডবাণীর কাজে প্রভাবিত হয়ে যে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলাম, আজকের দলের সঙ্গে তার আকাশ-পাতাল ফারাক। তবে রাহুল গাঁধী আমাকে বলেছেন, কংগ্রেসে সমস্যা হবে না। আমার বাবা ভগবত ঝা আজাদকে ৫২ সালে সাংসদ করেছিলেন জওহরলাল নেহরু। আজ আমারও ‘ঘর ওয়াপসি’ হল।’’
বিজেপিতে থাকতেই দিল্লি ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনে অরুণ জেটলির দুর্নীতি নিয়ে সরব হয়েছিলেন কীর্তি। আজও তিনি সেই ৪০০ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন। কিন্তু বিজেপি এ ব্যাপারে মুখ খোলেনি। বরং কীর্তির পাল্টা হিসেবে তৃণমূল থেকে প্রবীণ অভিনেতা বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়, শঙ্কুদেব পন্ডা, রঞ্জন ভট্টাচার্যকে বিজেপিতে নিয়ে আসে। তাঁরা সকলেই নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের নেতৃত্বকে ‘ধন্য-ধন্য’ করে বিজেপিতে যোগ দেন। পুলওয়ামা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাম্প্রতিক মন্তব্যেরও সমালোচনা করে বিশ্বজিৎ বলেন, ‘‘মোদীকে আরও দশ বছর প্রধানমন্ত্রী দেখতে চাই।’’
কংগ্রেসের বিহারের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা শক্তিসিন গাহিল বলেন, ‘‘কীর্তি আজাদকে আনা তো ট্রেলার, এখনও পুরো ছবি বাকি।’’ আগামিকালই কীর্তিকে নিয়ে পটনা থেকে দ্বারভাঙ্গা বাইক মিছিল করার পরিকল্পনা রয়েছে কংগ্রেসের। কীর্তি কোনও শর্ত না রাখলেও দল ভাবছে, কোন কেন্দ্রে কী ভাবে তাঁকে ব্যবহার করা যায়। কংগ্রেসের নেতারা দাবি করছেন, কীর্তি যা বলেছেন, তা বিজেপির অনেকেরই মনের কথা। আর কীর্তি আজ শুধু মোদীই নন, দেশের বিভাজন তৈরির জন্য আরএসএসকেও একহাত নেন। বলেন, ‘‘আমি শাখায় যাইনি। আরএসএস দেশে বিভাজন না করলে এত আগুন লাগত? যে সরকার সুপ্রিম কোর্টকে মিথ্যা বলতে পারে, তারা তো জনতাকে বোকা বানাতেই পারে।’’