এ দেশের ইঞ্জিন টেনে আনল ও দেশের বগি।
ভারত-বাংলাদেশ সুম্পর্কের আরও একটি নজির হিসাবে শনিবার পরীক্ষামূলক ভাবে চলল যাত্রিবাহী খুলনা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেস-২। ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেস আগেই চালু হয়েছিল। খুলনা-কলকাতা যাত্রিবাহী ট্রেনটি ঘিরেও আবেগ তৈরি হয়েছে দু’দেশের মানুষের মধ্যে।
এ দিন সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ এ দেশ থেকে একটি ইঞ্জিন যায় বেনাপোলে। সেখানে ও দেশের ছ’টি কামরা অপেক্ষায় ছিল। এ দেশের ইঞ্জিন গিয়ে জোড়ে তাদের সঙ্গে। বাংলাদেশের সময় বেলা ১টা ৩৫ মিনিট নাগাদ দিল্লি থেকে ট্রেনের উদ্বোধন করেন দু’দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদী। তারপরেই বেনাপোল থেকে ট্রেন রওনা দেয় পেট্রাপোলের দিকে।
বেলা ১টা ৩৫ মিনিট নাগাদ পেট্রাপোল স্টেশনে ঢোকে ট্রেন। ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছিল সেটি। সামনে প্রধানমন্ত্রী হাসিনা-মোদী, মাঝে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ছবি। নীচে লেখা, ‘বাংলাদেশ ও ভারতের বন্ধুত্ব দীর্ঘজীবী হোক।’ পড়শি দেশের সরকারি প্রতিনিধিদের ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান পূর্ব রেলের শিয়ালদহ শাখার ডিআরএম বাসুদেব পন্ডা। কলকাতা স্টেশনে বাংলাদেশের সরকারি প্রতিনিধিদের স্বাগত জানাতে হাজির ছিলেন পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার এসএন অগ্রবাল।
আরও পড়ুন: তিস্তা নয়, জল দেব তোর্সার
ট্রেনে আসা ৩৯ জনের প্রতিনিধি দলে ছিলেন বাংলাদেশ রেলের চিফ অপারেটিং সুপারিন্টেন্ডেন্ট মহম্মদ বিল্লালউদ্দিন এবং ইফতিকার হোসেন। বিল্লালউদ্দিন বলেন, ‘‘দ্বিতীয় মৈত্রী এক্সপ্রেস চালু হওয়ায় আমরা আপ্লুত। দু’দেশের বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে নতুন দুয়ার খুলে গেল।’’ বাসুদেববাবু বলেন, ‘‘ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক বহু পুরনো ও নিবিড়। এই ট্রেন চালু হওয়ায় তা আরও মজবুত হল।’’
পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র জানান, পেট্রাপোলে পাসপোর্ট-ভিসা পরীক্ষা হবে। সব মিলিয়ে ১৭০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে ট্রেনটি সময় নেবে ৫ ঘণ্টা মতো। তবে এখনই ট্রেন নিয়মিত যাতায়াত শুরু করছে না। জুলাই মাস থেকে যাত্রীরা নিয়মিত যাতায়াত করতে পারবেন।
বাংলাদেশ রেল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানানো হয়েছে, নতুন ট্রেনে চারশো যাত্রী যাতায়াত করতে পারবেন। এসি, নন এসি এবং স্লিপার কামরা থাকছে। বিল্লালউদ্দিন জানান, প্রাথমিক ভাবে ঠিক আছে সপ্তাহে এক দিন খুলনা থেকে ট্রেন কলকাতা আসবে। আর এক দিন ট্রেন এখান এখান থেকে খুলনা যাবে। তবে যদি যাত্রী সংখ্যা বাড়ে, তবে ট্রেন আরও বেশি করে চালানো হবে। ট্রেনের ভাড়া কত হবে, কী ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকছে, খাবাবের ব্যবস্থা কেমন থাকবে— এ সব নিয়ে বিল্লালউদ্দিন জানান, ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেসের ধাঁচেই থাকছে সব ব্যবস্থা।
২০০৫ সালের পরে উত্তর দিনাজপুরের রাধিকাপুর সীমান্ত দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে রেলপথে পণ্য পরিবহণ ফের শুরু হল শনিবার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপস্থিতিতে যার সূচনা করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দিল্লির অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০০৫ সালে বারসই থেকে রাধিকাপুর পর্যন্ত মিটারগেজ রেলপথ ভেঙে ব্রডগেজ তৈরির কাজ শুরুর পর থেকে ওই রেলপথ দিয়ে দু’দেশের মধ্যে পণ্য আমদানি-রফতানি বন্ধ হয়ে যায়।