ফাইল চিত্র।
গোরক্ষপুরে শিশুমৃত্যুর পিছনে অক্সিজেনের অভাব দায়ী নয়। দেশজুড়ে বিতর্কের মধ্যে আজ এই ব্যাখ্যা হাজির করল বাবা রাঘবদাস মেডিক্যাল কলেজ থেকে ঘুরে আসা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল। উত্তরপ্রদেশ সরকার ও তার অধীনে থাকা বিআরডি হাসপাতালের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই কমিটি তাদের বক্তব্য জানিয়েছে। পাশাপাশি, হাসপাতালের নিজস্ব তথ্যকে উল্লেখ করে কোনও কোনও সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, গোরক্ষপুরের হাসপাতালটিতে অধিকাংশ শিশুর মৃত্যুই এনসেফ্যালাইটিসে হয়নি। রিপোর্টে শিশুমৃত্যুর জন্য সমন্বয়ের অভাব, ডাক্তারদের কাজের শিথিলতাকে দায়ী করা হয়ছে।
শিশুদের মৃত্যু মিছিলের খবরে গোটা দেশে শোরগোল শুরু হতেই গত রবিবার কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দলটি হাসপাতালে গিয়েছিল। তিন সদস্যের ওই দলের সামনে শিশু মৃত্যুর কারণ তুলে ধরেছিলেন প্রশাসনের কর্তারা। বুধবার ওই তদন্ত কমিটি জানিয়েছে, ‘‘আমাদের কাছে যে তথ্য ও পরিসংখ্যান তুলে দেওয়া হয়েছে, তাতে মনে হয় না অক্সিজেন সরবরাহের অভাবের শিশুমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।’’ বরং কমিটির ব্যাখ্যা, ‘‘হাসপাতালের রেকর্ড অনুযায়ী, গত বছরের এই সময়ের তুলনায় এ বার মৃত্যুর সংখ্যা কম।’’ তদন্ত কমিটিতে দিল্লির সফদরজং হাসপাতালের ডাক্তার হর্ষ চিলানি, দিল্লির লেডি হার্ডিঞ্জ হাসপাতালের ডাক্তার সুষমা নাঙ্গিয়া ও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের প্রতিনিধি ছিলেন। চিলানি জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকে তাঁরা অন্তর্বর্তী রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। তবে এ বিষয়ে আরও তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছেন তাঁরা। সে সব পেলেই নতুন করে বক্তব্য জানাতে পারবেন। চিলানি আজ জানান, ‘‘বিআরডি হাসপাতালে এ বছরের ১ থেকে ১২ অগস্টের মধ্যে ১৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু গত বছর এই সময়ে মৃত্যু হয়েছিল ১৩৮ জনের। আর এ বছর জুলাইয়ে মৃত্য হয়েছে ২০০ জনের। গত বছর জুলাইয়ে মৃত্যু হয়েছিল ২৯২ জনের। ‘‘মৃত্যু সংখ্যা এ বছর কমে গিয়েছে’’— মন্তব্য করেছেন সফদরজং হাসপাতালের চিকিৎসক।
আরও পড়ুন: প্রায়শ্চিত্ত করুন যোগী, চায় সঙ্ঘ
বিআরডি হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহকারী সংস্থা পুষ্পা সেলস তাদের বকেয়া টাকা না পেয়ে অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছিল। তার জেরেই হাসপাতালের এনসেফ্যালাইটিস ওয়ার্ডে প্রায় ৪০ জন শিশুর মৃত্যুর খবরে উত্তাল হয়েছিল গোটা দেশ। এমনকী, মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও বিতর্কের মধ্যে প্রশ্ন তুলেছিলেন, রাজ্য সরকার অক্সিজেনের জন্য হাসপাতালকে টাকা দিয়ে দিলেও ওই সংস্থাকে তা দেওয়া হয়নি কেন? কেন তা আটকে রাখা হয়েছিল? এর আগে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিবের রিপোর্টে অক্সিজেন সরবরাহ নিয়ে দুর্নীতি-চক্রের ইঙ্গিতও দেওয়া হয়। কিন্তু আজ কেন্দ্রের তদন্ত কমিটি যে রিপোর্ট দিয়েছে, তাতে এই বিতর্ক থেকে হাসপাতালকে অনেকটাই রেহাই দেওয়া হল।