Lal Krishna Advani

মুখ খুলেই শিষ্টাচারের কথা তুললেন আডবাণী 

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাতে আগামিকাল রামমন্দিরের শিলান্যাস ও ভূমিপুজো। করোনা সঙ্কটের সময়ে এমনিতেই বয়সের কারণে আডবাণীর ভিড় এড়িয়ে চলা উচিত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০২০ ০৩:১৮
Share:

ছবি সংগৃহীত

রামমন্দিরের ভূমি পুজোয় রাম জন্মভূমি আন্দোলনের কান্ডারিকেই কেউ নিমন্ত্রণ করেনি। কেন করা হয়নি, সে প্রশ্নের উত্তরও কেউ জানে না।

Advertisement

অযোধ্যায় আগামিকালের ভূমিপুজোর অনুষ্ঠানে বাদ পড়ে যাওয়া লালকৃষ্ণ আডবাণী আজ রাতে বিবৃতিতে বললেন, রামমন্দির শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ ভারতের প্রতিনিধিত্ব করবে। যেখানে কেউ ‘বহিষ্কৃত’ থাকবে না। সকলের জন্যই ন্যায় হবে। এমনটাই তাঁর বিশ্বাস। সেই সঙ্গে মনে করিয়ে দিলেন, তিরিশ বছর আগে রামজন্মভূমি আন্দোলনের সময় তিনিই রাম রথযাত্রা করেছিলেন। আডবাণীর কথায়, ‘‘আমি বিনম্রতার সঙ্গে অনুভব করি, নিয়তি আমাকে সোমনাথ থেকে অযোধ্যা পর্যন্ত রথযাত্রার এই দায়িত্ব দিয়েছিল।’’

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাতে আগামিকাল রামমন্দিরের শিলান্যাস ও ভূমিপুজো। করোনা সঙ্কটের সময়ে এমনিতেই বয়সের কারণে আডবাণীর ভিড় এড়িয়ে চলা উচিত। কিন্তু ভদ্রতার খাতিরেও আডবাণীর কাছে কোনও আমন্ত্রণ, টেলিফোন গেল না কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিজেপি শিবিরের মত, শিষ্টাচার ও সম্মানের খাতিরেই বিজেপির শীর্ষব্যক্তিদের আডবাণীর কাছে যাওয়া উচিত ছিল। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে আজ আডবাণী রামের বর্ণনায় সেই শিষ্টাচারের প্রসঙ্গই টেনে এনেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘শ্রীরামের স্থান ভারতীয় সংস্কৃতি ও সভ্যতার কাঠামোয় সর্বোচ্চ। তিনি বিনয়, মর্যাদা ও শিষ্টাচারের মূর্ত রূপ।’’ প্রশ্ন উঠেছে, কাকে বার্তা দিতে চাইলেন আডবাণী?

Advertisement

আডবাণীর মতো মুরলীমনোহর জোশীর কাছেও অযোধ্যার অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পৌঁছয়নি। কোনও টেলিফোন বা ই-মেলও যায়নি। সব মিলিয়ে যা পরিস্থিতি, তাতে রাম জন্মভূমি আন্দোলনের পাঁচ প্রধান চরিত্র, লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলীমনোহর জোশী, কল্যাণ সিংহ, উমা ভারতী ও বিনয় কাটিয়ারের কেউই ভূমিপুজোর অনুষ্ঠানে থাকছেন না। উমা, কল্যাণ ও বিনয় আমন্ত্রিতের তালিকায় ছিলেন। উমা জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি অযোধ্যায় গেলেও সংক্রমণ এড়াতে এবং প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্যের কথা ভেবে পূজানুুষ্ঠানের সময় যাবেন না। কাটিয়ার অযোধ্যায় থাকলেও তাঁকে কোনও দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। আর কল্যাণ সিংহকে আয়োজকেরা বুঝিয়ে দিয়েছেন, বয়সের কথা ভেবে ভিড়ভাট্টার মধ্যে না যাওয়াই ভাল।

প্রশ্ন হল, উমা, কল্যাণদের তো তা-ও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদক চম্পত রাইয়ের দাবি, আডবাণী-জোশীর সঙ্গেও ফোনে কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আডবাণীর ঘনিষ্ঠ শিবিরের দাবি, কোনও ফোন, ই-মেল আসেনি। তাঁকে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যোগ দিতেও বলা হয়নি। লক্ষণীয়, এ দিন আডবাণী যে বিবৃতি জারি করেছেন, তাতেও এ সবের কোনও উল্লেখ নেই।

৯২ বছর বয়সি আডবাণী তা সত্ত্বেও অবশ্য বলেছেন, তাঁর স্বপ্ন পূর্ণ হতে চলেছে। তাঁর কথায়, ‘‘জীবনের কিছু স্বপ্ন পূর্ণ হতে সময় লাগে। কিন্তু যখন তা চরিতার্থ হয়, তখন মনে হয় প্রতীক্ষা সার্থক হল।’’ রাম জন্মভূমিতে রামমন্দির তৈরি বিজেপির স্বপ্ন এবং মিশন ছিল বলে দাবি করেছেন তিনি। আবার একই সঙ্গে তাঁর কথায়, ‘‘ভারতে কাউকে বহিষ্কৃত না রেখে, সকলের জন্য ন্যায় হলেই আমরা সুশাসনের প্রতীক রামরাজ্যের দিকে এগোতে পারব।’’ এই বাক্যে তিনি পরোক্ষ ভাবে বর্তমান নেতৃত্বকে বিঁধলেন কি না, জল্পনা সেটাই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন