শীর্ষ আদালতে পশু খাদ্য মামলায় চাপের মুখে পড়ে এ বার পাল্টা আক্রমণের কৌশল নিলেন লালু প্রসাদ।
যাদব নেতা আগেই ঘোষণা করেছিলেন, ২৭ অগস্ট পটনার গাঁধী ময়দানে কেন্দ্র-বিরোধী মহা-সমাবেশ করে তিনি নরেন্দ্র মোদীর দিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেবেন। সেই সমাবেশে উপস্থিত থাকার জন্য মঙ্গলবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করেন লালু। তাঁর সনির্বন্ধ অনুরোধ— ‘‘দিদি উস দিন আপ পটনা আইয়ে! হাম লোগ এক সাথ মিলকে সরকারকে খিলাফ আওয়াজ উঠায়েঙ্গে।’’
মমতার আশ্বাস, তিনি যাবেন। কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী ও রাহুলের কাছেও একই আর্জি জানান লালু প্রসাদ। সনিয়া-রাহুল যদি না-ও যেতে পারেন, দলের কোনও তাবড় নেতাকে সেই সমাবেশে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কংগ্রেস। তবে লালু চাইছেন রাহুলই এই সমাবেশে থাকুন। মমতাকে বলেছেন— তিনিও এক বার সনিয়াকে বলুন, যাতে রাহুলকে অন্তত পটনায় পাঠান।
মমতার দিল্লি আসার কথা ১৫ মে। পরের দিন সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গেও দেখা করার পরিকল্পনা রয়েছে তৃণমূল নেত্রীর।
দিল্লির কংগ্রেস সূত্র বলছে, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রার্থী বাছাইকে কেন্দ্র করে বিরোধী-ঐক্য গড়ে তোলাটাই এখন প্রাথমিক লক্ষ্য। বিরোধীদের হাতে রয়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ ভোট। নীতীশ কুমার যখন বিজেপির দিকে হাঁটি-হাঁটি পা-পা করে এগোচ্ছেন, সেই সময়ে লালু প্রসাদকে দুর্বল করার চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি। তবে কংগ্রেস নেতৃত্ব ও মমতা, দু’জনেই মনে করেন— এত সহজে পরাস্ত হবেন না পোড়খাওয়া নেতা লালু প্রসাদ। উল্টে জুনে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পরে অগস্টের ২৭ তারিখ তিনি দেখিয়ে দেবেন যে এখনও রাজ্যে যাদব ও মুসলমান ভোটব্যাঙ্ক সুসংহত ভাবে তাঁর পাশেই রয়েছে।
ও দিকে দুই মেরুর দুই রাজনৈতিক নেতা সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি ও মমতাকে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক জানিয়ে দিয়েছেন, রাষ্ট্রপতি ভোটে বিরোধী প্রার্থীকেই সমর্থন করবে তাঁর দল বিজেডি। ন্যাশনাল কনফারেন্সের ফারুক আবদুল্লাও কাল দিল্লিতে সীতারামের সঙ্গে বৈঠক করে জানিয়েছেন, তিনিও বিরোধী প্রার্থীর পাশে থাকবেন। আবার নীতীশ কুমারের বিজেপি শিবিরে যাওয়া ঠেকাতে তাঁকে ইউপিএ-র আহ্বায়ক পদ দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। ইয়েচুরির প্রস্তাব— ২০১৯-এ পরের লোকসভা ভোটে কাউকে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করার প্রয়োজন নেই। তবেই সফল ভাবে বিজেপির বিরুদ্ধে মহাজোট গড়া সম্ভব হবে।