ভোররাতে ধস, ঘুমের মধ্যেই শেষ গোটা গ্রাম

শেষ রাতের গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ছিল পাহাড়ি গ্রামটা। আচমকাই সংলগ্ন পাহাড় থেকে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল মাটি-পাথর-কাদা-বালির স্তূপ। কয়েক মুহূর্তে তার তলায় চাপা পড়ে গেল অন্তত চল্লিশটা বাড়ি। ঘুমের মধ্যেই ধ্বংসস্তূপের তলায় চলে গেলেন প্রায় দু’শো মানুষ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

পুণে শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৪ ০৩:১২
Share:

ধসে গুঁড়িয়ে গিয়েছে ঘর। হাহাকার বৃদ্ধার। ছবি: পিটিআই।

শেষ রাতের গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ছিল পাহাড়ি গ্রামটা। আচমকাই সংলগ্ন পাহাড় থেকে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল মাটি-পাথর-কাদা-বালির স্তূপ। কয়েক মুহূর্তে তার তলায় চাপা পড়ে গেল অন্তত চল্লিশটা বাড়ি। ঘুমের মধ্যেই ধ্বংসস্তূপের তলায় চলে গেলেন প্রায় দু’শো মানুষ। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত ১৮টি মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। আহত অবস্থায় উদ্ধার করা গিয়েছে ১৪ জনকে। প্রাথমিক অনুমান, প্রায় ১৬০ জন এখনও আটকে আছেন ধ্বংসস্তূপের তলায়। সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা।

Advertisement

বুধবার ভোর পাঁচটা নাগাদ মহারাষ্ট্রের পুণেতে আম্বেগাঁও এলাকায় দিম্ভে জলাধারের কাছে মলিন গ্রামের ঘটনা। সহ্যাদ্রি পর্বতমালা সংলগ্ন প্রত্যন্ত গ্রামটিতে গত দু’দিন ধরে থামেনি ভারী বৃষ্টি। তার জেরেই নামে ধস। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, দুর্ঘটনার কথা জানার সঙ্গে সঙ্গেই পুণের তেলেগাঁও শিবির থেকে দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীর একাধিক দল গিয়ে পৌঁছয় ঘটনাস্থলে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকাজ শুরু করে দেন প্রায় ৩০০ উদ্ধারকর্মী।

জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীর ডেপুটি ইনস্পেক্টর এস এস গুলারিয়া জানিয়েছেন, অবিরাম বৃষ্টি আর খারাপ রাস্তাঘাটের জন্য বারবারই ব্যাহত হচ্ছে উদ্ধারকাজ। এলাকায় টেলিফোন সংযোগ নেই, নেই মোবাইল ব্যবহারের সুবিধাও। স্থানীয় বাসিন্দারাও উদ্ধারে হাত লাগিয়েছেন। কেন্দ্র থেকে আরও তিনশো জনের একটি দল পাঠানো হয়েছে ঘটনাস্থলে। আরও ২৪০ জন কর্মীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে গুজরাতের গাঁধীনগরে। চালকবিহীন দু’টি বিমানও পাঠানো হয়েছে প্রত্যম্ত এলাকায় আকাশপথে উদ্ধারকাজ চালানোর জন্য।

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ চহ্বাণ ও উপ-মুখ্যমন্ত্রী অজিত পওয়ার দুর্ঘটনাগ্রস্ত এলাকায় গিয়ে পৌঁছন এ দিন বেলায়। দুর্গতদের প্রতি সমবেদনা জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। কেন্দ্রের তরফে সব রকম সাহায্য করার আশ্বাস দেন তিনি। এ দিন বিকেলেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহকে ধস-আক্রান্ত এলাকায় পৌঁছনোর নির্দেশ দিয়েছেন মোদী।

পুণের জেলা কালেক্টর সৌরভ রাও ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ তদারকি করছেন। তিনি বলেছেন, “মৃতের সংখ্যা এখনই নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। খুব সাবধানে উদ্ধারকাজ চালাতে হচ্ছে, যাতে আটকে পড়া মানুষগুলিকে জীবিত উদ্ধার করা যায়।” তিনি আরও জানান, সকাল থেকে ৩০টি অ্যাম্বুল্যান্স রয়েছে ঘটনাস্থলে। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা চলছে। প্রয়োজনে নিকটবর্তী হাসপাতালেও নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কিন্তু খারাপ আবহাওয়া আর যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবে কঠিন হচ্ছে উদ্ধারকাজ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন