ফের ধস পাহাড় লাইনে, দুর্ভোগ যাত্রীদের

ফের ধস নামল পাহাড় লাইনে। রেলকর্মীরা দ্রুত কাজে নেমে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করে তোলেন। শনিবার রাতে পূর্বোত্তর সম্পর্কক্রান্তি এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন বেলাইন হওয়ার জেরে, লামডিং-শিলচর রুটের সমস্ত ট্রেন গত কাল পর্যন্ত বাতিল করা হয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলচর ও হাফলং শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:০৭
Share:

ফের ধস নামল পাহাড় লাইনে। রেলকর্মীরা দ্রুত কাজে নেমে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করে তোলেন।

Advertisement

শনিবার রাতে পূর্বোত্তর সম্পর্কক্রান্তি এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন বেলাইন হওয়ার জেরে, লামডিং-শিলচর রুটের সমস্ত ট্রেন গত কাল পর্যন্ত বাতিল করা হয়েছিল। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের জেনারেল ম্যানেজার এইচ কে জাগ্গি ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে লাইনের উপর থেকে মাটি, পাথর সরানোর ব্যবস্থা করেন। আশঙ্কা-আতঙ্কের মধ্যেও আজকের ট্রেনগুলিকে বাতিল না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই হিসেবে গত রাতে ১১টা ৫৫ মিনিটে গুয়াহাটি ও আজ ভোর ৫টায় শিলচর থেকে ফাস্ট প্যাসেঞ্জার ট্রেন ছাড়া হয়।

মুখ্য জনসংযোগ অফিসার প্রণবজ্যোতি শর্মা জানান, তার আগে মালগাড়ি চালিয়ে লাইন পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় রাত বাড়লে। মুষলধারে বৃষ্টি নামে পাহাড়ি এলাকায়। চার জায়গায় ধস নামে লাইনের উপর। সে জন্য গুয়াহাটি থেকে ছাড়া ট্রেনটিকে লামডিং ও শিলচরের ট্রেনটিকে বদরপুরে দাঁড় করানো হয়। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করে দু’টি ট্রেনকেই নিরাপদে পাহাড় লাইন পার করানো হয়। পরে যায় আলিপুরদুয়ারগামী বিশেষ ট্রেনটিও। তবে বদরপুরে বেলা ১টা পর্যন্ত এবং লামডিঙে বেলা ২টা পর্যন্ত ট্রেনগুলি থমকে থাকায় যাত্রীদের দুর্ভোগে পড়তে হয়।

Advertisement

রেল কর্তৃপক্ষ জানান, যাত্রী নিরাপত্তার কথা ভেবেই কিছুটা দেরি করতে হয়েছে। ধস সরানোর পর একটি মালগাড়ি চালিয়ে পুরো লাইন পরীক্ষা করা হয়। দক্ষিণ অসমে ট্রেন চলাচল আপাতত স্বাভাবিক হলেও অধিকাংশ সড়ক আজও বিচ্ছিন্ন। ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চলছে মেঘালয় হয়ে শিলচর-গুয়াহাটি রোডে। হাফলং-শিলচর ও হাফলং-লামডিং জাতীয় সড়ক পুরোপুরি বন্ধ। গত কাল হাফলং-শিলচর ও হাফলং-লামডিং জাতীয় সড়কের এনলাইকুল, রেটজল এবং রেখোতে পাহাড় ধসে রাস্তা বন্ধ হয়ে পড়ে। রেখো-মিয়াংক্রোর মধ্যে প্রায় ২০০ মিটার রাস্তা জলের স্রোতে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। সেই স্রোতে একটি ট্রাক উল্টে যায়। এতে এক জন ঘটনাস্থলে মারা যান। জলের তোড়ে ভেসে যান গাড়ির খালাসি। আজও তাঁর খোঁজ মেলেনি।

ডিমা হাসাও জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সব রাস্তায় ধস সরানোর কাজ শুরু করেছে। তাঁদের আশা— বৃষ্টি না হলে আগামীকাল জাতীয় সড়কে গাড়ি চলাচল শুরু হবে। তবে হাফলং-শিলচর রাস্তা খুললেও বড় গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকবে বলে জেলা প্রশাসন জানিয়ে দিয়েছে। নির্দেশিকা জারি করে বলা হয়েছে, ছোট গাড়িও শুধু দিনে চলবে। ডিমা হাসাও জেলায় স্বস্তির কথা, অনেক দিন পর রোদ উঠেছে। বিদ্যুৎ সংযোগ স্বাভাবিক হয়েছে। ফলে মোবাইলের ব্যাটারি রিচার্জ করা সম্ভব হয়। বেশ কিছু দিন পর অনেকের মোবাইল এ দিন ফের বেজে ওঠে। দোকানপাট, বাজারহাটেও লোকসমাগম ছিল এই ক-দিনের তুলনায় অনেকটা বেশি। কিন্তু সন্ধ্যা নামতেই আকাশের মুখ ভার। ফলে আতঙ্ক কাটছে না পাহাড় ঘেরা দক্ষিণ অসমের মানুষের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন