হায়দরাবাদ নিয়ে প্রণবের কাছে বামেরা

হায়দরাবাদ কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতর্কিত উপাচার্য পি আপ্পারাওকে সরাতে রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হল সিপিএম।দলিত ছাত্র রোহিত ভেমুলার আত্মহত্যা নিয়ে বিতর্কের জেরে ছুটিতে যেতে হয়েছিল আপ্পারাওকে। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে আর কোনও পদক্ষেপ করেনি নরেন্দ্র মোদী সরকার। ফলে, ক্যাম্পাসে ফের অশান্তি শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার সেখানে পুলিশি অভিযান বিতর্কের মাত্রা বাড়িয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৬ ০৪:১৩
Share:

হায়দরাবাদ কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতর্কিত উপাচার্য পি আপ্পারাওকে সরাতে রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হল সিপিএম।

Advertisement

দলিত ছাত্র রোহিত ভেমুলার আত্মহত্যা নিয়ে বিতর্কের জেরে ছুটিতে যেতে হয়েছিল আপ্পারাওকে। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে আর কোনও পদক্ষেপ করেনি নরেন্দ্র মোদী সরকার। ফলে, ক্যাম্পাসে ফের অশান্তি শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার সেখানে পুলিশি অভিযান বিতর্কের মাত্রা বাড়িয়েছে।

মোদী সরকারের যুক্তি, কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে নিয়োগ করেন ‘ভিজিটর’, অর্থাৎ রাষ্ট্রপতি। আপ্পারাওকে সরানোর বিষয়টিও তাই রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়কে জানিয়েছে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক। কেন্দ্রের সেই যুক্তির সূত্র ধরেই আজ প্রণববাবুর সঙ্গে দেখা করেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। বৈঠকের পরে ইয়েচুরি বলেন, ‘‘ইয়েচুরি বলেন, ‘‘হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট মন্ত্রককে যাতে হিন্দু রাষ্ট্র ডেভেলপমেন্ট মন্ত্রকে রূপান্তরিত না করা হয়, সে বিষয়েও আমি রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ চেয়েছি।’’

Advertisement

বুধবার ক্যাম্পাসে পুলিশি অভিযান নিয়ে বিতর্ক অবশ্য কমার কোনও লক্ষণ নেই। আপ্পারাওয়ের সরকারি বাসভবনে ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে পড়ুয়াদের একাংশের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার প্রতিবাদে আবার পাল্টা ধর্মঘটে নামেন অশিক্ষক কর্মীদের একাংশ। তাঁরা কাজে যোগ না দেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে বন্ধ হয়ে যায় জল, খাবার, ইন্টারনেটের সংযোগ। এই নেই রাজ্যের মধ্যেই ক্যাম্পাস থেকে পুলিশ গ্রেফতার করে পঁচিশ পড়ুয়া ও দুই শিক্ষককে।

এমনিতেই এফটিআইআই, জেএনইউ, যাদবপুর, হায়দরাবাদ— দিকে দিকে যে ভাবে ছাত্রদের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক, তা নিয়ে এত দিন বিতর্ক কম হয়নি। কিন্তু বুধবার আলো-জল-খাবার না পেয়ে ক্যাম্পাসে আটকে থাকা ছাত্রছাত্রীদের উপর পুলিশ চ়ড়াও হলে সমালোচনার ঝ়ড় ওঠে দেশজুড়ে। এ নিয়ে আজ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এক হাত নিয়েছেন সেখানকার পড়ুয়াদের অভিভাবকরাও। তাঁদের প্রশ্ন, ‘‘এটা সিরিয়া না কি পাকিস্তান।’’ সামান্য ছাত্রদের রুখতে যা করা হয়েছে, জঙ্গি দমনেও সেই তৎপরতা দেখা যায় না— মত তাঁদের। তা ছাড়া এখনও ধৃতদের বিষয়ে যে ভাবে নীরব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, তাতেও ক্ষুব্ধ বহু অভিভাবক।

শুক্রবার ধৃত ছাত্রদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন আর এক মা। ছেলে রোহিত ভেমুলাকে হারানোর পর এখন একটাই আর্জি তাঁর— জেলে বন্দি অন্য সন্তানরা ছাড়া পাক দ্রুত। রোহিতের মা রাধিকার অভিযোগ, রোহিতের আত্মহত্যায় উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে উপাচার্যের বিরুদ্ধে মামলা হওয়া সত্ত্বেও তিনি গ্রেফতার হননি। তা হলে ছাত্রদের এ ভাবে বন্দি করা হল কেন? এ দিন অবশ্য স্থানীয় আদালতে পিছিয়ে গিয়েছে ধৃতদের জামিনের শুনানি। ২৫ জন পড়ুয়া ও দুই শিক্ষকের জামিনের মামলা কোর্ট শুনবে ২৮ মার্চ।

হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি নিয়ে আজ রিপোর্ট চাইল রাজ্যের মানবাধিকার কমিশন। পুলিশি বর্বরতার অভিযোগ করে তাদের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অন্ধ্রপ্রদেশের এক আপ নেতা। তাঁর আবেদনের ভিত্তিতে আগামিকাল উপাচার্য আপ্পারাওকে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন