CPM Congress

‘ইন্ডিয়া’র বৈঠকের আগেই নিজেদের মধ্যে কথা চায় বামেরা, সনিয়া-রাহুলের সঙ্গে কথা হবে দুই নেতার?

বাংলায় তৃণমূলের সঙ্গে সমঝোতার বিষয়ে কংগ্রেসের সর্বভারতীয় নেতৃত্বের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইতিমধ্যেই প্রাথমিক কথা হয়েছে। যা বামদের কিছুটা বিমর্ষ করে দিয়েছে বলেই মত ফ্রন্টের অন্দরে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২৩ ২০:২৩
Share:

সনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী এবং সীতারাম ইয়েচুরি। —গ্রাফিক সনৎ সিংহ।

আগামী ১৯ ডিসেম্বর দিল্লিতে সর্বভারতীয় স্তরে বিজেপি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠক। কিন্তু সেই বৈঠকের আগে নিজেদের মধ্যে ‘মহড়া বৈঠক’ চাইছেন বাম শরিক সিপিআই, আরএসপি, ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতারা। যদিও সিপিএম পলিটব্যুরোর সদস্য নীলোৎপল বসু সোমবার আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছেন, ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠকের আগে বামদলগুলির বৈঠক হওয়ার বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে সিপিআইয়ের এক সর্বভারতীয় নেতা বলছেন, ১৬-১৭ ডিসেম্বর তাঁদের দলের জাতীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক রয়েছে ভুবনেশ্বরে। সেখানে দলের মধ্যে ‘ইন্ডিয়া’য় তাদের অবস্থান ঠিক করে নেওয়া হবে। সিপিআই চাইছে, আগে বামদলগুলি বৈঠকে বসে নিলে ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠকে আলোচনা করতে সুবিধা হবে। আরএসপি, ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতারাও ১৯ তারিখের আগে নিজেদের মধ্যে বসে নিতে চাইছেন।

Advertisement

কংগ্রেস সূত্রের খবর, বাংলায় তৃণমূলের সঙ্গে আসন সমঝোতার বিষয়ে কংগ্রেসের সর্বভারতীয় নেতৃত্বের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইতিমধ্যেই প্রাথমিক কথা হয়েছে। তবে ‘আনুষ্ঠানিক সমঝোতা’ এখনও হয়নি। ব্যক্তিগত স্তরের ওই আলোচনা প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে ঘোষিত হবে কি না, তা নির্ভর করছে ‘ইন্ডিয়া’র পরবর্তী বৈঠকের গতিপ্রকৃতির উপর। কংগ্রেস সূত্রের খবর, ওই আলোচনায় আনুষ্ঠানিক সিলমোহর পড়ার আগে কেউই তা নিয়ে মুখ খুলতে চাইছেন না। তবে কংগ্রেস-তৃণমূলের মধ্যে সমঝোতার প্রাথমিক কথাবার্তা বাম শিবিরকে কিছুটা ‘বিমর্ষ’ করে দিয়েছে বলেই মত ফ্রন্টের অন্দরে। কারণ, জোটের হিসেব কষেই তারা লোকসভা নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছিল। সাগরদিঘি এবং ধূপগুড়ি উপনির্বাচনেও মহম্মদ সেলিম, অধীর চৌধুরীরা ঐক্যের ছবি তৈরি করতে পেরেছিলেন। কিন্তু কংগ্রেস-তৃণমূলের মধ্যে প্রাথমিক আলোচনা শুরুর পরে সেই ছবি আর নেই। সিপিএম নেতারাও ঘনিষ্ঠ আলোচনায় মেনে নিচ্ছেন, বাংলার কংগ্রেস নেতাদের পক্ষে হাইকমান্ডের উল্টোপথে হাঁটা সম্ভব নয়। একা লড়লে তাঁদেরও যে অস্তিত্ব সংকটে পড়তে হতে পারে তা-ও বিলক্ষণ জানেন তাঁরা।

এ হেন পরিস্থিতিতে কী হবে বাংলায় বামেদের অবস্থান? রাজ্যভিত্তিক সমীকরণেই বা তাঁরা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবেন? বাংলায় বামেরা তৃণমূল এবং বিজেপি উভয়ের বিরুদ্ধেই লড়ছে। কেরলে আবার শাসক বামেদের মূল প্রতিপক্ষ কংগ্রেস। ত্রিপুরায় মাঝে বাম-কংগ্রেস কাছাকাছি এলেও আবার দূরত্ব বেড়েছে। এ হেন পরিস্থিতে আরএসপি, ফরওয়ার্ড ব্লকের মতো দলগুলি চাইছে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি এবং সিপিআইয়ের সাধারণ সম্পাদক ডি রাজা কথা বলুন রাহুল গান্ধী এবং সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে। বাংলায় কোনও ‘বিকল্প’ পথ বার করা যায় কি না, তা নিয়েও নতুন করে ভাবতে চাইছে বামেরা। যদিও ফরওয়ার্ড ব্লক ইতিমধ্যেই সিপিএমের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে জানিয়েছে, তারা রাজ্যে ফ্রন্টগত লড়াই চায়। কংগ্রেসকে সঙ্গে না নেওয়াই শ্রেয়। রাজ্য ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রথম সারির এক নেতার কথায়, ‘‘২০১৬ এবং ২০২১ সালের ভোটে এটা প্রমাণিত হয়ে গিয়েছে যে, বামেদের ভোট কংগ্রেসের দিকে গেলেও কংগ্রেসের ভোট আমরা পাই না। তাই জোট করে লাভ নেই।’’ সিপিএম আবার নির্দিষ্ট কিছু আসনকে ‘পাখির চোখ’ করে লড়তে চায়। সেখানে কংগ্রেসের ভোট গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সবটাই এখন ঘেঁটে যাওয়া জায়গায় রয়েছে। তাই ‘ইন্ডিয়া’ বৈঠকের আগে নিজেরা নিজেদের দিশা স্থির করে নিতে চাইছে বাম শরিকেরা। সে কারণেই তারা চায় অন্তত একটি ‘মহড়া বৈঠক’ হোক। যাতে ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠকে নিজেদের বক্তব্য এক সুরে পেশ করা যায়।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন