শুক্রবার দুপুরে এনডিএ-র জয় নিশ্চিত হওয়ার পরে পটনায় বিজেপির মহিলা কর্মীদের উচ্ছ্বাস। ছবি: পিটিআই।
বিহারে আপাতত এনডিএ পেয়েছে ২০২টি আসন। মহাগঠবন্ধনের ঝুলিতে ৩৫টি আসন। অন্যান্য দল পেয়েছে ৬টি।
দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতর থেকে বিহারবাসীকে অভিনন্দন জানালেন বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডা। বিহার ভোটের ফলাফলকে ‘সুনামি’ বলে বর্ণনা করেন তিনি। নড্ডার কথায়, “এই সুনামি স্পষ্ট করে দিয়েছে বিহারের জনতা হোক বা দেশের জনতা— সকলেই প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আস্থা রেখেছেন। এই ভোট ছিল বিকাশ এবং জঙ্গলরাজের মুখোমুখি লড়াই। মানুষ এই নির্বাচনে উন্নয়নকে বেছে নিয়েছেন”
দিল্লিতে বিজেপির সদর কার্যালয়ে পৌঁছোলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অমিত শাহ-সহ বিজেপির অন্য শীর্ষ নেতারা আগেই পৌঁছে গিয়েছেন সেখানে। কিছু ক্ষণের মধ্যে দলীয় কার্যালয় থেকে এনডিএ শিবিরের উদ্দেশে বার্তা দেবেন তিনি।
দলের ফল শোচনীয়। তবে রাঘোপুর থেকে ‘পারিবারিক আসন’ ধরে রাখলেন তেজস্বী। মাঝে পিছিয়ে পড়লেও পরে আবার এগিয়ে যান তিনি। রাঘোপুরে ৩১ রাউন্ড গণনা শেষে ১৪ হাজারেরও বেশি ভোটে জয়ী হলেন তেজস্বী।
ভোটে সাফল্যের পরে প্রথম প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে অভিনন্দন জানালেন বিহারের বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। এ বারের বিধানসভা ভোটে শাসক জোট কোনও মুখ্যমন্ত্রীর মুখ ঘোষণা করেনি। আসন সংখ্যার দিক থেকে ২০২০ সালের মতো এ বারও এগিয়ে রয়েছে বিজেপিই। এ অবস্থায় সমাজমাধ্যমে মোদীকে অভিনন্দন জানিয়ে শাসক জোট এনডিএ-তে ঐক্য়ের কথা তুলে ধরলেন নীতীশ। তিনি লেখেন, ‘এ বারের ভোটে এনডিএ সম্পূর্ণ ঐক্য দেখিয়েছে এবং বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে।’
আলিনগরে জয়ী বিজেপি প্রার্থী সঙ্গীতশিল্পী মৈথিলী ঠাকুর। ১১ হাজারেও বেশি ভোটে আরজেডি প্রার্থীকে হারিয়েছেন তিনি।
বিহারের ভোটে শোচনীয় ফল হয়েছে বিরোধী জোট ‘মহাগঠবন্ধন’-এর। একতরফে ভাবে জয়ী হচ্ছে নীতীশ-বিজেপির জোট। বিরোধী শিবিরের এই ফল নিয়ে এ বার মুখ খুললেন ‘মহাগঠবন্ধন’-এর উপমুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী তথা বিকাশশীল ইনসান পার্টি (ভিআইপি) প্রধান মুকেশ সাহানি। তাঁর দাবি, মহিলারা অন্ধের মতো নীতীশকে সমর্থন করেছেন। তাই এনডিএ এই বিপুল ভোট পেয়েছে।
বিহারে এনডিএ-র অন্যতম শরিক নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতনরাম মাঝির বক্তব্য, নীতীশের উপর ভরসা রেখেছেন বিহারবাসী। এই ফল তারই প্রতিফলন। তিনি বলেন, “এই ফল হবে তা আমরা ধরেই নিয়েছিলাম। নীতীশ কুমার মহিলাদের উন্নয়নের জন্য কাজ করেছেন। আমরা বলছিলাম ১৬০-এর বেশি হবে। আজ দেখা গেল, আমরা ২০০ ছাপিয়ে গিয়েছি। এটি সম্ভব হয়েছে, কারণ নীতীশের উপর সাধারণ মানুষ আস্থা রেখেছেন।”
তারাপুর থেকে জয়ী বিদায়ী উপমুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি প্রার্থী সম্রাট চৌধরি। ৪৫ হাজারেরও বেশি ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন তিনি।
পটনায় নীতীশ কুমারের বাসভবনের সামনে উচ্ছ্বাসে মেতেছেন আরজেডির কর্মী-সমর্থকেরা। দলীয় পতাকা হাতে, আবির মেখে, নাচে-গানে ভোটের সাফল্য উদ্যাপন করছেন তাঁরা।
জয় নিশ্চিত হতেই সমাজমাধ্যমে পোস্টে বিহারবাসীকে শুভেচ্ছা জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অভিনন্দনবার্তায় প্রধানমন্ত্রী লেখেন, ‘সুশাসন, বিকাশ, জনকল্যাণ এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের জয় হয়েছে।’ বিহারে শাসকজোটের এই সাফল্যকে ‘ঐতিহাসিক এবং অভূতপূর্ব’ বলে ব্যাখ্যা করেছেন তিনি। মোদী লেখেন, ‘মানুষের এই রায় সাধারণ জনতার সেবা করার এবং বিহারের জন্য নতুন সংকল্পে কাজ করার শক্তি দেবে আমাদের।’
নীতীশ কুমার, চিরাগ পাসওয়ান, জিতনরাম মাঝি এবং উপেন্দ্র কুশওয়াহাদের মতো এনডিএ-র শরিক নেতাদের শুভেচ্ছা জানান তিনি। একই সঙ্গে ওই পোস্টে বিহারের জন্য এনডিএ-র আগামীর রূপরেখারও আভাস দেন তিনি। মোদী লেখেন, ‘আগামী বছরগুলিতে আমরা বিহারের বিকাশ, পরিকাঠামোগত উন্নত এবং বিহারের সংস্কৃতিকে একটি নতুন পরিচয় দেওয়ার জন্য নিরলস ভাবে কাজ করে যাব।’ বিহারের তরুণ প্রজন্ম এবং মহিলাদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের জন্যও নতুন সরকার কাজ করবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী।
এনডিএ শিবিরের জয় ঘোষণা এখন শুধুই আনুষ্ঠানিকতা হয়ে রয়ে গিয়েছে। এনডিএ-র অন্যতম জোটসঙ্গী চিরাগ পাসওয়ানের লোক জনশক্তি পার্টি (এলজেপি) এগিয়ে রয়েছে ১৯টি আসনে। এই জয়কে ‘মোদী-নীতীশের ডবল ইঞ্জিন’-এর জয় বলে ব্যাখ্যা করছেন চিরাগ।
দলের অবস্থা শোচনীয়। এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি, তিনটি আসনে জিতেছে আরজেডি। এগিয়ে আছে আরও ২৪টি আসনে। এটাই চূড়ান্ত ফল হলে ২০২০ সালের তুলনায় অর্ধেকেরও নীচে নেমে যেতে পারে আরজেডির আসন সংখ্যা। তবে রাঘোপুরে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তেজস্বী। আপাতত ২৭ রাউন্ড গণনা শেষে ১২ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে রয়েছেন তিনি। এখনও চার রাউন্ড গণনা বাকি রাঘোপুরে।
বিহারবাসী অভিনন্দন জানিয়ে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি লেখেন, ‘বিহারের জনতার প্রতিটি ভোট অনুপ্রবেশকারী এবং তাঁদের প্রশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধে মোদী সরকারের নীতির প্রতি আস্থার প্রতীক। তাঁরা (অনুপ্রবেশকারীরা) দেশের সম্পদের শোষণ করেন। ভোটব্যাঙ্কের স্বার্থে যাঁরা অনুপ্রবেশকারীদের প্রশ্রয় দেন, তাঁদের যোগ্য জবাব দিয়েছেন জনতা।’
বিহারের বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের পটনা বাসভবনে পৌঁছোলেন বিদায়ী উপমুখ্যমন্ত্রী তথা তারাপুরের বিজেপি প্রার্থী সম্রাট চৌধরি। এ বারের নির্বাচনে এনডিএ শিবির থেকে কোনও মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়নি। তারাপুরে ৩০ রাউন্ডের মধ্যে ২৫ রাউন্ডের গণনা শেষে সম্রাট এগিয়ে রয়েছেন ৩৭ হাজারেরও বেশি ভোটে।
বিকেল সাড়ে ৪টে পর্যন্ত হিসাবে শাসকজোট এনডিএ এগিয়ে রয়েছে ২০৩টি আসনে। এর মধ্যে বেশ কিছু আসনে ইতিমধ্যে চূড়ান্ত ফল প্রকাশ্যে চলে এসেছে। বিরোধীদের ‘মহাগঠবন্ধন’ এগিয়ে আছে ৩৩টি আসনে।
মাঝে পিছিয়ে পড়ার পরে ফের এগিয়ে গিয়েছেন তেজস্বী। রাঘোপুরে ৩১ রাউন্ডের মধ্যে ২২ রাউন্ড গণনা শেষে আট হাজারেরও বেশি ভোটে এগিয়ে রয়েছেন তিনি।
বেলাগঞ্জ থেকে জয়ী হলেন জেডিইউয়ের মনোরমা দেবী। হরনৌত থেকে জিতেছেন জেডিইউয়ের হরিনারায়ণ সিংহ। ৪৮ হাজারেরও বেশি ভোটে জয়ী হয়েছেন তিনি। আলাউলি থেকে জিতেছেন নীতীশের দলের আর এক প্রার্থী রামচন্দ্র সদা। ৩৫ হাজারেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে জিতেছেন তিনি। মধুবন থেকে জিতেছেন বিজেপির রানা রণধীর।
বিহারের ভোটে সাফল্যে বিজেপির উচ্ছ্বাস ধরা পড়েছে দিল্লিতেও। রাজধানী দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরের সামনে ভিড় জমিয়েছেন দলীয় কর্মী-সমর্থকেরা। বিজেপির সদর দফতরের সামনে ‘ব্যান্ড পার্টি’ নিয়ে নাচ-গান শুরু হয়ে গিয়েছে। সন্ধ্যায় বিজেপির দফতর থেকে বক্তৃতা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।