ফের উত্তাল সংসদ, রাজ্যসভা স্থগিত

বাদল অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনেও উত্তাল লোকসভা। বাদ গেল না রাজ্যসভাও। দফায় দফায় স্থগিত হয়ে যায় অধিবেশন। সংসদের বাদল অধিবেশন মঙ্গলবার শুরু হয়েছে মঙ্গলবার। প্রথম দিনেই আভাস মিলেছিল, এ বারের অধিবেশন কার্যত অচল হয়ে পড়তে পারে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৫ ১১:০২
Share:

—নিজস্ব চিত্র।

বাদল অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনেও উত্তাল লোকসভা। বাদ গেল না রাজ্যসভাও। দফায় দফায় স্থগিত হয়ে যায় অধিবেশন।

Advertisement

সংসদের বাদল অধিবেশন মঙ্গলবার শুরু হয়েছে মঙ্গলবার। প্রথম দিনেই আভাস মিলেছিল, এ বারের অধিবেশন কার্যত অচল হয়ে পড়তে পারে। কেননা, বিদেশমন্ত্রী-সহ দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের পদত্যাগের দাবিতে বামেদের সঙ্গে নিয়ে সরব হয়েছে কংগ্রেস। অন্য দিকে, শাসকদল বিজেপিও তাদের অবস্থানে অনড়। এই আবহে বুধবার দু’পক্ষের স্নায়ুযুদ্ধ যেন আরও টানটান হয়ে উঠল।

এ দিন ব্যপম-দুর্নীতির নিয়ে সংসদে সরব হওয়ার কথা ছিল কংগ্রেসের। মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানের ইস্তফার দাবিতেও এ দিন গাঁধী মূর্তির পাদদেশে ধর্নায় বসার কথা ছিল তাদের। সেখানে সনিয়া-রাহুলের থাকার কথা ছিল। কিন্তু, এ দিন সকালে সেই ধর্না আপাতত স্থগিত রাখার কথা জানানো হয়। কারণ? কংগ্রেস চাইছে এ বিষয়ে দলভারী করতে। বামেদের মতো তারা বসপা, জেডিইউ, সপা— প্রভৃতি দলের সঙ্গে একজোট হয়ে বিজিপির বিরুদ্ধে লড়তে চাইছে। সেই কারণেই এ দিনের ধর্না স্থগিত করা হয়েছে।

Advertisement

এ সবের মধ্যেই এ দিন সকালে টুইট করে কংগ্রেসকে প্যাঁচে ফেলার চেষ্টা করেছেন সুষমা স্বরাজ। তাঁর দাবি, কয়লা-কাণ্ডে অভিযুক্ত ইউপিএ আমলের প্রাক্তন কয়লা প্রতিমন্ত্রী সন্তোষ বাগোডিয়ার কূটনৈতিক পাসপোর্ট নিয়ে কংগ্রেসের কোনও এক প্রবীণ নেতা তাঁর কাছে দরবার করেছিলেন। সুষমা টিইট করে হুমকি দেন, ওই নেতার নাম তিনি সংসদে প্রকাশ করে দেবেন। এর প্রেক্ষিতে বাগোডিয়া জানান, নিয়ম মেনে তিনি কূটনৈতিক পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেছিলেন। কংগ্রেস যদিও সেই নেতার নাম প্রকাশ্যে আনার জন্য জানিয়েছে।

তবে, শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে কথা না বলে প্রকাশ্যে কিছু না বলতে বিজেপি-র সাংসদদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এ দিন সকালে বিজেপি-র সংসদীয় দলের বৈঠকে বসেন তিনি। সেখানে স্পষ্ট ভাবে এ কথা জানিয়ে দেওয়া হয়। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, সুষমা তো বটেই প্রধানমন্ত্রীর এই তির হিমাচল প্রদেশের সাংসদ সান্তা কুমারের দিকেও। সম্প্রতি তিনি দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহকে একটি চিঠি দিয়ে জানান, ললিত-ব্যপম কাণ্ডে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। সেই চিঠি প্রকাশ্যে এসে পড়ায় অস্বস্তিতে পড়েন বিজেপি নেতৃত্ব। এরই মধ্যে এ সুষমার এ দিনের হুমকি। দুয়ে মিলে প্রধানমন্ত্রী এমন নির্দেশ দিতে বাধ্য হয়েছেন বলে ওই মহলের মত।

সকালে কংগ্রেস সাংসদরা হাতে কালো ব্যান্ড বেঁধে সংসদে হাজির হন। তাঁদের অনেকের সঙ্গেই ছিল প্রতিবাদ পোস্টার। বামেরাও পোস্টার এনেছিলেন। নিয়ম না থাকায়, লোকসভার স্পিকার সুমিত্রা মহাজন পোস্টার আনা সাংসদদের লোকসভা থেকে বেরিয়ে যেতে অনুরোধ করেন। কিন্তু, কোনও সাংসদই তাঁর সে কথা মানেননি। এ দিন লোকসভায় ললিত-কাণ্ড নিয়ে মুলতুবি প্রস্তাব আনে কংগ্রেস। যদিও সেই প্রস্তাব খারিজ করে দেন স্পিকার। বিরোধীদের হইহট্টগোলে বেশ কয়েক বার লোকসভা স্থগিত হয়ে যায়।

একই অবস্থা রাজ্যসভারও। এ দিন সেখানেও বারে বারে স্থগিত হয়ে যায় অধিবেশন। বহুজন সমাজপার্টির নেত্রী মায়াবতী বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দাগেন। ব্যপম-কাণ্ডে শিবরাজ সিংহ চৌহানের পদত্যাগের দাবিতে সরব হন তিনি। অরুণ জেটলি যদিও জানান, ব্যপম রাজ্যের ইস্যু। তা নিয়ে রাজ্যসভা অচল করার কোনও মানে হয় না। তবে, এ দিন দুপুরে রাজ্যসভার অধিবেশন স্থহিত হয়ে যায়।

অন্য দিকে, সংসদ বিষয়কমন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নাইডু এ দিন জানান, জমি বিল সংক্রান্ত ধারাগুলি রাজ্যগুলির কাছে পাঠানো হবে। সংসদ বিষয়ক যৌথ কমিটি বিষয়টি নিয়ে আগামী ৩ অগস্ট রিপোর্ট পেশ করবে। তার পর সরকার জমি বিলে সংশোধন আনবে। কংগ্রেসের মল্লিকার্জুন খাড়্গে যদিও জানান, সংশোধনী না দেখে কোনও মন্তব্য নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন