নারী-সুরক্ষায় প্রাধান্য দেওয়ার কথা ফের জানাল বিজেপি। ইস্তাহারে বলা হল, এ জন্য আলাদা একটি বিভাগই গড়া হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে। কিন্তু তার পরের লাইনে এ কী? ইস্তাহারের ৩২ নম্বর পাতায় ১১ নম্বর পয়েন্টে লাল আঁচড় কাটলেন নেটিজ়েনেরই একাংশ। যেখানে নারীর উপর ‘অপরাধ রোখা’-র কথা বোঝাতে গিয়ে লেখা হয়েছে ‘অপরাধ করা’-র কথা। লেখা হয়েছে, ‘‘এমন কড়া আইন আনা হবে, যাতে মহিলাদের উপর অপরাধ করা যায়।’’ সোমবার রাত পর্যন্ত ‘করা’কে ‘রোখা’-তে পাল্টানোর উদ্যোগ চোখে পড়েনি।
নেটিজ়েনের এই অংশটা যেন আজ মুখিয়ে ছিল। তাই বিজেপি তাদের ইস্তাহার প্রকাশ করা মাত্রই নিন্দামন্দের ঝড় উঠল টুইটারে। ট্রেন্ডিং হল #বিজেপিজুমলাম্যানিফেস্টো। আরও পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকতে চেয়ে বিজেপি যা-যা প্রতিশ্রুতি দিল, টুইটারে বাঁকা হাসি, কটাক্ষ আর ভুরু কুঁচকে তা ফিরিয়েও দিলেন ভোটারদের একটা বড় অংশ।
বিভ্রাট: ইস্তাহারের সেই লাইন।
অর্থনীতিবিদ তথা কংগ্রেস মুখপাত্র সলমন সোজ় যেমন হিসেব কষে চেপে ধরলেন গ্রামীণ উন্নয়নে বিজেপির বরাদ্দ-প্রতিশ্রুতিকে। আগামী পাঁচ বছরে এই খাতে ২৫ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে বিজেপির ইস্তাহারে। অর্থাৎ বছরে, ৫ লক্ষ কোটি টাকা। যা বাস্তবে কোনও ভাবেই সম্ভব নয় বলেই দাবি করলেন সলমন। কারণ, চলতি অর্থবর্ষে গ্রামীণ উন্নয়নে বরাদ্দ ধরা আছে ১.২ লক্ষ কোটি টাকা। দুষ্টু ‘স্মাইলি’ দিয়ে সলমন প্রশ্ন ছুড়লেন— ‘এত টাকা আসবে কোথা থেকে, দেখান।’ ইস্তাহারে বিজেপি মোট ক’টা প্রতিশ্রুতি দিল, সেটাও গুনে রসিকতা করতে ছাড়েননি অনেকে। এক জন যেমন বললেন, ‘‘এ বার মাত্র ৭৫টা! ২০১৪-য় তো ৪০০-রও বেশি প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল বিজেপি।’’ কেউ আবার বললেন, এই ইস্তাহার ২০১৪-র ফোটোকপি। ঘুরেফিরে এল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জমানার ব্যর্থতার কথাও।
এ দিন টুইটারেই কংগ্রেস নিজেদের ও বিজেপির ইস্তাহারের প্রচ্ছদ পোস্ট করে দেখাল— তাদের ইস্তাহারে জনতা, যেখানে বিজেপির শুধুই মোদী। জনৈক নেটিজ়েন লিখলেন, ‘‘ভাগ্যিস রামমন্দিরটা হয়ে যায়নি। না হলে, কী যে লিখত ইস্তাহারে!’’ তাঁর আরও কটাক্ষ, ‘‘ইস্তাহারে চাকরি কোথায়, চাকরির প্রতিশ্রুতিও নেই যে!’’