প্রতীকী ছবি।
কোন রাজনৈতিক দলকে কে টাকা দিচ্ছে, সাধারণ ভোটারদের তা জানারই দরকার নেই বলে মত কেন্দ্রীয় সরকারের। নির্বাচনী বন্ড মামলায় কেন্দ্রের অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল আজ এ কথা জানিয়ে বলেন, ‘‘বাস্তব পরিস্থিতি দেখুন। স্বচ্ছতা কোনও মন্ত্র নয়। কে বা কারা দলকে টাকা দিচ্ছেন, ভোটারের তা জানার প্রয়োজন নেই। ভোটে কালো টাকার ব্যবহার বন্ধ করতেই এই প্রকল্প চালু করা হয়েছে।’’
একটি অসরকারি সংস্থা নির্বাচনী বন্ড প্রকল্পের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে গিয়েছে। এসবিআইয়ের থেকে এই বন্ড কিনে দলকে দিতে হয়, তারা বন্ডের বিমিনময়ে টাকা নেয় ব্যাঙ্ক থেকে। কিন্তু বন্ডক্রেতার নাম-পরিচয় গোপন থাকে। সংস্থার যুক্তি, নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই প্রকল্প স্থগিত রাখা হোক নয়তো কোন ব্যক্তি বা সংস্থা বিভিন্ন দলকে বন্ডের মাধ্যমে অনুদান দিচ্ছেন বা দিচ্ছে, তা সর্বসমক্ষে প্রকাশ করা হোক। নির্বাচনে স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্য তা একান্ত প্রয়োজনীয়। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বেঞ্চ আগামিকাল এ বিষয়ে রায় দিতে পারে। বিচারপতি দীপক গুপ্ত অবশ্য বলেন, ‘‘কে বা কারা রাজনৈতিক দলগুলিকে টাকা দিচ্ছেন, ভোটারদের তা জানা উচিত এবং এটি গণতন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ দিক।’’
এই মামলায় সওয়াল এবং পাল্টা সওয়ালের মূল বিষয় স্বচ্ছ নির্বাচন। অ্যাটর্নি জেনারেল এ দিন সওয়ালে বলেন, ‘‘নির্বাচনী বন্ড প্রকল্প সরকারের নীতি এবং কোনও নীতি গ্রহণের জন্য সরকারকে দোষারোপ করা যায় না। এর আগে নির্বাচনে কালো টাকার ব্যাপক ব্যবহার হয়েছে। নগদে বিভিন্ন দলকে চাঁদা দেওয়া হত। এই প্রকল্পে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার মাধ্যমে অনুদান দেওয়ার নির্দিষ্ট ব্যবস্থা করা হয়েছে। সরকারি সংস্থা টাকার উৎস খতিয়ে দেখতেই পারে।’’ তা হলে বন্ডের মাধ্যমে যারা বা যে সংস্থা টাকা দিচ্ছে, তাদের নাম জানাতে অসুবিধা কোথায়? অ্যাটর্নি জেনারেলের যুক্তি, ‘‘যাঁরা টাকা দিচ্ছেন, তাঁদের নির্দিষ্ট দলের প্রতি আনুগত্য থাকতেই পারে। তা জানাজানি হলে ভবিষ্যতে তাঁরা মুশকিলে পড়বেন।’’ আবেদনকারী সংস্থার তরফে আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ এই যুক্তি খারিজ করে বলেন, ‘‘কালো টাকা নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে এই প্রকল্পের সম্পর্ক নেই। নাম গোপন করে টাকা জমা দেওয়ার নতুন ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা চালু হয়েছে।’’ নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী বলেন, ‘‘অজ্ঞাতপরিচয়ের অনুদানকে বৈধতা দিচ্ছে এই প্রকল্প। নির্বাচনে স্বচ্ছতা সবচেয়ে বড় কথা। ভোটারেরা যেমন অধিকার প্রয়োগ করবেন, তাঁদের জানার অধিকার রয়েছে, কারা কোন দলকে টাকা দিচ্ছে।’’