Lok Sabha Election 2019

মোদী, শাহের ছাড়ে ক্ষুব্ধ কংগ্রেস

গত এক মাসে কমিশনের কাছে নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে আদর্শ আচরণবিধি ভাঙার অন্তত দশটি অভিযোগ জমা পড়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৯ ১০:৪০
Share:

ছবি: পিটিআই।

এ যাবৎ প্রধানমন্ত্রী ক্লিনচিট পেয়েছেন ছ’টিতে। আর বিজেপি সভাপতি দু’টিতে। কারণ নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন আদর্শ আচারণবিধির ভাঙার কোনও প্রমাণই খুঁজে পায়নি বলে জানিয়েছে। কমিশনের এই মনোভাব ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ বলে আজ মুখ খুললেন রাহুল গাঁধী। আজ এক সাংবাদিক সম্মেলনে কংগ্রেস সভাপতি সরাসরি কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, নির্বাচন কমিশন পক্ষপাতদুষ্ট। তারা একটি দলের হয়ে কাজ করছে। যে দল সমস্ত সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করতে সক্রিয় রয়েছে।

Advertisement

গত এক মাসে কমিশনের কাছে নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে আদর্শ আচরণবিধি ভাঙার অন্তত দশটি অভিযোগ জমা পড়েছিল। প্রায় এক মাস সেগুলি কমিশনের ঘরেই পড়ে থাকে। পরে সুপ্রিম কোর্ট হস্তক্ষেপ করায় তড়িঘড়ি সেগুলির নিষ্পত্তি শুরু করে কমিশন। গতকাল রাত পর্যন্ত দেখা যায় মোদীকে পাঁচটি ও অমিত শাহকে দু’টি অভিযোগ থেকে রেহাই দিয়েছে কমিশন। যদিও সূত্রের খবর, এ ভাবে প্রধানমন্ত্রীকে একের পর এক ক্লিনচিট দেওয়া নিয়ে কমিশনের তিন শীর্ষ কর্তার মধ্যেই মতভেদ তৈরি হয়। তিন নির্বাচন কমিশনারের মধ্যে একজন প্রধানমন্ত্রীকে সতর্ক করে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করলেও বাকি দু’জন তাতে আপত্তি জানানোয় সেই আবেদন খারিজ হয়ে যায়।

এরই মধ্যে আজ রাতে কমিশন জানায়, আগের পাঁচটি অভিযোগের মতোই ২১ এপ্রিল গুজরাতের পাটনে প্রচার চলাকালীন পাকিস্তানে হামলা ও ভারতীয় বায়ুয়েনার উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানের বীরত্বের প্রসঙ্গ তুলে অন্যায় কিছু বলেননি মোদী। যদিও কমিশন আদর্শ আচরণবিধি জারি হওয়ার পরে স্পষ্ট ভাবে জানিয়েছিল, নির্বাচনী প্রচারে সেনা প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করলে শাস্তির মুখে পড়তে হবে নেতা-নেত্রীদের। তা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী পাটনে নিজের বক্তব্যে অভিনন্দনের কথা উল্লেখ করেন। তার পরেও কেন তাঁর বিরুদ্ধে আচরণবিধি ভাঙার প্রমাণ পাওয়া গেল না, তা নিয়ে মুখ খুলতে চাননি কমিশনের কোনও কর্তা। কংগ্রেসের অভিযোগ, অথচ, ওই একই ধাঁচের বক্তব্য রাখার জন্য শাস্তি হয়েছে বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীদের। কমিশনের আচরণের সমালোচনা করে রাহুল গাঁধী বলেন, যখন বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, তখন কমিশন হাত গুটিয়ে থাকে। অথচ বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলেই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে থাকে। এ হল কমিশনের চূড়ান্ত পক্ষপাতিত্ব।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

গত পাঁচ বছরে দেশের বিভিন্ন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করার অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। আজ সেই সূত্র ধরেই রাহুল বলেন, ‘‘শাসক বিজেপি তথা সঙ্ঘ পরিবার বা মোদীর কাজের ধরণটাই হল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের উপর নিরন্তর চাপ সৃষ্টি করে যাওয়া।’’ তাঁর মতে পাঁচ বছরে সেই চাপ লক্ষ্য করা গিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট, যোজনা কমিশন, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রেও। ভোটের মরসুমে কমিশন ব্যতিক্রম হবে না বলেই মনে করেন তিনি।

আর তা যে হয়েছে, তা নিয়ে নির্বাচনী প্রচার শুরু হওয়ার পর থেকেই সরব হয়েছেন একাধিক প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনার। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী ও অমিত শাহ প্রশ্নে কমিশনের মনোভাব ‘পক্ষপাতমূলক’ বলে মুখ খুলেছেন একাধিক অবসরপ্রাপ্ত আমলা। সমালোচনার ঝড় উঠলেও কমিশনের তাতে কোন হেলদোল নেই বলেই অভিযোগ কংগ্রেস নেতৃত্বের। রাহুলের কথায়, ‘‘নেতিবাচক শক্তির এ ভাবে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান দখল করার ফল ভবিষ্যতে পাওয়া যাবে। আমরা দেশের প্রতিষ্ঠানগুলিকে এ ভাবে ধ্বংস হতে দিতে পারি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন