নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ। —ফাইল চিত্র।
নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ নিয়ে এ বার সুপ্রিম কোর্টে গেল কংগ্রেস। সোমবার আদালতে ১৪৬ পাতার একটি আবেদন জমা দেন দলের সাংসদ সুস্মিতা দেব। তাতে তিনি জানিয়েছেন, একাধিকবার নির্বাচনী আচরণ বিধি ভঙ্গ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। ধর্মীয় মেরুকরণ ঘটাতে ঘৃণা ভাষণ দিয়েছেন। তা নিয়ে গত তিন সপ্তাহে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে কমিশনে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কমিশনের তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এই ধরনের অভিযোগের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিতে হবে বলেও শীর্ষ আদালতে আর্জি জানান সুস্মিতা দেব। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চেমঙ্গলবার তাঁর আবেদনের শুনানি হবে।
সুস্মিতা দেবের অভিযোগ, নির্বাচনী বিধি এখন ‘মোদী-বিধি’তে পরিণত হয়েছে। মোদী-শাহদের জন্য একরকম নিয়ম চালু হয়েছে। ভিন্ন নিয়ম বাকি প্রার্থীদের জন্য। কমিশন নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। প্রভাবশালীদের অন্যায় ভাবে সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। তার জন্যই যা ইচ্ছা তাই করে চলেছেন মোদী-শাহের মতো নেতারা। স্পর্শকাতর এলাকায় ধর্মীয় মেরুকরণ ঘটাতে ঘৃণা ভাষণ দিয়ে বেড়াচ্ছেন। কমিশনের নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে দেদার ব্যবহার করা হচ্ছে সেনাবাহিনীর নাম।
আবেদনের চটজলদি শুনানি চেয়ে এ দিন আদালতে সুস্মিতা দেবের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন বিশিষ্ট আইনজীবী তথা কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি এবং আইনজীবী সুনীল ফার্নান্ডেজ। তাঁরা বলেন, নির্বাচনী আচরণ বিধি ভঙ্গ নিয়ে মোদী-শাহের বিরুদ্ধে কমিশনে ৪০টি অভিযোগ জমা পড়েছে। কিন্তু গণতান্ত্রিক দেশে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করার দায়িত্ব যে কমিশনের হাতে রয়েছে, তাদের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।
আরও পড়ুন: বাবুলের গাড়ি ভাঙচুর, কাঠগড়ায় তৃণমূল, পাল্টা শাসানিতে অভিযুক্ত আসানসোলের বিজেপি প্রার্থী
আরও পড়ুন: বহরমপুরে অধীরের সামনেই ছাপ্পা! এক জনকে ধরে ফেললেন কংগ্রেস কর্মীরা
এর আগে নির্বাচনী আচরণ বিধি ভঙ্গের জন্য উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এবং বহুজন সমাজ পার্টি নেত্রী মায়াবতীর প্রচারে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল কমিশন। তার পরও গত ১৭ এপ্রিল গুজরাতের সুন্দরনগর জনসভায় পুলওয়ামা প্রসঙ্গ টেনে আনেন নরেন্দ্র মোদী। তাঁর সরকার পাকিস্তানে সমুচিত জবাব দিয়েছে বলে জানান। গত সপ্তাহে মহারাষ্ট্রের লাতুরেও পুলওয়ামার শহিদদের প্রতি ভোট উত্সর্গ করার কথা বলেন তিনি। মোদী সরকারই দেশের সীমান্ত সুরক্ষিত রেখেছে বলে সম্প্রতি বিহারের সীতামঢ়ীতে মন্তব্য করেন অমিত শাহ। সোশ্যাল মিডিয়া-সহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে সেই ভিডিয়ো রয়েছে। তা সত্ত্বেও মোদী-শাহদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হল না কেন, প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস।