কংগ্রেসের নির্বাচনী ইস্তাহার প্রকাশ। ছবি: কংগ্রেসের টুইটার অ্যাকাউন্ট।
ওয়েল অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার। নিজেদের তৈরি করা নির্বাচনী ইস্তাহারকে এই শব্দেই ব্যাখ্যা করল কংগ্রেস। সেই দাবির সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই দেশের ২২ লক্ষ সরকারি শূন্যপদে চাকরি এবং গরিব কৃষকদের অ্যাকাউন্টে বছরে সরাসরি ৭২,০০০ টাকা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। নয়াদিল্লিতে কংগ্রেসের এই ইস্তাহার প্রকাশে হাজির ছিলেন সনিয়া গাঁধী, মনমোহন সিংহ, প্রিয়ঙ্কা গাঁধী সহ কংগ্রেসের অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতারাও।
কর্মসংস্থান, কৃষি এবং মহিলাদের সুরক্ষা— গত পাঁচ বছরে এই তিনটি বিষয়ে পিছিয়েছে দেশ। তাই দেশকে আবার উন্নতির রাস্তায় ফিরিয়ে নিয়ে যেতে গত এক বছর ধরে তৈরি করা হয়েছে কংগ্রেসের নির্বাচনী ইস্তাহার, এমনটাই জানিয়েছেন কংগ্রেস নেতা এবং প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম।
ক্ষমতায় এলেই বেহাল কর্মসংস্থানের হাল ফেরাতে দেশের ২২ লক্ষ সরকারি শূন্যপদে চাকরি দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন রাহল। পাশাপাশি নিজের ন্য়ায় প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের গরিবদের অ্যাকাউন্টে বছরে ৭২ হাজার টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের গরিব এবং কৃষকেরা পাঁচ বছরে তিন লক্ষ ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত পেতে পারেন বলে ইস্তাহার প্রকাশের অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন তিনি। কংগ্রেসের দাবি, এর ফলে উপকৃত হবে দেশের প্রায় পাঁচ কোটি দরিদ্র মানুষ।
আরও পড়ুন: ‘জনস্বার্থে’বসানো হয়েছিল ২৬০০ কোটি টাকার মূর্তি! সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিলেন মায়াবতী
এই নির্বাচনে যে দেশের কৃষকরা গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে পারেন এবং তাঁদেরকে লক্ষ্য করেই নিজেদের ভোটের ঘুঁটি সাজাচ্ছে কংগ্রেস তা স্পষ্ট কংগ্রেসের নির্বাচনী ইস্তাহারে। রাহুলের প্রতিশ্রুতি, ক্ষমতায় এলে দেশের কৃষকরা কৃষিঋণ শোধ করতে না পারলে তাঁদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা হবে না, তাঁদের নিয়ে আসা হবে দেওয়ানি মামলার আওতায়।
একই সঙ্গে ক্ষমতায় এনে পুরো জিএসটি ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হবে বলেও দাবি করা হয়েছে কংগ্রেসের নির্বাচনী ইস্তাহারে। মোদী সরকারের জিএসটিকে ‘গব্বর সিংহ ট্যাক্স’ বলেও কটাক্ষ করেন রাহুল। তাঁর কথায়, ‘‘তুলে দেওয়া হবে গব্বর সিংহ ট্যাক্স। জিএসটিতে বর্তমানে চালু পাঁচটি স্তরকে একটি স্তর বা স্ল্যাবে নিয়ে আসা হবে, এবং সেই স্তরেও করের হার কম করা হবে।’’ দেশের গড় জাতীয় উৎপাদনের ৬ শতাংশ শিক্ষাক্ষেত্রে বরাদ্দ করা হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দেন কংগ্রেস সভাপতি। ক্ষমতায় এলে দেশের উন্নয়নের পরিকল্পনায় মোদী সরকারের তৈরি নীতি আয়োগ তুলে দিয়ে ফের পূর্ববর্তী জমানার যোজনা কমিশন ফিরিয়ে আনা হবে বলেও এদিন জানিয়েছেন রাহুল।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
কংগ্রেসের এই অনুষ্ঠানে দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ জানান, ‘‘দেশের বিভিন্ন স্তরের মানুষকে উন্নয়নের অংশীদার করতে এবং দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার লক্ষ্যেই এই ইস্তাহার।’’ কংগ্রেসের এই বক্তব্য সাধারণ মানুষের কাছে পৌছে দেওয়ার দায়িত্ব এবার কংগ্রেস কর্মীদের বলে জানান তিনি।